শহিদুল ইসলাম ও আলা উদ্দিন।।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহ্জাহান বলেছেন, বিরোধী দল থেকে শুরু করে শত্রু-মিত্র ও দেশের সব স্তরের মানুষের কাছে প্রিয় আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান। দলমতনির্বিশেষে প্রায় সকল ধর্মের মানুষ তাকে পছন্দ করেন। আগামীতে তার নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে দেশের জনগণ।
জামায়াত আমিরের সমসাময়িক কার্যক্রম ও তার প্রতি দেশের মানুষের ভালোবাসা প্রদর্শনে অভিভূত হয়ে উখিয়ায় অনুষ্ঠিত জামায়াতের উপজেলা কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে উখিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হাজার হাজার কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতিতে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
উখিয়ার কৃতী সন্তান মাওলানা মুহাম্মদ শাহ্জাহান বলেন, প্রায় দেড় যুগ পর তারা মুক্ত বাতাসে স্বাধীনভাবে সভা-সমাবেশ করতে পারছেন। তারা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মিথ্যা মামলা, জেল-জুলুম, নির্যাতন ও নিপীড়ন সহ্য করে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে নতুন করে এখন টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত জামায়াতের পক্ষে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে পতন হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপারে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপ্রধান শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে এখন তার আসল বাড়ি ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে বসেও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র লিপ্ত হচ্ছেন। তার এমপি-মন্ত্রীরা দলবেঁধে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব উল্লেখ করে জামায়াতের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা আছে। রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে সরকার সঠিক সময়ে নির্বাচন দেবে বলে আশা করেন তিনি। এ সময় জামায়াতের দ্রুত নির্বাচনের তাড়া নেই বলে মন্তব্য করেন এই কেন্দ্রীয় নেতা।
উখিয়া উপজেলা শাখার আমির মাওলানা আবুল ফজলের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী ও সাবেক জেলা সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ্জালাল চৌধুরী। বক্তারা দেশ পুনর্গঠনে জামায়াত-শিবিরের কর্মী-সমর্থকদেরকে ঐক্য ধরে রেখে ইনসাফভিত্তিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানান। এ সময় বক্তারা জামায়াতের প্রয়াত ও শহিদ নেতাদের গভীরভাবে স্মরণ করেন। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ধন্যবাদ জানান দেশপ্রেমিক সাংবাদিক ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদেরকে।
যৌথভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জামায়াতের উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা সুলতান আহমদ ও প্রচার সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রহিম।
এর আগে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর প্রধান সড়কে আবেগ-উচ্ছ্বাসের সঙ্গে শোডাউন ও মিছিল বের করেন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা। পরে দলে দলে কর্মী সম্মেলনে যোগ দিতে থাকেন তারা।
ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায় ও দূরদূরান্ত থেকে গাড়ির বহরে বহরে দায়িত্বশীল জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীর পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সের সমর্থকেরা সম্মেলনে অংশ নেন। এ সময় স্বেচ্ছাসেবীরা সুশৃঙ্খলভাবে সম্মেলনে দায়িত্ব পালন করেন। সম্মেলন চলাকালে উখিয়া স্টেশনস্থ কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে যানজট নিরসনে দায়িত্ব পালন করেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা।এ ছাড়া জামায়াত-শিবিরের জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের আমির-সেক্রিটারি ও বিভিন্ন দায়িত্বশীল পর্যায়ের নেতারা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
পাঠকের মতামত