
আবদুর রাজ্জাক,মহেশখালী:
মুসলিম মিল্লাতের ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হওয়ার সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা’কে কেন্দ্র করে মহেশখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। পশু ব্যবসায়ীরা এ বছর প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে প্রচুর গরু আমদানি করায় হাটে গরুর সরবরাহ অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। বাজার পর্যবেক্ষণকালে দেখা গেছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা এসব গরুর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ কম। দেশি গরুকেই পছন্দের শীর্ষে রেখেছে এখানকার ক্রেতারা। বাজারে গরুর প্রচুর সরবরাহ থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। ক্রেতারা এখনও পছন্দ এবং নিজের সামর্থ্যরে সঙ্গে মিলিয়ে দেখছেন। অর্থাৎ এখনও দেখাদেখি পর্যায়ে রয়েছে কোরবানির হাট। এ বছর গত বছরের তুলনায় কোরবানির পশুর দামও অনেক কম। বিক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর গো খাদ্যের দাম তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হওয়ায় পশু বিক্রি করে তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, কোরবানি পশুর দাম এ বছর মোটামুটি স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। অন্যান্য বছরের মত এ বছরও কোরবানির পশুর হাটে দেশি গরু-মহিষের পাশাপাশি ভারত থেকে আমদানি করা ভূষের সরবরাহও পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, সাময়িকভাবে সৃষ্ট বাজারের এ স্থবিরতা শীঘ্রই কেটে গিয়ে পুরোদমে পশু কেনাবেচা শুরু হবে। মহেশখালী উপজেলার বৃহত্তর গরুর বাজার বড় মহেশখালী নতুন বাজার খেলার মাঠ,পৌরএলাকা পান বাজার মাঠসহ একাধিক গরুর বাজার পর্যবেক্ষণকালে আরো দেখা গেছে, গেল বছরের তুলনায় সাইজ ভেদে গরু প্রতি দাম কমেছে ৪-৫ হাজার টাকা এবং ছাগলপ্রতি হাজার টাকা পর্যন্ত। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের যৌথ উদ্যোগে হাট বসানোর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানালেন উপজেলার বিভিœ গরু ব্যবসায়ীরা।
অপরদিকে গোরকঘাটা থেকে গরু কিনতে আসা ডাক্তার আবু তৈয়ব জানালেন, গরুর বাজারে জাল টাকা সরবরাহকারীর একটি চক্র সক্রিয়। লোকজন যেকোন মুহূর্তে প্রতারিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
এবারে কোরবানি ঈদের বাজার ধরতে মহেশখালী উপজেলার কিছু অসাধু গরু ব্যবসায়ী গরু ঈদের ১ থেকে ২ মাস আগে গরু কিনে মোটাতাজাকরণ প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগ করেছে। তারা গরুকে মোটাতাজাকরণ করতে বিভিন্ন রকম ইনজেকশন ও ডেকসামেথাসন বা এসটেরয়েড জাতীয় হরমোন বৃদ্ধির ওষুধ ব্যবহার করেছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তাছাড়া যে সব অসাধু গরু ব্যবসায়ী পালন করে, তারাই ইনজেকশনের মাধ্যমে গরু মোটাতাজা করেন।
রোগমুক্ত পশুক্রয়ের স্বার্থে বিভিন্ন পশুর হাটে ভেটেরিনারি কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার সরকাররি নিয়ম থাকলেও বিভিন্ন পশুর হাট পর্যবেক্ষণকালে তাদের কারও দেখা মেলেনি। এ ব্যাপারে সদর উপজেলা ভেটেরিনারি কর্মকর্তার অফিসে ফোন করা হলেও কেউ ফোন রিসিভ করেনি।
বিভিন্ন পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা এবং জাল টাকার ব্যবহার রোধে আইনর্শৃংখলাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মহেশখালী থানার অফিসার্স ইনচার্জ সাইকুল ইসলাম জানান, ক্রেতা-বিক্রেতারা যাতে নির্বিঘেœ কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রুয় করতে পারে, সেজন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং তারই অংশ হিসেবে বিভিন্ন পশুর হাটে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। অপরদিকে জাল টাকা পাচারকারীদের ধরতে পুলিশের একাধিক সদস্য সাদা পোশাকে বিভিন্ন গশুর হাঠে অবস্থান করছে।
পাঠকের মতামত