প্রকাশিত: ১১/০৩/২০২১ ২:১৪ পূর্বাহ্ণ , আপডেট: ১১/০৩/২০২১ ২:১৬ পূর্বাহ্ণ

পলাশ বড়ুয়া:
ক’দিন ধরে নিজের সাথে যুদ্ধ করছি। মনে অসংখ্য প্রশ্ন । এতে সামিল হয়েছে প্রকৃতিও। এভাবে চলতে থাকলে অন্তিমে কে, কার উপর রাজত্ব করবে এটা বুঝাও মুসকিল। কারণ সমাজে দিন দিন কমে যাচ্ছে ভয়হীন এবং নিরপেক্ষ মানুষের সংখ্যা। কোন অপরাধ কর্মকান্ড দেখলেও না দেখার ভান করছে। আবার কেউ কেউ প্রশ্রয় দিচ্ছে অপরাধীদের। কিছু এমনও আছে কোন ভাবে এড়িয়ে যেতে পারলে হয়। অপরদিকে প্রভাবশালীদের ভয়, সামাজিক মর্যাদা এবং আত্মসম্মান রক্ষার্থে মুখ খুলতে পাচ্ছে না অসহায় ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীদের একজন স্বপ্না (ছদ্মনাম)। রাত তখন পৌনে ১১টা। দুই সন্তান ও স্বামীসহ বন্ধুর বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে ইজিবাইক (টমটম) যোগে ফিরছিল। পথিমধ্যে ৬ জনের সংঘবদ্ধ চক্র গতিরোধ করে স্বামী-সন্তানদের গলায় চুরি ধরে মোবাইল, নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে খালের পাড় দিয়ে কবরস্থানের পাশে নিয়ে গিয়ে আলাদা-আলাদা করে মারধরসহ শ্লীলতাহানি করে। ঘন্টাখানেক পরে তাদেরকে গাড়ীতে করে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার পথে শৌর চিৎকার করলে ধুরুংখালী স্টেশনে থাকা লোকজন এগিয়ে গিয়ে স্বপ্নাদের উদ্ধার করে। দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
তাদের বহনকরা টমটম ড্রাইভারকে স্থানীয়রা আটক করলেও মরিচ্যার ইউপি সদস্য মঞ্জুর আলমের পরিচিত এবং এলাকার লোক বলে নিয়ে যায়।
স্বপ্না ওই রাতে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে এমনটি চাওর হলেও তথ্যানুসন্ধানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি, সামাজিক মর্যাদা এবং আত্মসম্মানের কথা চিন্তা করে আইনের আশ্রয় নেয়নি এমনটি জানা গেছে । তবে অপরাধীদের দেখলে চিনতে পারবে বলে স্বপ্না জানায়। ঘটনার দুইদিন পর কয়েকজন সাংবাদিকদের স্বপ্না বলেন, ঐ রাতের ঘটনায় আমার মনোবল হারিয়ে ফেলেছি। আমার শরীর এখনো কাপঁছে। আমার কোন শত্রুর সাথেও এ ধরণের ঘটনা না ঘটে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই রাতে হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ধুরুংখালী এলাকার ১) বাদশা মিয়ার ছেলে আব্দুল আজিজ, ২) বাদশা মিয়ার ছেলে মো: রাশেদ প্রকাশ কালা পুতু, ৩) মোজাহের মিয়ার ছেলে আব্দুল আজিজ, ৪) আমির হোছনের ছেলে আব্দু রহমান, ৫) মৃত খলিলের ছেলে মো: হোসেন প্রকাশ কালু এবং দারিয়ারদিঘি এলাকার (মরিচ্যা কম্পিউটারের দোকান করে) সাইফুল পরিকল্পিত ভাবে মরিচ্যা থেকে তাদের গাড়ী অনুসরণ করে ধুরুংখালী ব্রীজ এলাকায় এসে এ ঘটনা করে। এদের কয়েকজনের সাথে কথা হয়, তারা এ ঘটনায় জড়িত নয় জানায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য স্বপন শর্মা রনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। বিস্তারিত কিছু জানিনা। তাছাড়া এটা আমার এলাকা নয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় জড়িতদের অভিভাবকসহ হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ আলম ডেকেছেন। এ বিষয়ে কথা বলতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
থানা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নেয়ার সুযোগ নেই। থানার অফিসার বলবেন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে আইনী পদক্ষেপ নিব।
এ ধরণের বেশ কিছু বিষয় ভীষণ পীড়া দিচ্ছে আমায়।
আজিজুর রহমান (২৮)। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, প্রভাবশালী ডাম্পার মালিক মকছুদুল করিম চৌধুরীর চাপের মুখে পূর্বদিকে কালো পাহাড়ে (ধাইজ্যা) মাটি কাটতে গিয়ে সে নিহত হয়েছে। তার ঘরে ৭ মাসের অন্ত:স্বত্ত্বা স্ত্রী ছাড়া আপন কেউ নেই।
যে পাহাড় গুলোর উপর ভর দিয়ে এই পৃথিবী দাঁড়িয়ে আছে সেই পাহাড় সাবাড় করতেও চিন্তা করছে না অসভ্য মানুষ গুলো। এলাকাবাসীর অভিযোগ বনবিট কর্মকর্তারাও বনাঞ্চল এবং পাহাড় ধ্বংসে লিপ্ত।
আবার এসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ লিখলে কিংবা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে হামলা করা হচ্ছে। আসামী করা হচ্ছে মিথ্যা মামলার।
সবখানে লুটেরাদের আধিপত্যে যেন অপ্রতিরোধ্য। এদের কারণে নরকময় হয়ে গেছে মানব জীবন। আর এখন কারো মৃত্যু হলেও আর্টিফিশিয়াল শোক প্রকাশে অভ্যস্ত হয়ে গেছে সবাই। ভোতা হয়ে গেছে মানুষের অনুভূতি।
পাঠকের মতামত