প্রবল বৃষ্টি এবং উজান থেকে আসা পানির স্রোতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং নিখোঁজ রয়েছে আর ও ২ জন।
অতি বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে বাঁকখালী নদীসহ বিভিন্ন ছরা-খালের পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে এবং পাহাড় ধ্বসে বিশটি ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ, পানি বন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দশ হাজার পরিবার। আঞ্চলিক ও গ্রামীন সড়ক ডুবে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে।
পানির স্রোতে ভেসে যাওয়া চারজনের মধ্যে দুই জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তিরা হলেন গর্জনিয়া ইউনিয়নের পূর্ব জুমছড়ি এলাকার ছৈয়দ হোসেনের ছেলে আমজাদ হোসেন (২২)এবং ঈদগড় ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বৈদ্য পাড়া এলাকার মৃত লইগ্যা রাখাইন এর ছেলে চচিং রাখাইন (৫৫)। নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন গর্জনিয়া ইউনিয়নের ছালেহ আহমদের ছেলে রবিউল আলম (৩৫) এবং ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের লম্বরিপাড়া এলাকার নুরুল কবিরের ছেলে মো. জুনাইদ (১০)।
গর্জনিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আবুল কাশেম জানান, স্থানীয় পূর্ব জোমছড়ি এলাকার ছৈয়দ হোসেনের ছেলে সিএনজি ড্রাইভার আমজাদ হোসেন সকাল এগারটার দিকে জুমছড়ি এলাকার কবরস্থান রোড দিয়ে যাওয়ার সময় পানির স্রোতে তলিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুজির পর স্থানীয়রা বিকাল পাঁচটার দিকে একশ গজ দূর থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। তিনি জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি নিয়ে রাত আটটার দিকে আমজাদ হোসেনের নামাজে জানাজা সম্পন্ন করে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় ছালেহ আহমদের ছেলে রবিউল আলমের ছেলে দিনমজুর রবিউল হাছান বাঁকখালী নদীর উজানে কাজ করতে যাওয়ার সময় স্রোতের পানিতে ভেসে যায়। তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে ইউপি সদস্য জানান।
ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দিদারুল আলম জানান, মো. জুনাইদ এলাকাবাসীর সাথে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাহাড়ি ঢলে বাঁকখালী নদীর পানির স্রোতে উজান থেকে ভেসে আসা লাকড়ি ধরছিল। সকাল এগারটার দিকে নদীর পানিতে ঝাঁপ দিয়ে একটা কাঠের গুঁড়ি ধরতে গিয়ে মো. জুনাইদকে ভেসে যেতে দেখে স্থানীয় ইব্রাহিম সওদাগরের ছেলে মো. আরিফ উল্লাহ (১৮) ও নদীতে ঝাঁপ দিয়ে তাকে বাঁচাতে যায়। পরে স্থানীয়রা আরিফ উল্লাহকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করতে পারলেও জুনাইদকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। মো. আরিফকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর বর্তমানে সুস্থ আছেন বলে ইউপি সদস্য জানান।
ঈদগড়ের মৃত চচিং রাখাইনের মেয়ে লাইচিং রাখাইন জানান, ঈদগড় ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড বৈদ্যপাড়া এলাকার আদিন্যা খাল নামক নদী পার হয়ে সকালে মন্দিরে যাওয়ার সময় নদীর পানিতে ভেসে যায়। স্থানীয়রা তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
এছাড়া প্রবল বর্ষনে পাহাড় ধ্বসে কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের টিলাপাড়া এলাকার নূর আহমদের পুত্র হতদরিদ্র জাফর আলমের বাড়ি ভেঙ্গে গেছে। আহত হয়েছে জাফর আলমের তিন মেয়ে সহ ৫ জন। এক মেয়েকে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, উপজেলার অধিকাংশ নিন্মাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক ঘরবারি বিধ্বস্থ হয়েছে। মৃতদের কবরস্থ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছ। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসন থেকে ১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। দুর্গতদের মাঝে এসব চাল বিতরণ করা হবে। এছাড়াও চিড়া,গুড়, স্যালাইনসহ শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে।##
পাঠকের মতামত