বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২৪ ১১:২০ এএম

বাবাকে না পেয়ে ১৪ বছরের এক শিশুকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ এনে তার প্রত্যাহার চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঢাবিতে পড়ুয়া উখিয়া-টেকনাফের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব উখিয়া-টেকনাফ (ডুসাট)’ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে ডুসাটের সভাপতি জয়নাল আবেদিন, সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন, সদস্য ফারজানা আক্তার আরজু, নুরুল ইসলাম নাহিদ, মিজানুর রহমান এবং ডুসাটের সাবেক সভাপতি মোর্তাজা হোসেন শাফি বক্তব্য দেন।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘বাবাকে না পেয়ে ১৪ বছর বয়সী সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও সুষ্ঠু তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে টেকনাফ থানার ওসির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এবং তদন্তের স্বার্থে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’

জয়নাল আরও বলেন, ‘আমরা আর শেখ হাসিনা আমলের ওসি প্রদীপের (সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি) যুগে ফিরে যেতে চাই না। আমরা উখিয়া ও টেকনাফের মানুষের নিরাপত্তা চাই।’

সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘উখিয়া-টেকনাফ প্রশাসনের মাধ্যমে বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও পাহাড়, বন, নদী, খাল ও সরকারি খাস জমি দখলকারীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। টেকনাফে নাফ নদীর জেলের সমস্যার সমাধান করতে হবে।’

মানববন্ধনে তারা ১০ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- 

১। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফিকে অস্ত্র দিয়ে গ্রেফতারের বিষয়টি পুনরায় তদন্ত করতে হবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে তাকে মুক্তি দিতে হবে।

২। টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তদন্তের স্বার্থে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে প্রত্যাহার করতে হবে।

৩। উখিয়া ও টেকনাফে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি এবং কোস্টগার্ডে সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হবে।

৪। সন্ত্রাস, মাদক, অপহরণ এবং চাঁদাবাজি নির্মূলে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

৫। প্রশাসনের কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে হবে এবং একজন অফিসার এক বছরের বেশি যেন দায়িত্বে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

৬। উখিয়া ও টেকনাফে পূর্বে নিয়োজিত প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

৭। উখিয়া ও টেকনাফের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে।

৮। প্রশাসনের কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে দ্রুততম সময়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

৯। রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধান করতে হবে।

১০। কাউন্সিলর একরামসহ বিচারবহির্ভূত সব হত্যাকাণ্ডের তদন্তের উদ্যোগ নিতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর কক্সবাজারের টেকনাফে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে গ্রেফতারের অভিযোগ ওঠে টেকনাফ থানার ওসি গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে। আদালত ওই শিশুর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাফি উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান (২) রেজাউল করিমের ছেলে এবং হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এই ঘটনায় তার বাবাকেও আসামি করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত

টেকনাফে ভূমিদস্যুর হামলায় পুলিশ,বনবিভাগের কর্মকর্তা ও সংবাদিকসহ আহত-৮

         কক্সবাজারের টেকনাফে উত্তেজিত ভূমিদস্যুদের হামলায় পুলিশ কর্মকর্তা ও বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা এবং সংবাদকর্মীসহ ৮ জন ...

উখিয়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১০ ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ!

          কক্সবাজারের উখিয়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১০ ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ...

আজ প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরার দিন

         ‘হাজারটা অর্থপূর্ণ শব্দের চেয়ে একটি শক্ত আলিঙ্গন অনেক বেশি শক্তিশালী’। বিখ্যাত মার্কিন লেখক অ্যান হুডের ...

পিলখানা হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে স্বাধীন কমিশন গঠন

         ২০০৯ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তর রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে কমিশন গঠন ...