প্রকাশিত: ০৮/০৯/২০১৫ ৩:১১ অপরাহ্ণ

Ukhia2
এম বশর চৌধুরী উখিয়া :
মহান সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক অপরূপ সাজে সজ্জিত প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর নয়নাভিরাম উপজেলা উখিয়া। দেশের সর্বদক্ষিণের মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এ উপজেলায় অফুরন্ত সম্ভাবনা যেমন রয়েছে তেমনি অন্তহীন সমস্যাও বিরাজ করছে। সুষ্ঠ পরিকল্পনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিয়ে এসব সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হলে অবহেলিত উন্নয়ন বঞ্চিত এ উপজেলা প্রাচ্যের দুবাই হিসেবে পরিণত হয়ে যাবে। ভিন্ন উপজেলার মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য দলে দলে উখিয়া চলে আসবে। এমন অভিমত সচেতন মহলের।

জানা যায়, ১৯৮৩ সালের ৭ নভেম্বর উপজেলা হিসাবে উখিয়ার মান উন্নয়ন হয়। ২০০৯ সালের শেষের দিকে ডিজিটাল উপজেলা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। জালিয়া পালং, রতœাপালং, হলদিয়া পালং, রাজাপালং ও পালংখালী সহ ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ উপজেলার লোক সংখ্যা প্রায় ২ লাখ। আয়তন ২৬১ দশমিক ৮০ বর্গ কিলোমিটার। পান, সুপারী, চিংড়ি পোনা এখানকার রপ্তানীযোগ্য প্রধান অর্থকরী ফসল। এছাড়াও এখানে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন স্পট গড়ে তোলার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তৎমধ্যে জালিয়া পালং ইউনিয়নে অবস্থিত ৩০ কিলোমিটার সমুদ্র বীচ, ইনানীর পর্যটন স্পট, পাটুয়ার টেকেরে প্রাকৃতিক পাথরের স্তুপ, সবুজ অরণ্য যা মিনি চিড়িয়াখানা হিসাবে গড়ে তোলা যাবে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে সুষ্ঠ পরিকল্পনার অভাবে এসব উল্লেখযোগ্য স্পট গুলোতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। উখিয়ার উন্নয়নের জন্য যে সকল প্রস্তাবলী দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনসাধারণ প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন তৎমধ্যে-

ইনানী থেকে মনখালী পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতকে এক্সক্লোসিভ পর্যটন এলাকা ঘোষণা করা ঃ

এটি বাস্তবায়ন হলে প্রতিবছর দেশী বিদেশী হাজার হাজার পর্যটক উখিয়া আগমন করবে। এতে প্রতি মৌসুমে পর্যটন খাত থেকে শত কোটি টাকা আয় করতে পারবে।

কৃষি ভিত্তিক শিল্প কারখানা স্থাপন ঃ

ঋতুভেদে উপজেলার ৫ ইউনিয়নে লাখ লাখ টন আম, লিচু, আনারস, জলপাই, কুল সহ বিভিন্ন ফল উৎপাদন হয়। সুষ্ঠ বাজারজাত করতে না পেরে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকার ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এখানে কৃষি ভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হলে কৃষি পণ্য সংরক্ষণ ও বাজারজাত করে যেমন অর্থনৈতিক দিক দিয়ে লাভবান হওয়া যাবে তেমনি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

উপজেলা ও ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়ক উপ-সড়কে বনায়ন সৃষ্টি ঃ

উপজেলার ৫ ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়ক উপ-সড়কের দুপার্শ্বে গর্জন, মেহগনি, গামারসহ পরিকল্পনা মতে বৃক্ষরোপনকল্পে এ গুলো যতœ নেয়া হলে আগামী ২০/২৫ বছর পর কমপক্ষে শত কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। শুধু তাই নয় এ বনায়ন বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের এ সময়ে পরিবেশ রক্ষায় ব্যাপক অবদান রাখবে।

রেজু নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপন করা ঃ

রেজু নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপন করে সুষ্ঠ পানি বন্টনের পরিকল্পনা নিলে শুষ্ক মৌসুমে অনাবাদী থাকা প্রায় ৫ হাজার একর জমি চাষাবাদের আওতায় আসবে। এছাড়াও নদী তীরবর্তী এলাকায় সবজি চাষ, নদীতে মাছ চাষ করে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানী করা সম্ভব হবে। এই অর্থ জাতীয় অর্থনীতির চাকা সচল করতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।

বন বিভাগের বেদখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারপূর্বক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আনাঃ

৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বন বিভাগের জমিতে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বসতী স্থাপন করে বসবাস করে আসছে। দিন দিন ধরে এ দখল প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। মালিকানা না পাওয়ার আশংকায় অবৈধ দখলদাররা বৃক্ষ রোপন করে না। বরং পাহাড় কর্তন থেকে শুরু করে নানা ভাবে পরিবেশ ধ্বংস করে আসছে। এসব অবৈধ দখলদারদের সামাজিক বনায়নের আওতায় এনে বৃক্ষ রোপনের সুযোগ সৃষ্টি করা হলে ২০/৩০ বছর পর হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে।

বেদখল হয়ে যাওয়া খাস জমি উদ্ধার করে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আনা ঃ

উপজেলার বিপুল পরিমান খাস জমি বেদখলে রয়েছে। এসব খাস জমি চিহ্নিত করে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করে ভাড়া প্রদান ও লীজের আওতায় আনা হলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় সম্ভব হবে।

উখিয়া ডিগ্রী কলেজ ও টিভি রিলে কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকায় শিল্প কারখানা স্থাপন ঃ

উখিয়া ডিগ্রী কলেজের পশ্চিমের পাহাড়িয়া সমতল ভূমি ও টিভি রিলে উপ-কেন্দ্রের দক্ষিণের সমতল ভূমিতে বিসিক শিল্পনগরী ও ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা স্থাপন করা যেতে পারে। উক্ত স্পট গুলোতে শিল্প কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে এতদঞ্চলের বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যেতে পারে।

উখিযার আবাসন সমস্যা নিরসন দরকার ঃ

নিত্য নতুন অপরিকল্পিত বসত ঘর নির্মাণের কারণে উখিয়ার আবাসন সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এর ফলে দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে ফসলী জমি, সামজিক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে এর বিহীত ব্যবস্থাসহ শিক্ষা চিকিৎসা সহ মানুষের যাবতীয় মৌলিক অধিকার নিয়ে উন্নয়নমুখী পদক্ষেপ জরুরী।

অপর দিকে উখিয়ার সবচেয়ে বড় এবং প্রধান সমস্যা হচ্ছে রোহিঙ্গা সমস্যা, পাশাপাশি বেকারত্ব, কুসংস্কার, অশিক্ষা, জনসংখ্যা সমস্যা, সহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নিরসনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

পাঠকের মতামত

  • বৌদ্ধ তারুণ্য সংগঠন- সম্যক এর ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
  • টেকনাফে নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
  • টেকনাফে পুলিশের অভিযানে ১৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার
  • কর্মক্ষেত্রে অনন্য কক্সবাজারের একমাত্র নারী ইউএনও নীলুফা ইয়াসমিন
  • টেকনাফে অর্ধডজন মামলার আসামি ডাকাত আবুল খায়েরসহ গ্রেপ্তার-২
  • ১৫ ঘন্টা পর ট্রলারসহ ৫৬ জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমারের নৌবাহিনী
  • চকরিয়ায় থানার সামনে সাংবাদিকের উপর হামলা
  • রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি হত্যা মামলার ৪ আসামী গ্রেফতার
  • বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদ-ট্রাষ্ট পরিচালনা কমিটি গঠিত
  • উখিয়ায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার চুরি করতে গিয়ে একজনের মৃত্যু
  • বৌদ্ধ তারুণ্য সংগঠন- সম্যক এর ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

    বৌদ্ধ তারুণ্য সংগঠন- সম্যক এর ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

    উৎফল বড়ুয়া:: একঝাঁক স্বপ্নবাজ তরুণের তারুণ্যে ভরপুর বৌদ্ধ তারুণ্য সংগঠন সম্যক ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে। ...