
পুলিশ-দালাল চক্রের মাধ্যমে
সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও, কক্সবাজার::
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওয়ে অবৈধভাবে বসবাস করা মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গা নারী পুরুষের হাতে সহজেই পাসপোর্ট চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর এ কাজের নেপথ্যে স্থানীয় একটি চক্র কাজ করছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানা গেছে কক্সবাজার পাসপোর্ট অফিস, ডিএসবি পুলিশ, ও দালালদের সমন্বয়ে গঠিত এ চক্রের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা পাসপোর্ট পেয়ে থাকে। এ জন্য পাসপোর্ট প্রতি ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়া হয়। টাকা পরিশোধের মাত্র ২৫ দিনের মাথায় রোহিঙ্গাদের হাতে পাসপোর্ট পৌঁছে যায়।
ঈদগাঁও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে বৃহত্তর ঈদগাঁওয়ে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা কত তার সঠিক সংখ্যা তাদের কাছে নেই। এছাড়া চৌফলদন্ডি, পোকখালী, ইসলামপুর, ইসলামাবাদ ও ঈদগাঁওর বিভিন্ন এলাকায় রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করছে। এ সুযোগে এসব ইউনিয়নের নাগরিক বনে মাদক (ইয়াবা) ব্যবসা সহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে রোহিঙ্গারা।
সংশ্লিষ্ট এলাকা ঘুরে জানা যায়, বৃহত্তর ঈদগাঁওয়ে বাংলাদেশী পাসপোর্ট ধারী রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হতে পারে। তাদের একটি বিশাল অংশ বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছে। তারা বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকান্ডসহ জঙ্গী কার্যক্রম চালাতে ঈদগাঁর একটি মহল (ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের হামলার মত) অস্থিরতা সৃষ্টিরও পায়তারা করছে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে জানা গেছে।
রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পাওয়া প্রসঙ্গে জেলা পাসপোর্ট অফিসের জনৈক কর্মকর্তা জানান, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া পাসপোর্ট দেয়া হয়না। এদিকে সদরের ঈদগাঁওয়ে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাব আসা রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ থামানো যাচ্ছে না। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের ভাষা ও সংস্কৃতি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার কাছাকাছি হওয়ায় তারা খুব সহজেই স্থানীয় মূল ধারায় মিশে যাচ্ছে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে ঈদগাঁওর ভুতিয়াপাড়া, চান্দের ঘোনা, কালিরছড়া, মেহের ঘোনা, হাসিনাবাদ, শিয়াপাড়া, দরগাহ পাড়া, ভোমরিয়াঘোনা, গজালিয়া, ইসলামাবাদের ঢালার ধোয়ার, কাঞ্চন মালা, রাজঘাট, ইসলামপুরের ভিলেজার পাড়া, জওন্যাকাটা, নতুন অফিস, হাজীপাড়া, পোকখালীর পূর্ব-পশ্চিম- উত্তর গোমাতলী সহ কয়েকটি এলাকায় রোহিঙ্গারা বসবাস করছে। তারা মূলত: দিন মুজুর এবং বিভিন্ন কাজ করে জিবিকা নির্বাহ করেন। তাদের প্রত্যেক পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫/১০ জন। তাদের রয়েছে একাধিক স্ত্রীও। তারা সময় অসময়ে অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (উপ পরিদর্শক) মিনহাজ মাহমুদ ভুইয়া বলেন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেওয়ার পেছনে পুলিশকে দায়ী করা উচিত হবে না। কারণ জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার এখতিয়ার পুলিশের নেই। এছাড়া উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া কাউকে আইনের আওতায় আনা যায়না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
পাঠকের মতামত