আব্দুস সালাম,টেকনাফ
মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দুই সদস্যসহ ৩৩ জন ট্রলারে করে যাওয়ার পথে ইঞ্জিন বিকল হয়ে সেন্টমার্টিনদ্বীপে ভেসে এসেছেন।তাঁদের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা হেফাজতে নিয়ে সেন্ট মার্টিনের উত্তর সৈকতের একটি হোটেলে রেখেছেন। শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।
ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ২টা ৪৫ মিনিটে মিয়ানমারের নাগরিকদের বহনকারী ট্রলারটি সেন্ট মার্টিনের উত্তর পাশের সৈকতে ভেড়ানো হলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ড সদস্যরা তাঁদের হেফাজতে নিয়ে ডিমাস প্যারাডাইস নামের একটি হোটেলে রাখেন।
এ ব্যাপারে জানতে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও এ বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি ও দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে আবারও তুমুল লড়াই শুরু হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। টানা পাঁচদিন পরিস্থিতি শান্ত থাকার পর বুধবার রাত থেকে আবারও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। হয়তো নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বিজিপির দুই সদস্যসহ মিয়ানমারের নাগরিকেরা পালিয়ে যাচ্ছিলেন। ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হলে ঝড়ের কবলে পড়ে ভাসতে ভাসতে সেন্ট মাটিনের সৈকতে চলে আসে। সাগর উত্তাল থাকায় তাঁদের পুশ ব্যাক করা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁদের বিজিবি ও কোস্টগার্ডের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের এক কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারের দুজন বিজিপির সদস্য ও ৩১ জন রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু বর্তমানে তাঁদের হেফাজতে আছেন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মধ্যে ১০ জন পুরুষ, ১০ জন নারী ও ১১ জন শিশু রোহিঙ্গা শিশু রয়েছেন। দুই বিজিপি সদস্যের মধ্যে একজন ক্যাপ্টেন ও অন্য জন সার্জেন্ট।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিফ থেকে দেশটির দুই বিজিপি সদস্যসহ ৩৩ জন সাগরে অপেক্ষমাণ জাহাজের দিকে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে ট্রলারটির পাখা জালের সঙ্গে জড়িয়ে ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এ সময় ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি ভাসতে ভাসতে সেন্ট মাটিনের উত্তর সৈকতে চলে আসে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরীর বলেন, বিষয়টি নিয়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ড এখন পর্যন্ত কোনো কিছু জানায়নি। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তিনি বিষয়টি জেনেছেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
পাঠকের মতামত