রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক অপরাধীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছে দিচ্ছে ওরা
মিয়ানমারে সংঘাতের কারণে নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশ
পলাশ বড়ুয়া ॥
পাশ্ববর্তী মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বাংলাদেশ। ওপারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছে এপারের মানুষ। সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির কারণে অনেক বাংলাদেশী হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আবার এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মিয়ানমার থেকে অস্ত্র এনে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক অপরাধীদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছে একটি চক্র।
জার্মানের জি থ্রি রাইফেল, রকেট সেলের মতো ভারী আগ্নেয়াস্ত্র মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
গত বুধবার অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড় থেকে রকেট সেল ও গ্রেনেড উদ্ধার করে র্যাব। এর একদিন পর বৃহস্পতিবার উখিয়া-টেকনাফ থেকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জার্মানের তৈরি ১টি জি থ্রি রাইফেল, ২টি শুটার গান ও ৯২ রাউন্ড রাইফেলের গুলি উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তার হওয়া সবাই সংঘবদ্ধ অস্ত্র ব্যবসায়ী। কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তাররা হলো, উখিয়ার মাদারবনিয়া এলাকার মো. ছৈয়দের ছেলে মোস্তাক আহম্মদ (৩৭), মহেশখালীর মাঝের ডেইল এলাকার আনজু মিয়ার ছেলে রবিউল আলম (২৮), মাদারবুনিয়া এলাকার মৃত নুর নবীর ছেলে কাশেম প্রকাশ মনিয়া (৩৮), মোস্তাক আহম্মদের ছেলে লতিফা আক্তার (৩৪) ও মহেশখালীর নতুন বাজার এলাকার মৃত আবুল হাশেমের ছেলে বেলাাল হোসেন (৩৮)।
এর আগে বুধবার ভোর ৫ টা থেকে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন লাল পাহাড়ে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানার সন্ধান পায় র্যাব। সেখান থেকে অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেলসহ দুই সন্ত্রাসীকে আটক করে।
এ ব্যাপারে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে সীমান্তে বসবাসরত মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে। ইতোমধ্যে ওপারে ছোড়া গোলাবারুদ এসে কয়েকজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও আমার দেশের কৃষক নিরাপদে চাষাবাদ করতে পারছে না। জেলেরা মাছ শিকার করতে পারছে না। কেউ সীমান্তে গেলে তারা অপহরণের শিকার হচ্ছে। যার ফলে কর্মহীন মানুষ গুলোর রুজিরুটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়ে দাড়িয়েছে।
বিজিবি সুত্রে, মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে অনুপ্রবেশের আশঙ্কায় নাফ নদী এলাকায় টহল জোরদার করেছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেন কেউ অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: তানভীর হোসেন বলেছেন, সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বরাত দিয়ে সম্প্রতি বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি।
তিনি এও বলেছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে বসবাসরত মানুষকে সতর্কে থাকতে বলা হয়েছে।
পাঠকের মতামত