
জুঁই চাকমা,রাঙামাটি :: ২০নভেম্বর শুক্রবার তথাগত বুদ্ধের জীবদ্দশায় মহাপুণ্যবতী বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত ঐতিহ্যবাহী দানোত্তম কঠিন চীবর দান মহাসমারোহে ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের সাথে উদযাপন করা হয়েছে।
গত ১৯ নভেম্বর থেকে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে সুতাকাটা হতে আরম্ভ করে সুতা রং করা,তাঁতে কাপড় বুনা এবং সেলাই করে চীবর তৈরী করে ভিক্ষু সংঘের নিকট কর্মফল, ইহকাল পরকাল ও চতুরার্য সত্যের উপর গভীর শ্রদ্ধা রেখে দান করা।বৌদ্ধ শাস্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এ পদ্ধতিতে কায়িক ,বাচনিক, মানসিক পরিশ্রম অধিকতর হয় তাই কঠিন চীবর দান মহা ফল প্রদায়ক।
মহাপূণ্যানুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি ২৯৯ আসনের সংসদ সদস্য ও পিসিজেএসএস নেতা উষাতন তালুকদার, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–য়া, সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান, চাকমা সার্কেল চীফ ও তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক সহকারী উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা নিখিল কুমার চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি, রাঙামাটি পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধি ও রাঙামাটি বড়–য়া জনকল্যাণ সংস্থার সভাপতি ডাঃ সুপ্রিয় বড়–য়া প্রমুখ।
এসময় দায়ক দায়িকাবৃন্দের পক্ষ থেকে রাতভর শ্রদ্ধাভরে বুননকৃত চীবর রাজবন বিহারের বর্তমান সংঘ প্রধানের হাতে তুলে দিয়ে পানি ঢেলে স্বস্ত্রীক উৎসর্গকরেন রাজবন বিহারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, এসময়ে মঞ্চে সাধনা নন্দ মহাস্থবির বনভান্তের প্রতিমুর্তিসহ দেশ ও বিদেশ থেকে আমন্ত্রিত হাজারের অধিক ভিক্ষু সংঘ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া রাঙামাটি রাজবন বিহারের উপাসক উপাসিকা পরিষদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান গৌতম দেওয়ান।
এ পূণ্য কর্মে সারা দেশ থেকে তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধ অনুসারীগণ ও অংশ গ্রহণ করছেন । শুধু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা নয় ধর্মীয় আনন্দে মাতোয়ারা দেশের সকল ধর্মের সকল সম্প্রদায়।রাজ বনবিহারের প্রায় কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান, ফুলের দোকান,দানীয় বস্তু,নানান পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন।এ এক সম্প্রীতির মিলনমেলা। লোকে লোকারণ্য দুর দুরান্ত থেকে আসা প্রায় ১০ লক্ষাধীক জনসমাগমের নিরাপত্তা দিয়েছেন রাঙামাটি জেলার পুলিশ প্রশাসন,জানিয়েছেন, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) চিত্ত রঞ্জন পাল।
চীবর দানোৎসবের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন থেকে দুইটি ও পুলিশ প্রশাসনের চারটি মোট ছয়টি সিসিক্যামেরা বসানো ছিল।
পাঠকের মতামত