টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে সীমান্তের টেকনাফ উপজেলায় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে বিকাল থেকে ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়। এর ফলে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে যাত্রীবাহী সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয় স্থানীয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ইতোমধ্যে টেকনাফে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এর ফলে টেকনাফ এবং সেন্টমার্টিন থেকে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া শাহপরীর দ্বীপের পাশাপাশি সেন্টমার্টিনকে গুরুত্ব দিয়ে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলার সব আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে ঘূর্ণিঝড় দানা মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে টেকনাফ উপকূলীয় উপজেলা সকাল থেকেই মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বিকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়া শুরু হয়। এর ফলে আবহাওয়া অফিস থেকে মোংলা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, সীমান্তের নাফ নদ ও বঙ্গোপসাগরে অবস্থানের কারণে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে উপজেলায় শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনের মানুষ দুশ্চিন্তায় আছেন। কেননা, সম্প্রতি জোয়ারের পানি বৃদ্ধির কারণে ঢেউয়ের আঘাতে শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম বেড়িবাঁধের সিসি ব্লকগুলো ধসে পড়ছে। তার ওপর ঘূর্ণিঝড় দানার ভয়ে আছেন দ্বীপের হাজারো মানুষ। এ ছাড়া সাগরের মাঝখানে বসতি হওয়ায় সেন্টমার্টিনের মানুষের মাঝে ভয়ভীতি কাজ করছে। যদিও ২০২২ সালের জুনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধানে ১৫১ কোটি টাকায় ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মিত হয় শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম ও দক্ষিণ পাশে।
শাহপরীরদ্বীপের বাসিন্দা জাবেদ নজির বলেন, ‘সম্প্রতি জোয়ারের পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি ঢেউয়ের আঘাতে বেড়িবাঁধের ব্লক ধসে পড়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে দ্বীপের মানুষজন আতঙ্কে আছেন। বিশেষ করে দ্বীপের বেড়িবাঁধের আশপাশে থাকা বসবাসকারীরা খুব বেশি ভয়ভীতির মধ্য রয়েছেন।’
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা জিয়া বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বাতাস শুরু হয়েছে। তবে এখনও খুব বেশি প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। আশা করি আমরা নিরাপদে আছি।’
এ ব্যাপারে সেন্টমার্টিন ইউপি সদস্য সৈয়দ আলম বলেন, ‘দ্বীপে ঘূর্ণিঝড় দানার তেমন কোনও প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। তবু সাগরের বুকে বসতি হওয়ায় আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।’
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথের বোট মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে এই রুটের সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।’
#####
পাঠকের মতামত