বিশেষ প্রতিবেদক:::
সীমান্ত শহর টেকনাফ উপজেলায় নেটওর্য়াক কোম্পানী রবি’র সিম কিনে প্রতিনিয়ত বিপদে পড়ছে সাধারণ মানুষ। টেকনাফে অন্য কোম্পনীর চেয়ে সিংহভাগ লোকই রবি কোম্পানীর গ্রাহক হওয়ার সুবাদে রবি নিয়ে মাতামাতি হয় প্রচুর। এক সময়ের জমজমাট রবি কোম্পানীর ব্যবসা সিম ও থ্রিজি সমস্যার কারণে বর্তমানে রবি সিম ব্যবহার থেকে বিরত রয়েছেন অনেকে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিবেচনায় রবি বিমুখ হয়ে অন্য অপারেটরের সিম ব্যবহারের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে। শাহপররিদ্বীপ বড় মাদরাসার মুহতামিম মাও. হোসাইন আহমদ জানান বর্তমানে তাঁর ৪ টি রবি সিম বন্ধ হয়ে গেছে। তাঁর পরিচিত মোবাইল নম্বর টি ফিরে পেতে তিনি ককসবাজার রবি’র সার্ভিস সেন্টারে গেলে তাঁেক রেজিষ্ট্রিশন সমস্যা বলে তাদের কাছ থেকেই সিম নিতে বলেন। পরামর্শমত ককসবাজার রবি’র সার্ভিস সেন্টার থেকে নেয়া সিমটিও কয়েক দিন পরে সায়িক ভাবে বন্ধ রয়েছে বলে জানান। অবশেষে তিনি রবি সিমের যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে অন্য কোম্পানীর সিম ব্যবহার করছেন। এভাবে টেকনাফের কয়েকশত গ্রাহকের সিম বন্ধ হয়েগেছে। পৌরসভার আবুল কালাম, জাফর আলম, নজির আহমদসহ অনেকে জানান হঠাৎ রবি সিম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদেরকে অনেকে প্রতারক বলে মন্তব্য করেছেন। ব্যবসায়ীক লেনদেনের ক্ষেত্রে মোবাইল নম্বরই প্রধান ঠিকানা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। এ অবস্থায় সিম বন্ধ হয়ে গেলে সত্য মিথ্যার প্রশ্ন নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়।
এদিকে হঠাৎ রবি সিম এভাবে বন্ধ হওয়ার পেছনে কারণ খুজতে গিয়ে জানা যায় অনেক চমকপ্রদ তথ্য। টেকনাফে রবি কোম্পানীর সিমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে মিয়ানমারের মংডু বাজারে। সে দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসন পর্যন্ত ব্যবহার করে রবি সিম। বিদেশে পাঠানো সকল সিম রেজিষ্ট্রিশন করা হয় ভোয়া আইডি কার্ড এর মাধ্যমে। টেকনাফ বাজারে যে কোন কোম্পানীর সিম কিনতে কোন রকম চাহিদা লাগেনা। শুধু টাকা দিলেই পাওয়া যায় সিম। সিম ব্যবসায়ীরা কোম্পানীর চাহিদা পূরণ করতে প্রতি সিমের ফরম আইডি কার্ডসহ পূরণ করতে ব্যবহার করে ভিন্ন লোক। তারা সকল চাহিদা দিয়ে পূরণ করা প্রতি ফরমে পায় ২০ থেকে ৩০ টাকা। ফলে সিম নম্বরের ব্যবহার কারীর সাথে দেয়া চাহিদার কোন মিল নেই। সিম ব্যবহার করে মিয়ানমারের মংডু এলাকার আবুল, ন্যাশনাল আইডিতে রেজিষ্ট্রিশন হয়েছে চকরিয়ার হাসানের নামে। বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায় চকরিয়া থেকে ৩ জনের একটি দল প্রতি সপ্তাহে টেকনাফ আসে নকল আইডি কার্ড বিক্রি করতে। তারা প্রতি দোকানীকে চাহিদামত নকল আইডিকার্ড দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রচুর টাকা। টেকনাফের আবুল কাশেম নামের এক ব্যবসায়ী জানান সিমের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা আইডি কার্ডে’র ৯৮% ভোয়া।
অপর দিকে টেকনাফে দেশের প্রত্যেক নেটওয়ার্ক কোম্পানী ব্যবসা করলেও শুরু থেকেই রবি কোম্পানীর বিভিন্ন রকম প্রতারণার শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের। কম মূল্য ও যোগাযোগের প্রায় জনের হাতে রবি সিম বলে অন্যজনও রবি সিম ক্রয় করে। নেটওয়ার্ক দূর্বলতা, থ্রিজি বিড়ম্বনা, ইন্টার নেট প্রতারণাসহ আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে কোম্পানীটির বিরুদ্ধে। অবশেষে আচমকা সিম বন্ধ হওয়ার মত নতুন ব্যাধিতে ভোগছে রবি গ্রাহকরা। যে কোন মূহুর্তে নিজের পরিচিত রবি সিম টি বন্ধ হয়ে যেতে পারে এমন আশংকায় রয়েছেন গ্রাহকরা।
প্রকাশিত: ০৭/০১/২০১৫ ৯:২৩ অপরাহ্ণ
পাঠকের মতামত