পলাশ বড়ুয়া ॥
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে উপকুলীয় অঞ্চলে অদম্য হয়ে উঠেছে মানব পাচার। এসব অপরাধমুলক কাজের নেপথ্যে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে জালিয়াপালং ইউনিয়নের চোয়াংখালী ও ছেপটখালী, মো: শফিরবিল এলাকার মো: আলমের পুত্র আবু তাহের, ছৈয়দুল হকের পুত্র জয়নাল উদ্দিন, ফজল আহমদের পুত্র মোবারক, কালুর পুত্র রফিক সও:, মিয়া হোছন মাষ্টারের পুত্র বদিউল আলম, এখলাছ মেম্বারের পুত্র মইনুল হক সওদাগর, ছৈয়দ করিমের পুত্র নবী হোছন সওদাগর, বদিউর রহমানের পুত্র নুর ছালাম সওদাগর, নুর পুতুর পুত্র মৌলভী খলিল সিন্ডিকেট করে অবৈধ ভাবে বিগত ২ বৎসর যাবৎ তেল সরবরাহ করায় পাচারকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া একাধিক বার সাগর পথে মানব পাচার কাজে অবৈধ তেল বাণিজ্যের বিষয়ে অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ পরিবেশন করা হলেও প্রশাসন কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে এমন অভিযোগ করে স্থানীয়রা।
এদিকে মনখালী এলাকার ত্রাস, কুখ্যাত সন্ত্রাসী সাগরপথে মালয়েশিয়া মানব পাচারের দালাল আবু বক্কর প্রঃ বক্কর ডাকাত (৩৩) কে ৫ নভেম্বর বিকালে মনখালী সমুদ্র উপকলীয় এলাকা থেকে আটক করেছে ইনানী ফাঁড়ির পুলিশ।
তার বিরুদ্ধে মানবপাচারের ২টি মামলা সহ বহু অপরাধ জনক ঘটনার একাধিক মামলা আছে। ৬ নভেম্বর কুখ্যাত এ পাচারকারীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে ৩দিনের পুলিশ রিমান্ডের প্রার্থনা করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ আলা উদ্দিন। মানব পাচারকারী দলের অন্যতম সদস্য দালাল আবু বক্কর প্রঃ বক্কর ডাকাতের রিমান্ড বাতিল করার জন্য তার সহযোগীরা দফায় দফায় থানায় তদবীর করলেও উখিয়া থানা পুলিশ অপরাধীদের ছাড় দিতে রাজী না থাকায় চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এদিকে মানবপাচারীকারী দলের অন্যতম সদস্য দালাল আবু বক্কর প্রঃ বক্কর ডাকাত গ্রেপ্তার হওয়ার পর মানবপাচারকারীরা আতংকের মধ্যে রয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, দালাল আবু বক্কর প্রঃ বক্কর ডাকাত দীর্ঘ দিন ধরে মনখালী, চোয়াংখালী, শামলাপুর, শাহরীরদ্বীপ, রামুর থোয়াইঙ্গা কাটা, পেচারদ্বীপ ঘাট দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সাগর পথে অবৈধভাবে মানব পাচার করে আসছেন। অভিযোগ উঠছে, তার সহযোগী দালাল হিসাবে মনখালী গ্রামের বশরত আলীর ছেলে মোহাম্মদ হোছন প্রঃ ফেসুক্রুরী (৪৫), মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দু রাজ্জাক (২৮), মোঃ ফয়সাল (৩২), মোহাম্মদ হোছন (৩৫), তোফাইল আহম্মদ, বাহাদুর, কামাল উদ্দিন, গোলাম শরিফের ছেলে নুরুল বশর, চেপটখালীর ফয়েজুর রহমান, আবুল কালাম, মাদারবুনিয়ার শফিকুর রহমানের ছেলে আব্দুল জলিল (২৫), মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে মোজাম্মেল হক, মৃত আব্দুল্যার ছেলে আবু তাহের, মোঃ ইউনুছের স্ত্রী রোকসানা আক্তার, ছালেহ আহম্মদের ছেলে আহম্মদ হোছন, মোঃ জাফরের ছেলে আব্দুল জলিল, মোজাহের মিয়ার ছেলে মোঃ উল্যাহ, চোয়াংখালী গ্রামের, জাহেদুল আলম, বর্মাইয়া হাশেম মাঝি, শামশুল আলমের ছেলে রুবেল, আব্দুল্লাহর ছেলে আব্দুল আজিজ, ছৈয়দুর রহমানের ছেলে আব্দুর রহিম, আবুল কাছিম প্রঃ সুদি কাছিমের ছেলে মনজুর আলম, মোঃ আলমের ছেলে আবু তাহের, মৌলভী বদিউজ্জামানের ছেলে করিম উল্লাহ, আব্দুল মালেকের স্ত্রী মরিয়ম খাতুন, শফি আলমের স্ত্রী রহিমা খাতুন, মোঃ হোছনের ছেলে ভুলু, সোনার পাড়ার নুরুল কবিরের স্ত্রী রেবেকা সুলতানা রেজি, রতœাপালং ইউনিয়নের গয়ালমারা গ্রামের রোস্তম আলী বৈদ্যের ছেলে আনোয়ার ইসলাম প্রঃ আনোয়ার ড্রাইভার ওরপে ডঙ্গী আনোয়ার,
পূর্ব সোনার পাড়া বড় পাড়ার হাজী হোছন আলীর ছেলে আব্দুর রশিদ, সোনার পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের পার্শ্বে বাড়ী বদিউল আলমের ছেলে নুর হোছন, পূর্ব সোনার পাড়া গ্রামের কালা মন্টুর ছেলে নুরুল কবির, নুরুল কবিরের স্ত্রী বেবি আক্তার, সোনাইছড়ি গ্রামের মৃত ইউছুপ আলীর ছেলে রোস্তম আলী, সোনার পাড়া গ্রামের অজি উল্যাহর ছেলে কাউছার আহম্মদ জনি, ওমর সওদাগরের ছেলে আলমগীর হোছন রানা, পশ্চিম সোনাইছড়ি গ্রামের আবু ছৈয়দের ছেলে মাহাদু, নুর মোহাম্মদের ছেলে আহম্মদ শরিফ, মৃত হোছন আলীর ছেলে শাহ আলম, মৃত রশিদ আহম্মদের ছেলে আব্দুল্লাহ, আব্দুল জলিলের ছেলে লাল মাঝি, মৃত মোজাফ্ফর আহম্মদের ছেলে রাসেল, ফজল আহম্মদের ছেলে শামশু আক্তার, উত্তর সোনাইছড়ি গ্রামের হাবিব উল্লাহর ছেলে জয়নাল উদ্দিন জুনু, আমির হামজার ছেলে ছৈয়দ আলম, সুলতান আহম্মদের ছেলে মুজিবুল হক, সোনার পাড়ার জমির আহম্মদ প্রঃ কালা জমির, সোনাইছড়ি গ্রামের শফি আলম, জমির আহম্মদ, আবু ছিদ্দিক, শামশুল আলম সোহাগ, লম্বরী গ্রামের ছৈয়দ আলম তাবাইয়া, বেলাল প্রঃ লাল বেলাল, উখিয়ার রূপপতি গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে জমির মিয়া, গফুর মিয়া (৩৮), কুতুপালং শরনার্থী ক্যাম্পের সেকান্দরের ছেলে আবু ছৈয়দ (২৬), আবু ছিদ্দিক (৩০), চোয়াংখালী গ্রামের শামশুল হকের ছেলে ছলিম উল্যাহ (৩০), জালিয়া পালং ডেইল পাড়া গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে মোঃ আবু তাহের (৩৫), আহম্মদ হোছনের ছেলে জসিম উদ্দিন (২৮), রফিক উল্যাহ (৩০), রহমত উল্যাহ (৩২), সোনার পাড়া গ্রামের মির আহম্মদ প্রঃ মিরু বলির ছেলে মোঃ শফিউল আলম (৩০), নাজির হোছন প্রঃ নাজুর ছেলে জয়নাল আবেদিন (২৮), শামশুল আলমের ছেলে জালাল উদ্দিন (২৮), মৃত কাদের হোছন বৈদ্যর ছেলে নুরুল কবির (৪০), নুরুল কবিরের ছেলে নুরুল আবছার (২০), বশির আহম্মদের ছেলে নজরুল ইসলাম (২৫), মোঃ ইলিয়াছের ছেলে সাগের আলী প্রঃ সাগর (৩০), নুরুল আলম মাঝি মোঃ আলম (৩৫), সোনাইছড়ি গ্রামের মোঃ সোলতান প্রঃ হাতী সোলতানের ছেলে জিয়াউল হক (৩৮), শফি আলম (৩৮), টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে নুর হোছন (২৪), মৃত জমির হোসনের ছেলে মোঃ নাগু (৩৫), নাজির পাড়া গ্রামের মৃত মনি উল্যাহর ছেলে কামাল (৩০), কুতুপালং শরনার্থী ক্যাম্পের আলী আহম্মদের ছেলে দিল মোহাম্মদ (৩৮), আমিন উল্যাহ প্রঃ নাগুর ছেলে মোঃ ফারুক (১৯), শামশুল আলমের ছেলে জোবাইর হোসেন (২০), কক্সবাজার কালুর দোকান এলাকার রোহিঙ্গা মোঃ জুহারের ছেলে মনজুর আহম্মদ (১৮), মৃত কালা মিয়ার ছেলে কাশেম (৪০), জাহিদ হোছনের ছেলে আবুল কালাম (২৬), চট্টগ্রাম কর্ণফুলি চিরার টেক গ্রামের রোহিঙ্গা মোঃ আজিম (৩৬), কুতুপালং শরনার্থী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মৃত ফোরকান আহম্মদের ছেলে রবিউল আলম (২২), মৃত ফারুক আহম্মদের ছেলে ছৈয়দ আমিন (২৭), হাছু মিয়ার ছেলে হামিদ হোসেন (২২), জাফর আহম্মদের ছেলে আরিফ উল্যাহ (২০), শফি উল্যাহর ছেলে ছৈয়দ কাশেম (১৯), কামাল হোছনের ছেলে রশিদ উল্যাহ (২০), উলা মিয়ার ছেলে মোঃ কালু (২০), টেকনাফের শাপলাপুর পুরান পাড়ার শফি উল্যাহর ছেলে আশিক উল্যাহ (২০), শহীদুল্যাহ (৩২), মৃত হাবিব উল্যাহর ছেলে শফি উল্যাহ (৬০), টেকনাফ উপজেলার কাটাবনিয়া গ্রামের ছৈয়দ আহম্মদের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম, মৃত লাল মিয়ার ছেলে মোঃ রফিক, আব্দুল মাজেদের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম, মোজাহের মিয়া, যশোর ঝিকর গাছা গ্রামের আজিজুল (৩৮) নরসিংদীর চর আড়ালিয়া গ্রামের এমরান, মোমেন (৩৫), মাদারবুনিয়ার আব্দুল জলিল, লম্বরী পাড়ার বেলাল প্রঃ লাল বেলাল (৩৫), পশ্চিম সোনার পাড়ার জালাল উদ্দিন, মাগুরা জেলার শালিকা গ্রামের মোঃ ইসমাইলের ছেলে মোঃ হাকিম, রামু থানার খুনিয়া পালং গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে মাহমুদুল হক (৩৫), মোঃ কালুর ছেলে নুরুল কবির বাদশা (৩৮), পশ্চিম সোনাইছড়ি গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে মুজিবুল হক (৪০) সহ শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র“ জড়িত রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচারে জড়িত থাকার অপরাধে মামলা থাকেলেও তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে এসে কৌশলে মানব পাচার করে যাচ্ছে নির্ভিগ্নে।
ইনানী পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মোঃ আলা উদ্দিন জানান, উর্ধবতন কর্মকর্তার নিদের্শে ও সহযোগীতায় মানবপাচারকারী সহ অপরাধীদের গ্রেপ্তারে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এব্যপারে তিনি স্থানীয় জনসাধারনের সহযোগীতা কামনা করেছেন। এছাড়া যারা মানবপাচার কাজে তেল সরবরাহ করছে তাদেরকে তালিকাভুক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ অংসা থোয়াই বলেন, এসব তেল ব্যবসার বিষয়ে মুলত: উপজেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণে থাকে। উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তারপরও বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
পাঠকের মতামত