প্রকাশিত: ২১/০৯/২০১৫ ১২:১৯ অপরাহ্ণ , আপডেট: ২১/০৯/২০১৫ ১২:৩৬ অপরাহ্ণ

image_271257.11
csb24.com::
ঢাকের বাদ্যি থেমে গিয়েছে। তবু কাঁসর বাজিয়ে আসর জমানোর চেষ্টা? দিল্লিতে রামলীলা ময়দানে কংগ্রেসের সমাবেশ আজ এই প্রশ্নটিই তুলে দিল। ঘরে-বাইরে প্রবল বিরোধিতার মুখে ও বিহার ভোটের কথা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগেই ঘোষণা করেছেন, জমি অধিগ্রহণ নিয়ে নতুন কোনও অধ্যাদেশ জারি করবে না তাঁর সরকার। বহাল থাকবে ইউপিএ জমানার আইনই। সেই জয়ের উদ্‌যাপন ও আনুষ্ঠানিক ভাবে রাহুল গাঁধীকে তার কৃতিত্ব দেওয়ার লক্ষ্যেই কংগ্রেসের এই সমাবেশ। রাহুল কিন্তু সেখানেও অভিযোগ আনলেন, কেন্দ্রের স্যুট-ব্যুটের সরকার জমি-লুটের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সংসদে হয়নি তো কী, এ বার রাজ্য স্তরে সেটা করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। গত বেশ কিছু দিন ধরে মোদী ও তাঁর সরকার সম্পর্কে রাহুল যা বলে আসছেন, আজও কার্যত সেই রেকর্ডই শুনিয়েছেন তিনি। বলেছেন মোদীর নিত্যনতুন বহুমূল্য পোশাক ও স্যুটব্যুট পরা গুটিকয় পুঁজিপতি বন্ধুর হাতে জমি তুলে দেওয়ার চক্রান্তের কথা।

নতুনত্ব বলতে সরকারের মেক ইন ইন্ডিয়া অভিযানের সূত্র ধরে টেক ইন ইন্ডিয়ার খোঁচা। রাহুলের কথায়, মোদীজি বলছেন মেক ইন ইন্ডিয়া। অথচ এক বার কৃষক বা মজুরের সঙ্গে কথা বলছেন না। ওঁর আসল উদ্দেশ্য টেক ইন ইন্ডিয়া। কৃষক-মজুরের কাছ থেকে সর্বস্ব নিয়ে পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দাও। জমি নিয়ে সাফল্য পাওয়ার পরে রাহুল ও সনিয়া গাঁধী আজ কংগ্রেসের লড়াইটাকে পরের পর্যায়ে এগিয়ে দেবেন, এমনটাই আশা করেছিলেন দলের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু মা-ছেলে যে ভাবে জমিতে আটকে গিয়েছেন, তা নিয়ে দলেই শুরু হয়েছে গুঞ্জন। মনমোহন সিংহ জমানার এক মন্ত্রী বলেই ফেললেন, মাসখানেক ধরে গরিব-গরিব ভাঙা রেকর্ড বাজিয়ে চলেছেন মা-ছেলে। রাহুল তো স্যুট-বুটের সরকারের কথা বলে একই লেবু চটকে যাচ্ছেন। কংগ্রেসের ওই নেতার বক্তব্য, রাজনীতি শুধু জমি অধ্যাদেশে সীমাবদ্ধ নয়। অর্থনীতির প্রসঙ্গ, বিদেশনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা, এ সব কথাও বলা প্রয়োজন।

সংগঠনের তৎপরতায় রামলীলা ময়দান আজ হয়তো মোটামুটি ভরানো গিয়েছে, কিন্তু গ্রাম, গরিব আর জমি নিয়ে রাহুল-সনিয়ার সরকার-বিরোধী আক্রমণে আগের মতো উচ্ছ্বাস কিন্তু দেখা যায়নি। এ নিয়ে ঘরোয়া আলোচনায় দলের নেতাদের একটি অংশের বক্তব্য, জমির ব্যাপারটা মিটে গিয়েছে। জমি নিয়ে নতুন অধ্যাদেশ বা বিল না আনার ঘোষণা করে বিহার ভোটের মুখে প্রসঙ্গটাই শেষ করে দিয়েছেন মোদী। জানিয়ে দিয়েছেন, জমি নিয়ে কাউকে ভুল বোঝানোর সুযোগ তিনি আর দেবেন না। তবু একই জিনিস সামনে রাখলে মানুষের আগ্রহ কমবেই। মা-ছেলের কাছে কংগ্রেসিরাও এখন নতুন কিছু কথা শুনতে চায়।

এটা স্পষ্ট, বিহারের নির্বাচনকে গরিব বনাম ধনীর লড়াই হিসেবে তুলে ধরাই লক্ষ্য রাহুল-সনিয়ার। কংগ্রেসকে তাঁরা তাই গ্রাম-গরিব-মজুরের মসিহা রূপে তুলে ধরতে চাইছেন। যে কারণে ছেলের পাশাপাশি সনিয়াও আজ প্রধানমন্ত্রীকে ঝাঁঝালো ভাষায় আক্রমণ করেন। বলেন, কৃষকের দুর্দশা খতিয়ে দেখার সময় নেই প্রধানমন্ত্রীর। তাঁদের সুরাহার জন্যও মোদী সরকারের কাছে টাকা নেই। প্রধানমন্ত্রী শুধু পুঁজিপতিদের সঙ্গে কথা বলে মজা পাচ্ছেন। ওঁদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক করছেন। শিল্পপতিদের জন্য ৪০ হাজার কোটি টাকা কর মকুব করে দিতেও তাঁর বাধছে না। প্রধানমন্ত্রী বিদেশযাত্রার ব্যাপারেও শৌখিন। তাতেও প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছে সরকারের।

গত লোকসভা ভোটেও সনিয়া- রাহুল গরিবের স্বার্থ ও জনকল্যাণের রাজনীতি আঁকড়েই চলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে সুবিধে হয়নি। জয়রাম রমেশের মতো রাহুলের বন্ধুরা মনে করেন, পথটা ভুল ছিল না। সওয়াশো কোটির দেশে গরিব ও পিছিয়ে পড়ারাই সংখ্যাগুরু। পিছিয়ে পড়াদের কল্যাণে ইউপিএ সরকার কাজও করেছিল প্রচুর। কিন্তু দশ বছরের প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা ও দুর্নীতির কলঙ্কের বোঝায় সব ভাল কাজ চাপা পড়ে যায়। কিন্তু এখন সেই দায় আর নেই। এখন ফসলের ক্ষতি, ক্ষতিপূরণ না পাওয়া, বীজ ও সারের সঙ্কট নিয়ে কৃষক-অসন্তোষ বাড়ছে। মূল্যবৃদ্ধির হারও ঊধ্বর্মুখী। জমি প্রশ্নেও পিছু হটতে হয়েছে মোদী সরকারকে। ফলে রাহুলের জন্য উর্বর জমি তৈরি হয়েছে। আজ সেই মাঠেই সার-জল দেওয়ার চেষ্টা করেন রাহুল। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে জমি আইন সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছেন মোদী।

সেই সূত্র ধরে রাহুলের ঘোষণা, কৃষকের কাছে জমি হচ্ছে মায়ের মতো। মোদী কৃষকদের কাছ থেকে তাঁদের মাকে কেড়ে নিয়ে অন্যের হাতে তুলে দিতে চান। কংগ্রেস তা হতে দেবে না কিছুতেই। এ বার লড়াই হবে বিধানসভার স্তরে। সনিয়া বলেন, ইদানীং প্রধানমন্ত্রী বলছেন, কংগ্রেস উন্নয়ন-বিরোধী। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ওঁদের বিচারধারার লোকেরা কোথায় ছিলেন? যে দল দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আধুনিক ভারত গঠনে পথ দেখিয়েছে, তারা কি উন্নয়নে বাধা দিতে পারে? তবে হ্যাঁ, খরা বা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের ভগবান ভরসায় ছেড়ে দিলে অবশ্যই বাধা দেব। কৃষকের জমি কেড়ে নিলে, শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নিলে একশো বার কেন হাজার বার বাধা দেব!

সভানেত্রী পদে সনিয়ার মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হলেও, রাহুলকে দলের সর্বময় নেতা হিসেবে তুলে ধরা ও গরিবের বন্ধু হিসেবে তাঁর ভাবমূর্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যেই আয়োজন করা হয়েছিল এই সভার। মোদী সরকার কৃষকের জমি ও শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নেবে এই জুজু দেখিয়ে মা-ছেলে সযত্নে সেটাই করতে চেয়েছেন। পাল্টা আঘাত হানতে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু এ দিন বলেন, রাহুল শিশুসুলভ কথা বলছেন। স্যুট বুট ওঁর বাবা-ঠাকুরদাও পরতেন। সে ব্যাপারে কী বলবেন? কেন্দ্রীয় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ইউপিএ জমানায় টুজি ও কমনওয়েলথ গেমস কেলেঙ্কারিতে কংগ্রেস বহু টেক ইন ইন্ডিয়া করেছে। সে কথা নতুন করে বলা অর্থহীন। মানুষ তা জানেন।
সূত্র: আনন্দবাজার

পাঠকের মতামত

  • বৌদ্ধ তারুণ্য সংগঠন- সম্যক এর ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
  • টেকনাফে নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
  • টেকনাফে পুলিশের অভিযানে ১৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার
  • কর্মক্ষেত্রে অনন্য কক্সবাজারের একমাত্র নারী ইউএনও নীলুফা ইয়াসমিন
  • টেকনাফে অর্ধডজন মামলার আসামি ডাকাত আবুল খায়েরসহ গ্রেপ্তার-২
  • ১৫ ঘন্টা পর ট্রলারসহ ৫৬ জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমারের নৌবাহিনী
  • চকরিয়ায় থানার সামনে সাংবাদিকের উপর হামলা
  • রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি হত্যা মামলার ৪ আসামী গ্রেফতার
  • বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদ-ট্রাষ্ট পরিচালনা কমিটি গঠিত
  • উখিয়ায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার চুরি করতে গিয়ে একজনের মৃত্যু
  • আবারো রেকর্ড বুকে ফরাসি ব্যাটার

    আবারো রেকর্ড বুকে ফরাসি ব্যাটার

    স্পোর্টস ডেস্কঃ টি-টোয়েন্টির সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানের রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন ফ্রান্সের গুস্তাভ মেকেওন। এই ফরম্যাটে নিজেকে ...