প্রতিনিধি।কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আগামী ২৯ মে ভোট গ্রহণ। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে শেষ পর্যন্ত মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুই প্রার্থী। তাদের একজন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী (আনারস প্রতীক) ও অন্যজন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর চৌধুরী (মোটরসাইকেল প্রতীক)। দুজনই আওয়ামীলীগের কান্ডারি।
তাদের দুজনের মধ্যে অর্থ, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, এমনকি মামলার দিক দিয়েও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে অনেকগুণ এগিয়ে রয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। এমনকি তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর চৌধুরীর স্ত্রীর নামে কোনো সম্পদ না থাকলেও সেক্ষেত্রেও অলংকার ও সম্পদে কয়েকশো এগিয়ে রয়েছেন জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর স্ত্রীর। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
হলফনামায় দেখা যায়, জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে চলমান দুটি মামলা রয়েছে। যা দণ্ডবিধি: ৫১১/১০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সালের দূর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) এর স্পেশাল মামলা নং ১৮/২০১৯ যা মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশ দাখিলের জন্য দিন ধার্য্য আছে এবং অপর আরেকটি মামলা সিআর ১৭৮/২০১৫ ইং (উখিয়া) মামলাটি বর্তমানে সাক্ষীর জন্য জন্য দিন ধার্য্য আছে। অন্যদিকে, আবুল মনসুরের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।
আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী নির্বাচন কমিশনে জমাকৃত হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, তাঁর বার্ষিক আয় ২৮ লাখ ৫২ হাজার ৩শ ১৫ টাকা। এর মধ্যে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা আয় হয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সম্মানি ভাতা থেকে। অবশিষ্ট টাকা তিনি আয় করেন ব্যবসা, বাড়ি ভাড়া, শেয়ার সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত ও কৃষি খাত থেকে। হলফনামায় প্রার্থীর উপর নির্ভরশীলদের আয় দেখানো হয়েছে ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা।
অন্যদিকে মনসুরের বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। যা তিনি বাড়ি ভাড়া/দোকান ভাড়া বা অন্যান্য ভাড়া থেকে পান।
জাহাঙ্গীর তাঁর হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ বিবরণীতে নগদ টাকা দেখিয়েছেন ২ লাখ ৪৫ হাজার ২শ ৬৬ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দেখিয়েছেন ১১ লাখ ৪১ হাজার ৬২ টাকা। এ ছাড়া একটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের মোটর গাড়ি। দশ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার যার মূল্য ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ২লক্ষ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবপত্র দেখিয়েছেন। তাছাড়াও স্ত্রীর নামে নগদ টাকা দেখিয়েছেন ৫২ লাখ ২৮ হাজার ৯শ ৯৯ টাকা ও ২৫ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার যার মূল্য ১,৮০,০০০ টাকা এবং ১ লক্ষ টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও ১ লক্ষ টাকার মূল্যের আসবাবপত্র হলফনামায় দেখিয়েছেন।
এছাড়াও হলফনামায় স্থাবর সম্পত্তিতে জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর কৃষি জমি ১০ একর ৬৮.৪৩ শতক যার মূল্য ১ কোটি ৩০ লক্ষ ১৮ হাজর ৫০০ টাকা। এবং অকৃষি জমি ৩ একর ৪৮.৪২ শতক যার মূল্য ৬৯ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা। এছাড়াও বাণিজ্যিক ৪টি দালানের মূল্য ৮৩ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা। বাড়ি একটি যার মূল্য ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার মূল্যের একটি বাড়ি রয়েছে। তাছাড়াও স্ত্রীর নামে ৯ শতক অকৃষি জমি যার মূল্য ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও স্ত্রীর নামে সেমি: ফাকা একটি ভাড়া ঘর যার মূল্য ১৫ লাখ টাকা দেখিয়েছেন।
জাহাঙ্গীর কবি চৌধুরী তার নামায় ব্যাংক ঋণ দেখানো হয়েছে ১ কোটি ২০ লক্ষ ৬০ হাজার ১৯৬ টাকা।
অন্যদিকে মনসুর তাঁর হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ বিবরণীতে নগদ টাকা দেখিয়েছেন ১ লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও দশ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার যার মূল্য ২৫ হাজার টাকা। ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিকস এবং ২৫ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবপত্র দেখিয়েছেন। এছাড়াও স্থাবর সম্পত্তিতে একটি পৈত্রিক পাকা বাড়ি দেখিয়েছেন। তাছাড়া তাঁর স্ত্রীর নামে কোনো সম্পদ উল্লেখ করেননি। কোন ব্যাংক ঋনের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি হলফনামায়।
পাঠকের মতামত