প্রকাশিত: ৩০/১১/২০১৪ ১১:০১ অপরাহ্ণ , আপডেট: ৩০/১১/২০১৪ ১১:০১ অপরাহ্ণ
কক্সবাজারে নাশকতা চেষ্টায় গোপন বৈঠককালে নারীসহ আটক-১৩

BBB1
মাহমুদুল হক বাবুল, উখিয়া ::কক্সবাজার সদর থানা পুলিশ ৬নং গাড়ির মাঠ এলাকা থেকে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের দুই রোহিঙ্গা জঙ্গিকে আটক করেছে। আটককৃত রোহিঙ্গা জঙ্গিরা (আরএনও) আরকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানিজেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও রোহিঙ্গা ভিত্তিক চট্টগ্রাম কালাদন প্রেসের পরিচালক আবু তাহের ওরফে থিংসু ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড কুতুপালং ক্যাম্পে বসবাসকারী মাষ্টার ইকবাল বলে জানা গেছে। তাদের নিকট থেকে পুলিশ নগদ টাকা, ৪/৫টি মোবাইল সেট ও বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শীর্ষ জঙ্গি নেতা ও ইত্তেহাদুল জঙ্গি সংগঠনের সভাপতি হাফেজ নঈম উল্লাহ, হাফেজ জালাল, মৌলভী আবু ছালেহ, জঙ্গিনেতা আবু ছিদ্দিকসহ ১০/১২ জনের জঙ্গি নেতাদের নিয়ে দেশে নাশকতার সৃষ্টির লক্ষ্যে ৬নং গাড়ির মাঠ এলাকার মুক্তি সংগঠনের কার্যালয়ে এ জঙ্গিদের নিয়ে বৈঠক হচ্ছিল। বৈঠককালে সদর থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ২ রোহিঙ্গা জঙ্গিকে আটক করলেও অপর শীর্ষ জঙ্গি নেতা হাফেজ নঈম উল্লাহসহ অন্যরা পালিয়ে পুলিশের হাত থেকে বেঁেচ যান। তারা ইত্তেহাদুল জমিয়াতুল রোহিঙ্গা সংগঠনকে শক্তিশালী করতে বিদেশী এনজিও সংস্থা থেকে কোটি কোটি টাকার ফান্ড সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের নিয়ে তা আত্মসাত করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এছাড়াও আরকান রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা ও রয়েছে বলে আটককৃত জঙ্গিরা পুলিশের নিকট স্বীকারোক্তি দিয়েছে। ওই দুই জঙ্গি নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার খবরে উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফ নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে অবস্থানকারী জঙ্গি ক্যাডারেরা গ্রেপ্তার আতংকে ভোগছে বলে জানা গেছে। রোহিঙ্গাদের নামে কোটি কোটি ত্রাণের টাকা আতœসাৎকারী স্থানীয় সাবেক জামাত ক্যাডার ও এক প্রভাবশালীর নাম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় রয়েছে। কিন্তু কুতুপালং ক্যাম্প পুলিশের সাথে জঙ্গিদের আতাঁত থাকায় পুলিশ কুতুপালং ক্যাম্প এলাকা থেকে এ পর্যন্ত কোন জঙ্গি ক্যাডারকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি। অথচ ওই সব জঙ্গিদের মধ্যে বেশিরভাগ প্রকাশ্যে ঘুরতে দেখা গেছে। সম্প্রতি চট্টগ্রামের গোয়েন্দা পুলিশের হাতে খুলশী থানার জিইসি মোড় হোটেল লর্ডস ইন থেকে আটক হয় পাকিস্তানী নাগরিকসহ ৫ জঙ্গি। এরপর নাইক্ষ্যংছড়ির ৫০ ব্যাটলিয়নের সদস্যরা মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক জঙ্গি নেতা সালামত উল্লাহর শ্যালক হাফেজ জোনাইদকে গ্রেপ্তার করে। এঘটনায় রোহিঙ্গা জঙ্গিনেতারা ও তাদের অনুসারীরা গ্রেপ্তার আতংকে রয়েছে।

জানা গেছে চট্টগ্রাম শহরে সম্প্রতি গোয়েন্দা পুলিশের হাতে খুলশী থানার জিইসি মোড় হোটেল লর্ডস ইন থেকে আটক হয় ৫ জঙ্গি নেতা। ওই সময় পাকিস্তানের করাচি বাসিন্দা মোঃ আলম (৪৫), মোঃ আমিন (৫০), আব্দুল মজিদ (৩০), কক্সবাজারের জঙ্গিনেতা শেখ সালামত উল্লাহ (৪৫)সহ ৫ জন আটক হয়। কুতুপালং শরণার্থী শিবির ঘুরে জানা যায়, কক্সবাজারের ঝিলিংজা এলাকায় ইসলামিক সেন্টারের নামে জঙ্গি নেতা রোহিঙ্গা বিদ্রোহী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) সামরিক উপদেষ্ঠা সালাউল ইসলামের আর্থিক সহযোগিতায় উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের নয়াপাড়া লেদা ক্যাম্পে ৩ শতাধিক জঙ্গি ক্যাডার মাসিক ভিত্তিক অর্থের বিনিময়ে ইত্তেহাদুল রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠনের নামে বিদেশী বিভিন্ন এনজিও সংস্থার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে। ওই সব জঙ্গিরা রোহিঙ্গাদের অত্যচার নির্যাতনের কথা বলে গতকাল রোববার কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের হাতে আটক হওয়া চট্টগ্রামে বসবাসকারী ইত্তেহাদুল জঙ্গি সংগঠনের নেতা কালাদন প্রেসের মালিক রোহিঙ্গা ভিত্তিক সংবাদ সংস্থার আবু তাহের বহিঃ বিশ্বে ভিডিও চিত্র প্রকাশ করে থাকেন। কুতুপালং ক্যাম্পের জি ব্লকের বসবাসকারী ইত্তেহাদুল জঙ্গি সংগঠনের পরিচালক শীর্ষ জঙ্গি নেতা মৃত ছৈয়দ হোসেনের পুত্র হাফেজ নঈম উল্লাহ, জি ব্লকের মৃত মোহাম্মদ হোসেনের পুত্র হাফেজ জালাল উদ্দিন, একই ব্লকের আবুল কাশেমের পুত্র মৌলানা আবু সালেহ, এফ ব্লকের আলী হোসেনের পুত্র জাফর আহমদ, মৃত লাল মিয়ার পুত্র আবু ছিদ্দিক প্রকাশ জঙ্গি ছিদ্দিক, ই ব্লকের মাষ্টার মনির ও নয়াপাড়া ক্যাম্পের আমান উল্লাহ কক্সবাজার ডিজিটাল হাসপাতালের পাশে ইত্তেহাদুল জঙ্গি সংগঠনের কার্যালয়ে জঙ্গি তৎপরাতা চালিয়ে থাকে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, কুতুপালং আনরেজিষ্ট্রার ক্যাম্পের পুলিশের হাতে আটক হওয়া রোহিঙ্গা মাষ্টার ইকবাল জঙ্গি সংগঠনের অর্থায়নে ৬০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। সে সম্প্রতি বাংলাদেশী পার্সপোট ব্যবহারকরে সৌদি আরবে পাড়ি দিয়ে ছিল। একই ক্যাম্পের হাবিবুর রহমানের ছেলে জঙ্গিনেতা ছৈয়দ আহমদ ১০ দিন আগে বাংলাদেশী পার্সপোট ব্যবহার করে সৌদি আরবে গিয়ে ওখানে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা জঙ্গিনেতাদের সাথে বৈঠক শেষে কুতুপালং ক্যাম্পে ফিরে আসেন। নয়াপাড়া ক্যাম্পের মৌলভী হোছন কুতুপালং এফ ব্লকে বর্তমানে অবস্থান করছে। ইত্তেহাদুল জঙ্গি সংগঠনের নামে দায়িত্বপালন করছেন কুতুপালং ক্যাম্পের জি ব্লকের মৌলভী শফি, আনরেজিষ্ট্রাট মোঃ নূর, মনিরুজ্জামান, মাষ্টার ফখরুল ইসলাম, আনোয়ার সাদেক, টেকনাফ উপজেলার নীলা ইউনিয়নের মৌলভীপাড়া শামশুল আলম, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগার আবু আব্দুল্লাহ, কক্সবাজার পাহাড়তলী এলাকার মৌলভী আবু ছালে, উখিয়া মনখালীর জোবাইর, শাপলাপুরের ডাঃ খাইরুল আমীন, মৌলভী আজিজ, দক্ষিণ নিদানীয়া গ্রামের মৃত মৌলানা শফিকুর রহমানের পুত্র মৌলানা মনির আহমদ। এসব জঙ্গিনেতারা রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত না যেতে উৎসাহ যোগাচ্ছে বলে কুতুপালং এলাকার বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক জানিয়েছেন। সূত্রে জানা যায়, কুতুপালং শরণার্থী শিবির থেকে রিসেটেলম্যান্ট হওয়া অষ্টলিয়ায় অবস্থানকারী খালেদ ও ক্যাম্প থেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য যাওয়া সৌদি আরবে অবস্থানকারী খালেদ ও রোহিঙ্গাদের পিছনে জঙ্গি তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হওয়া কক্সবাজারের রোহিঙ্গা জঙ্গিদের শীর্ষ নেতা শেখ সালামত উল্লাহ রোহিঙ্গাদের আর্থিক মানবেতর সেবার নামে কোটি কোটি হাতিয়ে নিয়ে কোটিপতি হয়েছে। ওইসব নেতারা আটক হওয়ার খবরে উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফ নয়াপাড়া এবং লেদা রোহিঙ্গা বস্তিতে বসবাসকারী জঙ্গি রোহিঙ্গারা গ্রেপ্তার আতংকে ভোগছে।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, গাড়ির মাঠ এলাকা থেকে আটককৃত দুই ব্যক্তি রোহিঙ্গা জঙ্গি কি না জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বলা যাবে।

পাঠকের মতামত

সফরে বিনোদনের পাশাপাশি জীব-বৈচিত্র্য সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছে উখিয়া কলেজ শিক্ষার্থীরা

সফরে বিনোদনের পাশাপাশি জীব-বৈচিত্র্য সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছে উখিয়া কলেজ শিক্ষার্থীরা

পলাশ বড়ুয়া:: উখিয়া কলেজের বার্ষিক শিক্ষা সফর-২০২৫ সম্পন্ন হয়েছে আজ। নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে প্রায় ...