কক্সবাজারের উখিয়ায় র্যাবের গুলিতে নিহত বিএনপি নেতা জাগির হোসেনের পরিবারের সাথে সাঙ্গাত করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) মাহবুবের রহমান শামীম।
তিনি শনিবার (১৬ মার্চ) বিকালে কক্সবাজার জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে উখিয়া জালিয়া পালং ইউনিয়নের পাইন্নাশিয়া গ্রামে জাগির হোসেনের বাসভবনে যান। সেখানে তিনি তার স্ত্রী সন্তানের সাথে দেখা করে তাদের খোজ খবর নেন। জাগির হোসেন সাবেক যুবদল নেতা ও জালিয়া পালং ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক ছিলেন।
বিগত বছরের ৫ নভেম্বর রাতে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ চৌধুরীর বাসায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এসময় তাকে না পেয়ে ঘর ভাংচুর করে এবং গ্রামবাসির উপর গুলি চালায় তারা। এতে তিনজন বিএনপি নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়। আহতদের মধ্যে জাগির হোসেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়।
নিহতের পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া শেষে মাহবুবের রহমান শামীম উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ৭ জানুয়ারীর ডামি নির্বাচনের আগে আওয়ামীলীগ দেশের ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিএনপি নেতাকর্মীদের বেচে বেচে হত্যা করেছিল। তার অন্যতম শিকার হচ্ছে জাগির হোসেন। ঐ সময় বিএনপির এক দফার গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিচারে নেতাকর্মীদের উপর গুলি চালিয়েছিল। জাগির হোসেন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এই অবৈধ সরকার তাদের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য অসংখ্য গণতন্ত্রকামী মানুষকে হত্যা করেছে। তারপরও জনগণ রাজপথ ছাড়েনি। রাষ্ট্রযন্ত্র দিয়ে সরকার জনগণকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে।
সারাদেশকে সরকার বদ্ধ কারাগারে পরিণত করেছে। দেশের জনগণ অর্থের অভাবে ঠিকমত খেতে পারছে না, অথচ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছেন। সবকিছুর হিসাব একদিন দিতে হবে। সব গুম খুন এবং লুটপাটের বিচার এদেশে হবে।জনতার বিজয় হবেই।
তিনি বলেন, জাগির হোসেন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য, একটি আদর্শ ও লক্ষের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ও আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের হামলায় বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। তারা বীরের মতো শহীদ হয়েছেন। কেউ পেছনে পালাতে গিয়ে শহীদ হননি। তারা বুক পেতে দিয়ে চলে গেছেন। তারা দেশের জন্য যে আত্মত্যাগ করে গেছেন, তা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। নেতাকর্মীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য তারেক রহমান হতাহত ও নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীরা আরও ত্যাগ শিকারের জন্য শপথ গ্রহণ করেছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক হুইপ ও সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এড. শামীম আরা স্বপ্না, উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরোয়ার জাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপজেলার চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এম মোক্তার আহমদ, জেলা বিএনপির সদস্য ও জালিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী, টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এড. হাসান সিদ্দিকী, জেলা যুবদলের সভাপতি সৈয়দ আহমদ উজ্জ্বল, সাধারণ সম্পাদক জিসান উদ্দীন, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিমুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক এড. মো. ইউনুস, জেলা কৃষকদলের আহবায়ক গিয়াস উদ্দিন আফসেল, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব কামরুদ্দিন সবুজ, ছাত্রদল নেতা মো. আরাফাত, উখিয়া বিএনপি নেতা এড. শাহ আমিন ও এড. রেজাউল করিম প্রমূখ।
এদিকে বিকালে রাজাপালং এমদাদুল ফাজিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে উখিয়া উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে এক বিশাল ইফতার মাহফিল উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) মাহবুবের রহমান শামীম।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না।
এতে জেলা ও উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
####
পাঠকের মতামত