
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ:
ঝিনাইদহে প্রশাসন নিরব ধেয়ে আসছে মাদকের ভয়ানক বিষধর “কালসাপ”।ব্যাপক দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মাদক ব্যাবসায়িরা ও মাদক সেবিরা। অভিযোগ আছে টাকার বিনিময়ে পুলিশ মাদক ব্যবসায়ি ও মাদক সেবকদের সহযোগিতা করে।যদিও মাঝেমধ্যে মাদকের বড় বড় চালান সহ গ্রেফতার হচ্ছে জড়িতরা।তার পরেও কেন এই মদক চোরা চালান বন্ধ হচ্ছে না।এ প্রশ্ন এখন বলোকা বাসির।যাই বলুন বা করুন না কেন মাদক গ্রহনের মাধ্যমে মানুষ দুঃখকে ভুলে থাকতে চায়। একথা মাদক সেবিদের প্রথম ও শেষ কথা। আসলে কি মাদক সেবন করলে দুঃখ সহ সব কিছু ভুলে থাকা সম্ভব ? আর উচ্চবৃত্তের জন্য এটি ফিলিংস।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের এক হিসাব মতে দেশে মাদকাশক্তির সংখ্যা বর্তমানে ৪৭ লাখ এবং এদের ৯০ভাগই কিশোর ,তরুন,তরুনী।তবে জাতিসংঘ বলবে মাদকাশক্ত প্রায় ৬৮ লাখ এর মধ্যে ৮৪ভাগ পুরুষ ১৬ ভাগ নারী। ইয়বা ,ফেনসিড্রিল, বিয়ার,দেশী , বিদেশী মদ,গাজা,আফিম,ভায়াগ্রা, আইসপিল,টিডিসিক ইনজেকশক ও মধ্যপ্রাচ্যে বহুল ব্যবহৃত সীসা, ঘুমের ঔষধ এবং জুতা সেন্ডেল তৈরীর আইকাও নেশাদ্রব্যের অর্ন্তভূক্ত। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের পূর্ণ চেষ্টা সত্ত্বেও যখন নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয় না , তখন দেশের অভ্যন্তরে অনুমোদিতভাবে প্রস্তুত আর বাজারজাত করে দিলে বিষয়টি কেমন হয় ? গণমাধ্যমে ব্যপক প্রচারনার মাধ্যমে মাদকের কুফল তুলে ধরতে হবে। এরপর যদি কেউকিনে ব্যবহার করে তাহলে সে মাদক খেয়ে বা ব্যবহার করে স্বর্গে চলে যায় যাক। চোরাইপথে আনা মাদকদ্রব্যের জন্য বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা ব্যায় হবেনা মাদক ব্যবহার বন্দের কারনে খুনাখুনি হবেনা। মাদকের টাকা যোগাড় করতে গিয়ে ছিনতাই ,দষ্যুতা,রাহাজানি বন্ধ হয়ে যাবে। সুতরাং দেশের অভ্যন্তরে প্রস্তুত করে বাজারজাত করা হলে উপরোক্ত সমস্যা এমনিতে সমাধান হয়ে যাবে। মাদক এক ভয়ানক “কালসাপ” প্রাথমিকভাবে অনেকেই দারুনভবে আকৃষ্ট হয়ে নিজের অজান্তেই কখন যে,আসক্ত হয়ে পড়ছে তা ঠাহর করতে পারে না । মৌলিক চাহিদ ও নূন্যতম নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত সমাজের অভিভাবকহীন অপ্রাপ্ত / প্রাপ্ত বয়ষ্ক পুরুষ / নার দেরকে মাদক সেবন থেকে বিরত রাখা দুরহ , আর পারিবারিক ঐতিহ্য বা প্রথাগত কারনে যাহারা মাদক গ্রহন করে তাদেরকে এই রস্তা থেকে ফিরিয়ে আনা যাবে না । আপনার প্রিয় সন্তান যখন আপনার অসচেতনতা বা কম নজরদারীর কারনে নেশার জগতে ঢুকে পড়ে তখন তাকে রক্ষা করার জন্য কতনা চেষ্টাই করা হয়। এই চেষ্টার অর্ধেক যদি আগে থেকে করা হতো তাহলে আপনার সন্তান শোর জগৎ চিনত না।আজকে যারা সন্তানের পিতা / অভিভাবক তাদেও প্রতি বিনীত আহবান “আপনার সন্তানের হাতে অপ্রয়োজনে অতিরিক্তটাকা দিবেন না।” বৃত্তবান অভিভাবকরা সাধারণত এই বিষয়ে কমই খেয়াল রাখেন। প্রিয় সন্তনের আবদার পুরনে সবসময়ই বেশী আন্তরিক , অতি আদরে ভালবেসে সন্তানের হাতে প্রচুর নগদ টাকা উঠিয়ে দিয়ে স্বেচ্ছায় তার সন্তানকে মাদক গ্রহনের সুযোগ করে দিচ্ছেন । অর্থে উৎসে ভাটা পড়লে মাদক সেবন করতে হবে এই আশায় প্রতিদিন নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে অভিভবকদের পটানোতে ব্যার্থ হয়ে অনেক ভাল পরিবারের সদস্যরাও অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। অপরদিকে মদক সেবনকারী / ভোক্তাগনের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে মাদক ব্যবসায়ীগন অভিনব পদ্ধতিতে সকল প্রতিকুলতাকে অতিক্রম করে চাহিদামাফিক মাদকদ্রব্য ভোক্তার হাতের কাছে পৌঁছে দেয়।আমি যখন দেখি কোন সাইনবোর্ডে বিজ্ঞাপনে বলা হয়- প্রতিবার মাদকগ্রহনের জন্য নতুন সুই সিরিন্জ ব্যবহার করুন- তা নাহলে এইডস হবে । তখন আমার মনে প্রশ্ন জাগে – ঐ সংস্থাটি আসলে কি মাদক প্রতিরোধে কাজ করে ? নাকি সুই সিরিন্জের বিজ্ঞপন দেয় ? প্রযুক্তি উৎকর্ষতাকে পুজি কওে,অপসংস্কৃতির্পূণ ওয়েবসাইড, টি.ভি চ্যানেলের অবাধ স্বাধীনতা,বেলাল্লাপনা ,লাম্পট্য,অসততা সমাজকে দিন দিন পিছনের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষাব্যবস্থা , রাজনৈতিক অস্থিরতা, সন্ত্রাস আর জঙ্গীবাদের মদদ দাতাদেরকে সুধরানো না হলে এ সমাজ ব্যবস্থায় আমরা কেউই নিরাপদ নই। তরুন / তরুনীগন আজকে ইয়াবা মনে কওে যা সেবন করছে তার অধিকাংশই জন্ম নিয়ন্ত্রন ট্যাবলেট,আর ফেনসিন্ড্রিল হিসাবে যাহা সেবন করছে তাহা উচ্চমাত্রার দেশী / বিদেশী কাশির ঔষধ। এদেও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে কিডনি ,ব্রেইন ও নানাবিধ শারিরীক সমস্যা সৃষ্টি ছাড়া ভাল কিছু করতে পারেনা। মেয়েদের ক্ষেত্রে সন্তান ধারন ক্ষমতা নষ্ট এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে যৌনশক্তির বিলুপ্তি ঘটায়। পারিবারিক শাসন ,ধর্মীয় শিক্ষা, বই পড়া, খেলাধুলা কর ,শিক্ষা সফর,স্কাউটিং ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাউনসিলিং এর মাধ্যমে মাধককে নিরুৎসাহিত করতে হবে। নৈতিক অবক্ষয় রোধ করে একটি সুস্থ্য ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।
পাঠকের মতামত