সিএসবি ডেস্ক, ১৪ সেপ্টেম্বর ॥ নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ জানিয়েছেন, ভোটারদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
যারা ভোটার হওয়ার সময় নির্ধারিত আবেদনপত্রে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়েছিলেন, নির্বাচনের আগে আগে সে নম্বরেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোট সংক্রান্ত তথ্য পেয়ে যাবেন।
এছাড়া ভোটার হওয়ার সময় যাদের মোবাইল নম্বর ছিল না, বা আবেদনে উল্লেখ করেননি, তাদের জন্যও সুযোগ রাখছে ইসি।
শাহওনেওয়াজ বলেন, “তারা ভোটের দিন মোবাইলে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর লিখে একটি নির্দিষ্ট নম্বরে এসএমএস করলে সঙ্গে সঙ্গে ভোটার নম্বর ও ভোটকেন্দ্র জানিয়ে দেবে কমিশন”।
এর আগে সিটি কর্পোরেশন ও পৌর নির্বাচন এসএমএসের মাধ্যমে ভোটার নম্বর ও কেন্দ্র জানার ব্যবস্থা করে ইসি।
এবার বড় পরিসরে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য জানানোর এই উদ্যোগ নিচ্ছে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন ইসি।
কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত প্রার্থী বা এজেন্টের মাধ্যমে ভোটের তথ্য সংগ্রহ করেন ভোটাররা। ভোটের আগে ভোটার ক্রম, কেন্দ্র পেতে বেশ ঝামেলায় পড়তে হয় অনেককে। এ নিয়ে তাদের তাড়াহুড়ো বা উদ্বেগ ঘোঁচাতে চাইছে ইসি।
কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব ফরহাদ হোসেন বলেন, “ইসির অনুমোদনের পর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বর্তমানে দেশে ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটরের গ্রাহক সংখ্যা ১০ কোটিরও বেশি। তবে এর মধ্যে ভোটার সংখ্যা কতো, সে তথ্য কমিশনের কাছে নেই।
সর্বশেষ হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুযায়ী দেশে মোট ভোটার ৯ কোটি ২১ লাখ ২৯ হাজার ৮৫২ জন। এর মধ্যে ৪ কোটি ৬২ লাখ ১ হাজার ৮৭১ জন পুরুষ এবং ৪ কোটি ৫৯ লাখ ২৭ হাজার ৯৮১ জন নারী।
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার কাজ শুরু হয়।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ জানান, এবার ভোটার তালিকায় মৃত ও স্থানান্তরিত ভোটারের ক্রম উল্লেখ থাকবে।
“২০০৮ সালের তালিকা হওয়ার পর সবার ভোটার ক্রম আলাদাভাবে রয়েছে। স্থানান্তরিত বা মৃতদের নাম ভোটারক্রম থেকে বাদ দিতে গেলে অগোছালো পরিস্থিতি তৈরি হবে। এক্ষেত্রে তালিকায় নাম থাকবে না তাদের, শুধু ভোটারক্রমের পাশে মৃত বা স্থানান্তরিত এলাকার নাম উল্লেখ থাকবে।”
এতে কেউ জাল ভোট দেয়া বা কারচুপি করার সুযোগ পাবে না বলেও জানান তিনি।
এবার হালনাগাদের সময় মৃত্যু হওয়া ৭ লাখ ৪১ হাজার ৬৯ জনের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটার তালিকা ছাপানোর ক্ষেত্রেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হচ্ছে। মৃত ভোটার ও স্থানান্তরিত ভোটারদের ক্রমিক নম্বরের পাশে যথাক্রমে ‘কর্তন করা হয়েছে’ ও ‘স্থানান্তরিত হয়েছেন’ উল্লেখ থাকবে। তবে নির্দিষ্ট আসনের ভোটার তালিকার উপরে মোট ভোটার সংখ্যা লেখা থাকবে।
‘ভোটার স্ক্রিন’
ইসি কর্মকর্তারা জানান, দশম সংসদ নির্বাচনে ভোটকক্ষে (গোপনীয় কক্ষ) প্রচলিত কাপড়ের পর্দা ব্যবহার না করে বিশেষ ‘ভোটার স্ক্রিন’ ব্যবহারের প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে।
প্রতিটি ভোটকক্ষে বিশেষ ধরণের ফোল্ডিং বোর্ড সরবরাহের জন্য ইতোমধ্যে একটি দাতাসংস্থার প্রস্তাব এসেছে। কমিশনের অনুমোদন পেলে ব্যালট পেপারে সিল মারার কক্ষে কাপড়ের পর্দা দেয়ার প্রচলিত রীতির অবসান ঘটবে।
আগামী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচনের কথা রয়েছে।
পাঠকের মতামত