
আহসান সুমন, ১৪ সেপ্টেম্বর ॥
কেন্দ্রীয় মহাসচিবসহ শীর্ষ নেতাদের অসন্তোষ ও নানা বিশৃংখলার মধ্য দিয়ে দায়সারা ভাবে শেষ হয়েছে কক্সবাজার জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশন। ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হয়ে রাত অবদি চলতে থাকে এ সম্মেলন। এদিকে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মিলনায়তনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। এরপর হলরুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি বলেছেন, প্রতিহিংসা আর লাশের রাজনীতি নয়, জাতীয় পার্টি সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষা এবং শান্তির রাজনীতি বিশ্বাস করে। তাই আগামী নির্বাচনে দুই নেত্রীকে বাদ দিয়ে পল্লীবন্ধু এরশাদের হাতে গড়া সংগঠন জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় আনবে এদেশের জনগণ। তিনি বলেন, নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেয়ার লক্ষ্যে সারাদেশের ৩ শ’ আসনের জন্য রূপরেখাও তৈরী করেছেন হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ। সে জন্যে সকল কোন্দল ও মতরিরোধ ভুলে গিয়ে নেতা-কর্মীরা যেন শক্তভাবে আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করার কাজে নেমে পড়েন সেসব বিষয়ের উপর গুরুত্বারূপ করেন মহাসচিব। জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক কবির আহমদ সওদাগরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশিদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য তাজুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলাইমান আলম শেঠ, যুগ্ম মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল আমিন শানু, জাতীয় পার্টির আমেরিকা শাখার সভাপতি মাহবুবুল আলম ভুলুসহ জেলা ও উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এদিকে বেলা ১২ টায় সম্মেলনের শুরু থেকে প্রথম অধিবেশনের শেষ পর্যন্ত নানা ধরনের অব্যবস্থাপনার দৃশ্য দেখে কেন্দ্রীয় মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপিসহ শীর্ষ নেতাদের অসন্তোষ মনোভাবের কথা নিজ বক্তব্যে তুলে ধরেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া। তিনি ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, কক্সবাজারের নেতারা এ পর্যন্ত ডাইসে দাড়িয়ে যা বক্তব্য দিয়েছেন তা শুনে মনে হচ্ছে এখানে রাজনীতির চর্চা নয়, একে অপরের উপর দোষ চাপানো আর নিজেদের জাহির করার চর্চা চলছে বেশ জোরে শোরে। তিনি মঞ্চের সামনে বসা কয়েকশ’ নেতাকর্মী মুহুর্তের মধ্যে বিশৃংখলভাবে বের হয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে বলেন, টেবিলে বসা মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের জন্য দীর্ঘ ৭ ঘন্টা সময়ে এককাপ চা কিংবা একটি বিস্কিটের প্যাকেট দেয়া হয়নি। কেউ কিছু মুখে দেয়নি বসার পর থেকে। অথচ, হাউসভর্তি দলীয়কর্মী খাওয়ার অজুহাতে মুহুর্তের মধ্যে বাইরে চলে গেলেন। এমন কষ্টের কথা কাকে বুঝাবো। এসব তো আমাদের নিজেদের দোষ, এখন আমরাই যদি সংশোধন না হয় তাহলে দল গুছাবে কে। প্রথম অধিবেশনের পর শুরু হওয়া ২য় অধিবেশনে জেলার একটি সাংগঠনিকসহ ৯ উপজেলার প্রত্যেন্ত অঞ্চল ও তৃণমূল পর্যায় থেকে আসা সাধারণ কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে জেলা জাতীয় পার্টির নতুন একটি কমিটি গঠন করা হয়।
পাঠকের মতামত