নিজস্ব প্রতিবেদক।কক্সবাজারের উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের দুই নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মমতাজুল হকের পরিবার।এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, সালাহউদ্দিন মেম্বার তাকে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে এবং রাস্তাঘাটে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিচ্ছেন। এতে তিনি ও তাঁর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
শনিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় উখিয়ার কোটবাজারস্থ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ভুক্তভোগী মাওলানা মমতাজুল হক উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের জাদিমোরা গ্রামের মৃত নুর আহমদের ছেলে।
এ সময় লিখিত বক্তব্যে মাওলানা মমতাজুল হক বলেন-“সালাহউদ্দিন মেম্বারের কারনে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছি ও প্রতিনিয়ত মৃত্যুর হুমকিতে জীবন যাপন করছি। আমার পৈত্রিক সম্পদের জায়গায় একটি ভাড়া বাসা নির্মাণ করি। এই বাসা-ভাড়া দিয়ে আমি আমার মধ্যবিত্ত জীবন অতিবাহিত করছি। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে সালাহউদ্দিন আমাকে ভাড়ার টাকা থেকে চাঁদা দাবি করে আসছে। প্রতি মাসে অথবা এককালিন ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে সে আমাকে ও আমার পরিবারকে মৃত্যুর হুমকি দেয়। প্রতিদিন আমার বাসার সামনে এসে আমাকে গালি-গালাজ করে ও আমার ভাড়াটিয়াকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়। টাকা ৫০ লক্ষ যতদিন না দিই ততদিন আমাকে উখিয়া না আসতে নিষেধ করছে। যতদিন যাচ্ছে আমার জীবন অতিষ্ট করে তুলেছে। আমাকে অনেকবার পথে আটকিয়ে চাঁদার টাকা কবে দিবি বলে কলার ধরে ও শারিরীকভাবে হেনস্থা করে। আমি একজন বয়স্ক মানুষ। আমি তাকে প্রতিবার অনেক আকুতি মিনতি করেও বাঁচতে পারছি না।
তারই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন বিগত ৩০ জুন সকাল ১১ টায় সালাহউদ্দিন মেম্বার ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী আমার খালি জমি ও ভাড়া বাসায় গিয়ে ভাড়াটিয়াগণকে বাসা খালি করার জন্য হুমকি দেয়। খবর পেয়ে আমি পৌছালে আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। পরে সালাহউদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে লাথি, কিল, ঘুষি মেরে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করতে চাইলে পাশ থেকে লোক এসে আমাকে উদ্ধার করেন। তিনি চাঁদা না পেয়ে আমার ভাড়া বাসার ভাংচুর করে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করে।
এছাড়াও তিনি উখিয়া নুর আলম সদাগরের জায়গা ও হোটেল প্রকাশ্যে ভাংচুর করে ও দখল করে নেন। তার মামলা চলমান। তাছাড়া একই এলাকার মোজাহের মেম্বারের ছেলে হারুনকে ফিল্মি স্টাইলে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল এবং হারুনের বউ বাদি হয়ে মামলা করে মামলা নং ৫৪২০, বাদী রুমা আকতার, স্বামী- হারুন, উখিয়া, কক্সবাজার যা এখন বিচারাধীন।
এছাড়াও তার নামে আরো অনেকগুলি মামলা আছে তারমধ্যে মামলা নং- ২১৪-২০২৩ বাদী হামিদা বেগম, বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন, মামলা নং- সি.আর- ৫০৭-২০২৩ বাদী তোফাজ্জেল হোছন (বিচার ফাইল), মামলা নং- ২০২-২০২২ বাদী আবুল হাসান। এছাড়া ও চাঁদাবাজি, রাহাজানি, ভূমি দখল, লুটপাট, সালাহউদ্দিন মেম্বারের নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে উঠেছে।
রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তিনি ও তার পরিবার রাজাপালং এর জন্য মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। তার পালিত গুন্ডা বাহিনী এলাকায় কাউকে শান্তিতে বসবাস করতে দিচ্ছে না। কেউ তার সাথে দ্বিমত পোষণ করলে বিএনপি-জামায়ত ট্যাগ দিয়ে লিস্ট করে থানায় জমা দিয়ে চৌদ্দশিখের জেলে ঢুকিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়।
এমত অবস্থায় আমি ও আমার পরিবার আইনের সহায়তা চাই। আমি কোর্টে মামলা করেছি। তার সুষ্ঠু তদন্ত করে মামলার রিপোর্ট দেওয়ার জন্য ওসি উখিয়াকে আকুল আবেদন জানাচ্ছি। এই রকম চাঁদাবাজ কে যদি আইনের আওতায় আনা না হয় তাহলে সে আমাকে ও আমার পরিবারকে ও আরো সাধারণ মানুষকে এইভাবে চাঁদা দাবি করে জায়গা দখল করে হামলা করে একদিন রাজাপালং ইউনিয়নকে রক্তে রঞ্জিত করে ফেলবে।
তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের কাছে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ, ডিবি, র্যাব ও প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।”
এ ব্যাপারে রাজাপালং ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সালা উদ্দিন জমি জবর-দখল ও মারধরের কথা অস্বীকার করেন।
#######
পাঠকের মতামত