
এম.কামাল উদ্দিন::রাঙামাটিতে ‘পার্বত্য অঞ্চলের এসএমই পণ্য মেলা’ শীর্ষক পাঁচ দিনব্যাপী মেলা আজ মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। শহরের ষ্টেডিয়াম এলাকার জিমনেসিয়াম চত্ত্বরে এসএমই ফাউন্ডেশন চলতি অর্থবছরের (২০১৪-১৫) বার্ষিক কর্মপরিকল্পনায় নির্ধারিত বহুমুখী কর্মসূচির আওতায় এই মেলার আয়োজন করেছে। মেলা চলে প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত। গত শুক্রবার সকাল শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু মেলার উদ্বোধন করে ছিলেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের উপমহাব্যবস্থাপক নুরুল আলম শাহীন জানিয়েছেন, এ বছর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঢাকায় একটি জাতীয় এসএমই মেলাসহ দেশের সাত বিভাগ রংপুর, রাজশাহী, কক্সবাজার, যশোর, বরিশাল, সিলেট, গোপালগঞ্জ এবং রাঙামাটিতে (খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবন) আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে রংপুর এবং রাজশাহীতে এসএমই পণ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাঙামাটিতে ২৬-৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী ‘এসএমই পণ্য মেলা-২০১৪’ অনুষ্ঠিত হয়।বাংলাদেশে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী শিল্পপণ্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বয়ন শিল্পপণ্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পরিবারের সদস্যদের নিজস্ব চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে এসব পণ্য উৎপাদন শুরু হলেও বর্তমানে অনেক উদ্যোক্তাই এসব পণ্য বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাণিজ্যিকভাবে এধরণের পণ্য উৎপাদন তখনই সফল হবে যখন দেশীয় বাজারের মূলধারায় এসব পণ্যকে পরিচিত ও ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা সম্ভব হবে।শতাব্দী ধরে বাংলাদেশ বিভিন্ন উপজাতি সম্প্রদায়ের সংস্কৃতিতে সম্মৃদ্ধ। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা ও সমতল ভূমিতে উপজাতিদের প্রায় ৩৫টি সমপ্রদায়ভুক্ত প্রায় ২৫ লাখ উপজাতি পাহাড়ি মানুষ বাস করেন। এসব আদিবাসী প্রধানত বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী ও দিনাজপুর জেলায় বাস করে । তারা প্রধানত কৃষি, বাণিজ্য, কারুশিল্প ও বয়ন কাজে নিয়োজিত। তারা কৃষিপণ্য, হস্ত শিল্পজাত পণ্য, ভেষজ পণ্য, উপজাতিয় পোশাক (পিনন, থামি, খাদি), শাল, বিছানার চাদর, সালোয়ার, কামিজ, শার্ট, পাঞ্জাবি, সোফা কভার, রুমাল, গামছা ইত্যাদি তৈরি করে। এসব পণ্যের স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যপক চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া তাদের ভিন্ন রুচিবোধ ও স্বতন্ত্র জাতিগত নকশার কারণে এসব পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারেও জায়গা করে নিয়েছে। তারপরও পার্বত্য এলাকার বাইরে এসব পণ্য সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানে। এসএমই পণ্য মেলা আদিবাসী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত বিচিত্র এসব পণ্যের বাজার চাহিদা সৃষ্টিতে ব্যপক ভূমিকা রাখবে। এসএমই পণ্য মেলা বিদ্যমান বাজারের সঙ্গে যোগসূত্র সৃষ্টি ও নতুন বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে উৎপাদিত এসব পণ্যের বিক্রয় বাড়াতে সহায়ক হবে । ইতিমধ্যে এসব কর্মসূচির আওতায় পাবর্ত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বাছাইকৃত ২৫ নারী উদ্যোক্তাকে ঐতিহ্যগত স্বকীয়তা বজায় রেখে পণ্যের যুগোপযোগী ডিজাইন, কালার কম্বিনেশন এবং বয়ন বিষয়ে নিবিড় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ প্রদান করেন দেশের স্বনামধন্য ডিজাইনার চন্দ্র শেখর সাহা। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে স্থানীয় প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন ডিজাইনার মিসেস মঞ্জুলিকা চাকমা এবং তেনজিং চাকমা। কর্মসূচির আওতায় উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী মূলধারার বাজার ব্যবস্থায় সম্পৃক্তকরণের অংশ হিসেবে এবার রাঙামাটিতে আয়োজিত মেলায় সুবিধাভোগী প্রায় ৩০ উদ্যোক্তার প্রায় ৩শ’ পণ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে। মেসার্স মাইসা হ্যান্ডিক্র্যাফটস প্রোপাইটার নারী উদ্যোক্তা পারভীন আক্তার বলেন-মেলায়
রাজনৈতিক কারনে ক্রেতাদের উপস্থিতি কম থাকায় এবছর পণ্য বিক্রয় একটু কম হয়েছে।
পাঠকের মতামত