সাঈদ পান্থ, বরিশাল
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, দেশে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠাতা করতে হবে। সামাজিক ন্যায়বিচার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। আইনজীবীদের নিষ্ঠা এবং সততার সহিত কাজ করতে হবে। ন্যায় বিচার প্রচেষ্টার কোন বিকল্প নেই। আদালতকে সম্মান করতে হবে। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি যাতে নষ্ট না হয় খেয়াল রাখতে হবে। বরিশালে শতভাগ মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এটা একটা আনন্দের সংবাদ। নতুন বাংলাদেশের পথে আমরা হাঁটছি, নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। ইতিমধ্যে বরিশালে ৮৩৬ টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। সমাজের অসহায় মানুষকে আইনি সেবা দিতে হবে। তিনি বলেন, যাদের কারণে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি তাদের স্মরণ করতে হবে। আন্দোলনের সময় যারা মারা গেছেন, তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করুন। শোষণ মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, তাদেরও সম্মান করতে হবে। গতকাল সন্ধ্যায় বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির এনএক্স ভবনে জেলা আইনজীবী সমিতি কর্তৃক আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম কবির বাদলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা ও দায়রা শেখ মোহাম্মদ আবু তাহের, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম খান মোহাম্মদ মোরশেদ। এ সময় বরিশালের সকল আদালতের বিচারকগণ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে জেলা ও দায়রা জজ আদালতসহ অন্যান্য আদালত পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান বরিশাল জেলা ও দায়রা জজসহ অন্য বিচারকরা। পরে তিনি বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ, বরিশাল মেট্রোপলিটন আদালতসহ বিভিন্ন আদালতের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরে বিচার কার্যক্রম এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি আদালত চত্বরে বিচারকদের সঙ্গে নিয়ে গাছের চারা রোপণ করেন। প্রধান বিচারপতির আগমন উপলক্ষ্যে আদালতপাড়ায় ছিলো উৎসবের আমেজ। দিনভর আইনজীবী সমিতির সদস্যসহ সাধারণ আইন আইনজীবীদের ভিড় ছিলো লক্ষ্যণীয়। সন্ধ্যায় তার প্রাক্তণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এর আগে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বরিশাল ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে বলেন, শিক্ষার্থীদের বিচার ব্যবস্থায় আধুনিক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও তার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। বিচার প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক করতে ভূমিকা রাখবে। ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দিতে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। নেতৃত্বের মূল লক্ষ্য ক্ষমতার চর্চা নয়। বরং সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে অন্যের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করার মানসিকতা ঠিক করে নেতৃত্ব দিতে হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, বিভিন্ন সময় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা জাতীয় জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার মাধ্যমে এ প্রজন্মের তরুণ শিক্ষার্থীদের নিয়ত অনুপ্রাণিত করে চলেছেন। ক্যাডেট কলেজের শিক্ষাক্রম ও পাঠদানের ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্যের অবতারণা করে তিনি তরুণ শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, নেতৃত্বের মূল লক্ষ্য ক্ষমতার চর্চা নয় বরং সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে অন্যের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করার মানসিকতাই সঠিক নেতৃত্বের পরিচায়ক। তাই ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থীসহ দেশের সব শিক্ষার্থীকে শৃঙ্খলা, অধ্যবসায় ও একাগ্রতার নিবিড় চর্চার মাধ্যমে সমাজের সব পর্যায়ে সমতা প্রতিষ্ঠা ও মানুষের অধিকার রক্ষায় নিজেদের নিয়োজিত করতে হবে। সুদক্ষ নেতৃত্ব তৈরিতে বরিশাল ক্যাডেট কলেজের বিগত দিনের সফলতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। এ কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের অগ্রজদের দেখানো পথ ধরে দেশ ও সমাজের সেবায় নিজেদের প্রস্তুত করবে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি আধুনিকতার অভিঘাতে আমরা জাতীয় অগ্রগতির পথে যে সব প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছি। দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব দিতে শিক্ষার্থীদের নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আইনের শাসন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করে তিনি আরও বলেন, দেশের বিচার ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের অভিগম্যতা নিশ্চিতকল্পে ই-জুডিসিয়ারি বাস্তবায়নের বাস্তব প্রয়োজন। আগামী দিনগুলোতে আমাদের শিক্ষার্থীদের বিচার ব্যবস্থায় আধুনিক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও তার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। বিচার প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক করতে ভূমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বরিশাল ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল রায়হান আহমেদ পিএসসি, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. হাসানুজ্জামান, রেজিস্ট্রার (বিচার) এসকেএম তোফায়েল হাসান, স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন ও প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব শরীফুল আলম ভূঁঞা।
প্রকাশিত:
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪ ১০:৩৩ পিএম
কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী কেয়ারী সিন্দাবাদ নামক একটি জাহাজকে চলাচলের অনুমতি দিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। ...
পাঠকের মতামত