আব্দুস সালাম,টেকনাফ (কক্সবাজার)
কক্সবাজারের টেকনাফে চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস মোস্তাক মিয়া হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, মাস্টার মাইন্ড মোঃ আব্দুর রহিমসহ ৬ জন আসামি গ্রেফতার এবং ইজিবাইক (টমটম) উদ্ধার করেছে পুলিশ। টেকনাফ মডেল থানার মামলা নং-১৯/১৩৬, তারিখ-১০/০৩/২০২৪ইং, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন,উখিয়া এলাকার টমটম ক্রেতা ফরিদ আহাম্মদ,মাস্টার মাইন্ড মোঃ আব্দুর রহিম(১৯), আব্দুল আমিন পুতিয়া(১৬),সহায়তাকারী ওমর ফারুক(২৪),সাদেকুর রহমান(২১) ও নুরুল আমিন(৪৩)।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)
মুহাম্মদ ওসমান গনি গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি গত ৩ মার্চ অনুৃমানিক ১৭ টা থেকে ৬মার্চ অনুমানিক ১২ টার মধ্যে যেকোন সময় অজ্ঞাত ব্যক্তিগণ পরস্পর যোগসাজসে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইজিবাইক (টমটম) চালক মোস্তাক মিয়াকে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে বস্তায় বেঁধে টেকনাফ পৌরসভাস্থ ইসলামাবাদ-অলিয়াবাদ ছোট হাজির বাগান কায়ুকখালী খালে ফেলে দিয়েছে মর্মে সংবাদ পাওয়া মাত্রই কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম (বার) মহোদয়ের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উখিয়া সার্কেল মো. রাসেল পিপিএম-সেবা এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে টেকনাফ মডেল থানার ওসির নেতৃত্বে টমটম চালক মোস্তাক মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ কর্তৃক কার্যকরী অভিযান পরিচালনা করে রহস্য উদঘাটন করা হয়।
অভিযান পরিচালনাকালে জানা যায় ঘটনার দিন মামলার ঘটনাস্থলে অজ্ঞাতনামা আসামীরা ভিকটিম মোস্তাক মিয়াকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে লাশের গলায় বালুভর্তি প্লাস্টিকের বস্তা বেঁধে খালে ফেলে দিয়ে ভিকটিমের চালিত টমটম ছিনতাই করে নিয়া যায়।মামলার তদন্তকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উখিয়া থানা এলাকা থেকে প্রথমে টমটম ক্রেতা ফরিদ আহাম্মদকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় আসামী ফরিদ আহাম্মদকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে টমটমটি জনৈক আব্দুর রহিম ও আব্দুল আমিন প্রকাশ পুতিয়ার নিকট থেকে ক্রয় করেছিল। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উখিয়া সার্কেল এর নেতৃত্বে অফিসার ইনচার্জ টেকনাফ মডেল থানা, পুলিশ পরিদর্শক(অপারেশন) মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, এসআই সনজীব কুমার পাল ও সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকায় শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যা মামলার মাস্টার মাইন্ড মোঃ আব্দুর রহিম ও আব্দুল আমিন পুতিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যমতে ভিকটিমের টমটম গাড়ীটি বিক্রয়ের ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তাকারী আসামী ওমর ফারুককে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তে জানা যায় ঘটনার দিন পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আসামী আব্দুর রহিম টেকনাফ উপরের বাজার মন্দিরের সামনে থেকে ভিকটিম মোস্তাক মিয়ার টমটমটি নিয়ে অলিয়াবাদ ৪নং ওয়ার্ড তিন রাস্তার মোড়ে জগিরের বাড়ীর পাশে নিয়ে যায়।
পরে আসামী আবদুর রহিম প্রথমে লোহার রড় দিয়ে ভিকটিমের মাথায় বারি মারিলে ভিকটিম রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে গেলে আসামী আব্দুর রহিম ও পূর্ব থেকে সেখানে অবস্থান করা আব্দুল আমিন পুতিয়া ভিকটিমকে টমটমে করে কায়ুকখালী খালের নিকটবর্তী খালি মাঠে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে কাঁধে করে খাল পাড়ে নিয়ে গিয়ে একটা প্লাস্টিকের বস্তার ভিতর কাদা মাটিতে ভরে ভিকটিমের গলায় বেঁধে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে লাশ কায়ুকখালী খালের পানিতে ফেলে দেয়।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত সকল আসামীরা বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
পাঠকের মতামত