csb24.com::
আগে মুশফিকুর রহিম করলেন সেঞ্চুরি। এরপর সাকিব আল হাসান করলেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে নিলেন ৫ উইকেট। আর তাতে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারলো না জিম্বাবুয়ে। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ১৪৫ রানে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে লিড নিলো টাইগাররা। আগে ব্যাট করে মুশফিকের ১০৭ রানে ভর করে ৯ উইকেটে ২৭৩ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে, ৩৬.১ ওভারেই ১২৮ রানে শেষ হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন মুশফিক।
চামু চিভাভা ও লুক জংবির শুরুটা ভালো ছিল। বাংলাদেশ তাদের সামনে দিয়েছিল ২৭৪ রানের টার্গেট। ৯ উইকেটে ২৭৩ রান করে বাংলাদেশ। এরপর দুই ওপেনারে সওয়ার হয়ে ভালোই চলছিল জিম্বাবুয়ের। ৪০ রান চলে আসে। মুস্তাফিজুর রহমান ও আরাফাত সানির মিশ্র আক্রমণে কাজ হয়নি। সাকিব আসলেন তার পর। চিভাভা (৯) বিদায় নিলেন দশম ওভারে। ১৪তম ওভারে সাকিবের দ্বিতীয় শিকার ক্রেগ আরভিন (২)। ৫৪ রানের সময় তৃতীয় উইকেটের পতন। এবার শিকারীর নাম আল আমিন হোসেন। সেট হয়ে যাওয়া জংবিকে (৩৯) তুলে নিলেন আল আমিন।
এরপর সাকিব তৃতীয় শিকার বানালেন শন উইলিয়ামসকে (৮)। মাশরাফি বিন মুর্তজা এলেন পঞ্চম বোলার হিসেবে। এসে জোড়া আঘাত হানেন তিনি। ইনফর্ম সিকান্দার রাজাকে (৩) অল্প রানে বিদায় করার পর ফিরিয়ে দেন ম্যালকম ওয়ালারকেও (১)। ৮৩ রানে ৬ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
সাকিব ফিরলেন আবার। এবং এবার নিলেন দুই উইকেট। গ্রায়েম ক্রেমারের (১৫) পর তিনাশে পানিয়াঙ্গারাকে (৫) শিকার করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন সাকিব। ১০ ওভারে ৪৭ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। এর আগে তার সেরা পারফরম্যান্স ছিল ১৬ রানে ৪ উইকেট। ২টি উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি। একটি করে উইকেট নিয়েছেন আল আমিন ও নাসির হোসেন। নাসির শেষ উইকেট নিয়েছেন। গোড়ালির ইনজুরির কারণে মুতুমবামি ব্যাট করতে পারেন নি।
বাংলাদেশের ইনিংসে তামিম ইকবাল ও মুশফিক এবং মুশফিক ও সাব্বির রহমানের জুটি দুটি দারুণ উল্লেখযোগ্য। তৃতীয় উইকেটে তামিম ও মুশফিক করেছেন ৭০ রান। এই জুটিতে বাংলাদেশের ভিত্তিটা গড়ে উঠেছে। আর পঞ্চম উইকেটে ১১৯ রানের জুটি হয়েছে মুশফিক ও সাব্বিরের মধ্যে। এই জুটিতে বাংলাদেশের ইনিংসের শরীরটা গড়ে উঠেছে। তাই সমানভাবে এগিয়ে রাখতে হবে এই দুই জুটিকে।
মুশফিক যখন আসেন তখন লিটন দাস (০) ও মাহমুদ উল্লা (৯) চলে গেছেন। বেশ খানিকটা চাপেই বাংলাদেশ। সেই চাপটা একটু একটু করে কমাতে থাকেন তামিম ও মুশফিক। বোলারদের ওপর হামলে পড়েন নি তারা। বলের মান বুঝেই খেলে গেছেন। ক্রেমারদের মতো বোলাররা তাতে বাড়তি সমীহ পেয়েছেন। তাতে কি! ইনিংসটা তো একটু একটু করে গড়ে উঠেছে। তাদের ব্যাটিং দেখে বোঝা গেছে, এই ম্যাচে খুব বড় স্কোর পাবে না টাইগাররা।
তামিম তার তৃতীয় ছক্কাটা মারতে গিয়েছিলেন সিকান্দার রাজাকে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মন বদলে শট চেক করতে গিয়েই ভুলটা করেছেন। জোর থাকেনি। ডিপে জংবির হাতে ধরা পড়েছেন। ৬৮ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪০ রান করে ফিরেছেন তামিম। সাকিব আল হাসান এসেছিলেন। ২১ বলে ১৬ রান করেছেন। সিকান্দারের একটি বল উইকেটে নেমে খেলতে গিয়ে মিস করেছেন। স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফিরেছেন।
মুশফিক-সাকিবরা জেতালেন ১৪৫ রানে
এরপরই গড়ে ওঠে সাব্বির ও মুশফিকের জুটিটা। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তোলার চেষ্টা করেন নি তারা। তবে রানের চাকা সবসময় সচল রেখেছেন। থামেনি কখনো। একটু ধীর হলেও চার ছক্কায় তা পুশিয়ে দেয়া গেছে। সাব্বির আসার আগেই ফিফটি হয়ে যায় মুশফিকের। তারপর তার ছুটে চলা সেঞ্চুরির পথে। আর সাব্বির তার ইনিংস গড়ার পথে ব্যাট করে গেছেন। এদিন হাতে সময় পেয়িছেলেন সাব্বির। পেয়েছেন ফিফটির দেখা।
আর মুশফিক ৬ ইনিংস পরই আরেকটি ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছেন। শেষ সেঞ্চুরিটা তিনি করেছিলেন এপ্রিলে, পাকিস্তানের বিপক্ষে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি মুশফিকের। ক্যারিয়ারের ১৫৬ ম্যাচে এসেছে চতুর্থ সেঞ্চুরি। ১০৪ বলে ৮টি চার ও একটি ছক্কায় সেঞ্চুরি করে উল্লাসে মেতেছেন বাংলাদেশের রান মেশিন মুশফিক।
এরপর দ্রুত তিনটি উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। সাব্বির ৫৮ বলে ৫৭, নাসির হোসেন শুন্য ও মুশফিক ১০৯ বলে ১০৭ (৯টি চার, ১টি ছক্কা) করে ফিরেছেন। মাশরাফি বিন মুর্তজা ১৪ ও আরাফাত সানি ১৫ রান করে দলের সংগ্রহে একটি ভূমিকা রেখে গেছেন। বাংলাদেশ পেয়েছে লড়ার মতো ইনিংস। টস হেরে ব্যাট করতে হয়েছে। আর দিনের শুরুতে মাশরাফি বলেছিলেন, এই উইকেটে ২৭০/২৮০ রান যথেষ্ট হবে।
পাঠকের মতামত