শহিদুল ইসলাম।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিল ৫৮ মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ(বিজিপি)।বর্তমানে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ডের হেফাজতে রয়েছে।তাদের ব্যবহূ্ত পোশাক ও অস্ত্র বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি)র হেফাজতে রাখা হয়।তবে তাঁদেন প্রচলিত আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নিরস্ত্র করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।এদের মধ্যে ১৪ জন আহত। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।এর মধ্যে এ দুইজন গুলিবিদ্ধ বিজিপি সদস্যকে সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন।
বাকি ৪৪ জনকে সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্ত পর্যন্ত তুমব্রু সীমান্তের কাছে একটি স্কুলে বিজিবির তত্ত্বাবধানে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওপার আরকান আর্মির সঙ্গে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের তীব্র গোলাগুলি চলছে।তবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।পনের ঘন্টা পর গোলাগুলি কিছুটা বন্ধ হয়।
গতকাল শনিবার রাতে শুরু হওয়া গোলাগুলি অব্যাহতভাবে চলছে। সূত্র জানায়, গোলাগুলির শব্দ যেখান থেকে আসছে, সেখানে বিজিপির তুমব্রু রাইট ক্যাম্প এবং ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি অবস্থিত।
এদিকে উখিয়ার বালুখালী গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন রাতভর গোলাগুলির শব্দে ঘুমাতে পারেনি।
অপরদিকে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী,রহমতের বিল,ফারির বিল ও আন্জুমান পাড়া সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের প্রচন্ড সংঘর্ষ চলছে। একারনে সীমান্তের বসবাসকারী লোকজনের মাঝে আতংক দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন গোলাগুলির শব্দ শুনেছি।
এ ব্যাপারে ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানএকে এম মো. জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন মিয়ানমারের বিস্ফোরণের শব্দ আবার আসা শুরু করে শনিবার বিকালে। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওপার থেকে বিস্ফোরণে শব্দ এসেছে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ বলেন সীমান্তে যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি, পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক রয়েছে।
তিনি আরো বলেন সীমান্তের গোলাগুলির ঘটনায় ঘুমধুম সীমান্তে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে পরিস্থিতি অনুকূলে আছে। মিয়ানমারের সঙ্গে সংযুক্ত মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিজিবির কক্সবাজারস্থ ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল আশরোকি বলেন, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সঙ্গে রাত থেকে তুমুল যুদ্ধের মধ্যে কয়েকজন বিজিপি সদস্য প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ করেছে। এদের বিজিবির ঘুমধুম সীমান্ত বিওপিতে রাখা হয়েছে। বিজিপি সদস্যদের অস্ত্র ও গুলি বিজিবির কাছে জমা রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, শনিবার রাত থেকে তুমুল সংঘর্ষ হচ্ছে ওপারে। ঘুমধুমের পরিবেশ থমথমে, আতঙ্কে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়েছে।
ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ি তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (আইসি) মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া বলেন, রাতভর গোলাগুলি চলেছে ওপারে। গোলাগুলির শব্দে মানুষের মনে ভয়-আতঙ্ক তো হবেই। তবে যেকোনও পরিস্থিতিতে স্থানীয়দের নিরাপত্তা দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।
মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের যে ১৪ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদেরকে দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিজিবি এদের অস্ত্রগুলো নিয়ে রেখেছে বলেও জানান তিনি।মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে সীমান্তের ওপার থেকে আসা গুলিতে দুই বাংলাদেশির আহত হওয়ার ঘটনায় সীমান্তে আতঙ্কের মধ্যে রোববার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
#####
পাঠকের মতামত