পেকুয়া প্রতিনিধি •
কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদারের বিরুদ্ধে অনিয়ম দূর্নীতি ও বেপরোয়া ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে তহশিলদারের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, দুদকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন উচ্চ দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয়রা।
লিখিত অভিযোগের সুত্রে জানা গেছে, বারবাকিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী মোহাম্মদ হোছন এর স্ত্রী বারবাকিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোহসেনা আক্তার। তিনি স্বামীর দাপটে বারবাকিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগদান করার পর থেকে শুরু করেছেন বেপরেয়া ঘুষ বাণিজ্য ও সেবা প্রার্থীদের চরমভাবে হয়রানী। সেবা প্রার্থীদের জিম্মি করে নানান অজুহাতে ঘুষের টাকা আদায় করেন। তহশিলদার মোহসেনা আক্তার ভূমি উন্নয়ন করসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজের জন্য ভূমি অফিসে গেলে সেবাপ্রার্থীদের সাথে খারাপ আচারণও করেন। বারবাকিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগদান করার পর কাউকে মানুষ মনে করছে না তহশিলদার মোহসেনা। আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হোছন এর স্ত্রী ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা মোহসেনা আক্তার সাবেক এমপি জাফর আলম এর আমলে চকরিয়া উপজেলা সদর ভূমি অফিসে বেশ দাপটের সাথে চাকরি করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকাকালে মোহসেনা আক্তার এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগ এর কতিপয় নেতার মাধ্যমে তদবির করে চকরিয়া উপজেলা সদর ভূমি অফিস হতে গত ৮/১১/২০২৩ইংরেজী তারিখে বদলি হয়ে নিজ উপজেলার নিজ ইউনিয়ন ভূমি অফিস বারবাকিয়ায় আসেন।
বারবাকিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ও সেবাপ্রার্থী মো: ইউনুচ ও রেজাউল করিম মানিক জানান, বারবাকিয়া ভূমি অফিসে নামজারী জমাভাগ খতিয়ান সৃজন করতে সেবা প্রার্থীরা আসলে ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোহসেনা আক্তার নামজারি জমাভাগ ফাইলে জমির পরিমাণ ও দলিল সংখ্যা নির্ধারণ এবং দলিলে উল্লেখিত টাকার উপর লাখে ২হাজার টাকা নির্ধারণ করে যত লাখ টাকা হয়, তার চার গুন হারে টাকা দাবী করে। তার দাবিকৃত টাকা না দিলে ফাইলে বিভিন্ন অজুহাত সৃষ্টি করে এবং তার স্বামী মোহাম্মদ হোছন এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়।
জানা যায়, জমি পরিমাণ নির্ধারণ ও দলিল সংখ্যা নির্ধারণ করে টাকা দাবী করে ফাইলে স্বাক্ষর করেন। টাকা না দিলে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ফাইল খারিজ করে দেন। তার স্বামীর ভয়ে অনেকে মুখ খুলে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। যেখানে সরকার ৭কার্যদিবসের মধ্যে ইউনিয়ন ভূমি অফিস হতে ফাইল উপজেলা ভূমি অফিসে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন সেখানে এক মাসেও ফাইল ছাড়েন না ঘুষখোর তহশিলদার মোহসেনা। এছাড়া কোন সেবাপ্রার্থী নামজারী খতিয়ানের বিরুদ্ধে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিনক আপত্তি আবেদন করে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তদন্তের জন্য নিয়ে আসলে টাকা ছাড়া রিপোর্ট দেয়না।
স্থানীয়রা জানান, মোহসেনা আক্তার বারবাকিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগদান করার পর থেকে স্বামীর ক্ষমতার দাপটে লাখ লাখ টাকা সেবা প্রার্থীদের থেকে ঘুষ নিয়েছে। ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করতে গেলে মোট অংকের টাকার হিসাব দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট জমির মালিকের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বারবাকিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) মোহসেনা আক্তার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অফিসে যোগদান করার পর থেকে তিনি কোন সেবা প্রার্থীকে হয়রানী করেননি। একটি মহল তার বিরুদ্ধে বদনাম রটাচ্ছেন।
পাঠকের মতামত