আলাউদ্দিন, উখিয়া :
উখিয়া উপজেলার ৪নং রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতীক বরাদ্দ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে চার প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করে উপজেলা নির্বাচন অফিস৷
প্রতীক বরাদ্দের সময় ঘোড়া প্রতীকের জন্য লটারি হয় দুই তরুণ প্রার্থী সাদমান জামি চৌধুরী ও মকবুল হোসাইন মিথুনের মধ্যে। উভয়ে ঘোড়া প্রতীক চেয়েছিলেন। কিন্তু লটারি পদ্ধতিতে সাদমান জামি চৌধুরী তার ‘পারিবারিক মার্কা’-খ্যাত ঘোড়া প্রতীক হেরে বসেন মকবুল হোসাইন মিথুনের কাছে। পরে সাদমান জামি চৌধুরী বেছে নেন চশমা প্রতীক। অপর দুই প্রার্থীর মধ্যে ফরিদ আলম (কন্ট্রাক্টর) বেছে নেন মোটরসাইকেল ও আব্দুল মালেক চৌধুরী বেছে নেন টেলিফোন প্রতীক। প্রতীক পেয়েই প্রচারণায় নেমেছেন তারা।
পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে আইনি জটিলতায় অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরীর প্রতীক এখনো নিশ্চিত হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা।
হুমায়ুন কবির চৌধুরী আইনি জটিলতায় পড়েন জেলা নির্বাচন অফিস কর্তৃক তার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণার পর। গত মঙ্গলবার (৯ জুলাই) আপিল শোনানিতে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলেও তড়িৎ গতিতে গিয়ে হাইকোর্টে রিট করে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি। এক আদেশের মাধ্যমে তার প্রার্থিতা পুনর্বহাল রাখে হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, হুমায়ুন কবির চৌধুরীর প্রতীক নিশ্চিত হয়নি। তিনি এখনো হাইকোর্টের রায়ের কপি জমা দেননি। রায়ের কপি জমা দেওয়ার পর সেটি নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হবে ভেরিফাইয়ের জন্য। বাকিটা এর পরে জানা যাবে।
তবে চূড়ান্তভাবে প্রার্থিতা ফিরে পেলে হুমায়ুন কবির চৌধুরী তাদের ‘পারিবারিক মার্কা’-খ্যাত আনারস প্রতীক সয়ংক্রিয়ভাবে পেয়ে যাবেন। এই প্রতীক অন্যরা নেননি।
এদিকে এক ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে ফের আপিল করবে সাদমান জামি চৌধুরী।
তার অভিযোগ, উখিয়া বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যাপক পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার প্রক্রিয়া বিধিসম্মত হয়নি হুমায়ুন কবির চৌধুরীর। এ ছাড়া, সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে তিনি এখনো বেতন গ্রহণ করেন বলে দাবি তোলা হয়।
মূলত, ভোটের লড়াইয়ের আগে এই আইনি লড়াই বেঁধেছে উখিয়ার দুই রাজনৈতিক পরিবারের মধ্যে।
হুমায়ুনের পরিবার উখিয়ার জনপদে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছে। অপরদিকে, জামির পরিবার বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত।
সংসদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহ্য, মর্যাদা ও ভোটের লড়াই চলে আসছে এ দুই পরিবারের মাঝে। এই ধারা এখনো অব্যাহত।
এদিকে, এক এক করে নির্বাচনের ধাপ যতই অতিক্রম হচ্ছে, ততই সাধারণ মানুষের মাঝে উৎসাহ বাড়ছে। দেখা যাচ্ছে, চায়ের চুমুকে চুমুকে ভোটারদের মুখে নির্বাচনী আলাপের ফুলঝুরি।
গেল ২৯ মে ষষ্ঠ উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়ান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। এর পরেই চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হয়ে পড়লে গত ২৭ জুন সেখানে উপনির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাজাপালং ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৪২৫৯৮ জন। এর মধ্যে ২২১৮৭ জন পুরুষ ও ২০৪১১ জন মহিলা ভোটার। ১৫ কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দ্বারা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৭ জুলাই।
পাঠকের মতামত