
আবদুর রাজ্জাক, মহেশখালী::
কক্সবাজারের উপকুলীয় দ্বীপ মহেশখালীর সোনাদিয়া সমুদ্র চ্যানেলে জলদস্যুতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গভীর বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে ফিরে আসার পথে সোনাদিয়া সমুদ্র চ্যানেলে গত এক সপ্তাহ আগে ৫ টি ফিশিং ট্রলার জলদস্যুর শিকার হয়েছ্।ে জলদস্যুরা মাঝি-মাল্লাদের ব্যাপক মারধর করে গুরুতর আহত করে ট্রলারে থাকাা মাছ,জাল ও মিশিনের বিভিন্ন মূল্যবান যন্ত্রাংশ লুট করে নিয়ে গেছে। জলদস্যূদের হামলায় এ পর্যন্ত ২০ জনের অধিক জেলে আহতহয়ে মানবেতর জীবণ যাপন করছে। সোনাদিয়া দ্বীপের জলদস্যু স¤্রাট নাগুবাহিনীর সেকেন্ড ইন কামান্ড জাম্বু জাম্বু জেলা পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর কিছু দিন জলদস্যুতা কমে গেলেও সম্প্রতি ওই বাহিনীর সদস্যরা আবার একত্রিত হয়ে ফের সক্রিয় হয়ে উঠে সাগরে দস্যুতা ,জেলেদের হত্যাসহ নৌকার মাছ ও মালামাল লুটপাট ও টোকেনের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করছে। এই বাহিনীকে প্রশাসনিক ও আথির্ক ভাবে সহায়তা করে আসছেন সোনাদিয়া দ্বীপের অঘোষিত স¤্রাট আবদুল গফুর প্রকাশ নাগু মেম্বার। সে সদরে বসেই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। তার সবুজ সংকেত পেলেই তার ছেলে নকিবের নেতৃর্ত্বে জলদস্যুরা সাগরে দসুত্য আরম্ভ করে। এ পরিস্থিতিতে জলদস্যুদের কাছ থেকে টোকন না নিয়ে সাগরে যেতে ভয় পাচ্ছে জেলেরা। টোকন বিক্রি করে প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা আদায় করে চলেছে ওই জলদস্যুরা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডাকাতদের প্রতিমাসে বোট মালিক ও মাঝিরা ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দিতো। কোনো মাসে চাঁদা দিতে না পারলে নেমে আসতো নির্মম অত্যাচার। আর এ চাঁদার টাকা লেনদেন হতো মোবাইল ব্যাংক বিকাশ-এর মাধ্যমে। ফলে জলদস্যুদের হাতে জেলে পরিবার গুলো সব সময় জিম্মি থাকে।এব্যাপারে একাধিক ট্রলার মালিকরা জানান, নিয়মিত মাসোহারা দিতে অপারগ হলে পরবর্তি এই ট্রলার সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া মাত্রই ওই জলদস্যুদের কবলে পড়ে। জলদস্যুরা ট্রলারের ইঞ্জিন,জাল,আহরন কৃত মাছ,তেল ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি লুট করে নিয়ে যায়। খালি ট্রলারটি ফুটো করে সাগরে ডুবিয়ে দেয়। ফলে কিছু মাঝি মাল্লারা সাতাঁর কেটে তীরে ফিরে আসলেও অনেকে সাগরে প্রান হারায়। অনেক সময় জলদস্যুরা মাঝি মাল্লাদের অস্ত্রের মুখে অপহরন করে জিম্মী করে মুক্তিপন আদায় করে।
স্থানীয় জেলেরা জানান, গত মাস থেকে সাগরে জলদস্যূদের তৎপরতা আশংকা জনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সাগর থেকে ইলিশ মাছ ধরে কুলে ফেরার পথে জলদস্যূদের কবলে পড়তে হয়। তারা জানান, সাগরে জেলেদের কোন নিরাপত্তা নেই। এ কারণে সাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছি না। আরেক জেলে জানান, সাগরে মাছ ধরে কোন রকম সংসার চালাতাম। কিন্তু জলদস্যূদের ভয়ে সাগরে মাছ ধরতে যেতে পাচ্ছি না। তিনি আরো জানান,এলাকায় অন্য কোন ছোটখাটো ব্যবসা করার মতো নেই কোন সামর্থ্য। ফলে ৯ সদস্যের পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধহারে মানবেতর জীবন যাপন করছি। সম্প্রতি সাগরে জলদস্যূরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। এতে প্রতিনিয়ত সাগর থেকে ফিশিং বোট কুলে ফেরারপথে জলদস্যূদের কবলে পড়ে স্বর্বশ্ব হারাচ্ছে। জলদস্যূদের হামলায় নিহত ও আহত হচ্ছে ফিশিং বোটের শ্রমিকরা। এনিয়ে জেলেদের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে।
এব্যাপারে মহেশখালী থানার অফিসার জানান, পুলিশ ইতিমধ্যে অভিযান চালিয়ে জলদস্যু সর্দার নাগুবাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড জাম্বুডাকাতসহ একাধিক জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে জোর তৎপরতা চলছে। জলদস্যূতা বন্ধে মহেশখালী চ্যানেলের আশে পাশে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
এব্যাপারে এলাকাবাসী অবিলম্বে^ সাগরে জলদস্যূতা বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট জোরদাবি জানান।
পাঠকের মতামত