মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া:
শাহাদাত হোসেন সামির (১১) ও মো.আল ফয়েজ মিশকাত (১১)। তারা দু’জন পরস্পর বন্ধু। স্কুলে যাওয়া, খেলাধুলা থেকে শুরু করে সব কিছুই একসাথে করতো। কেউ কাউকে ফেলে খাবারও খেতো না। তাই বলে পৃথিবী থেকেও একসাথে বিদায় নেমে কেউ কোনদিন কল্পনাও করেনি। গোসল করতে গিয়ে পুকুরে ডুবে এক সাথেই মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে সামির ও মিশকাত নামের দুই বন্ধুর।
শনিবার (২নভেম্বর) দুপুরে হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘেটেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের অল্যার বাপের পাড়া এলাকায়। নিহত শাহাদাত হোসেন সামির ওই এলাকার স্বপন মিয়ার ছেলে ও স্থানীয় দাখিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র এবং মো.আল ফয়েজ মিশকাত একই এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে ও সাহারবিল সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র।অল্যার বাপের পাড়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা নুরুল কাদের জানান, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে দুই শিশু মসজিদের পুকুরে গোসল করতে নামে। পরে জোহরের আযান হলে মুসল্লিরা অযু করতে পুকুরে যায়। পুকুরের ঘাটে কাপড় দেখা গেলেও কাউকে দেখা না যাওয়ায় তাদের সন্দেহ হয়। পরে ডুবন্ত অবস্থায় সামির নামের শিশুর মাথা দেখতে পায়। এসময় তাকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সামিরকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আরো এক শিশুর সন্ধান না পাওয়ায় একঘন্টা পর পুকুরে জাল ফেলে মিশকাতের লাশ উদ্ধার করা হয়।পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারহানা আফরিন মুন্না পানিতে ডুবে দুই শিশু মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সামিরের মা-বাবা দুইজনই চট্টগ্রামে গার্মেন্ট এ চাকুরী করতো। সে সুবাদে নানীর কাছে থেকে সে মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতো। নানীকেই সে মা সম্মোধন করতো। তাদের মা-বাবাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।এদিকে, দুই শিশু পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দুই পরিবারে চলছে আহাজারী। ঘটনাটি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। প্রশাসনের অনুমতিক্রমে দুই শিশুর দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রকাশিত:
নভেম্বর ২, ২০২৪ ৮:১৩ পিএম
পাঠকের মতামত