আব্দুস সালাম,টেকনাফ(কক্সবাজার)
পর্যটকবাহী জাহাজ এম়ভি বার আউলিয়া ও এল সি টি কাজল সেন্টমার্টিন থেকে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত পর্যটক নিয়ে টেকনাফ দমদমিয়া জেটিঘাটে যাওয়ার পথে সিটে বসা নিয়ে জাহাজের মধ্যেই পর্যটকদের দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটে।
রবিবার ( ২৪ ডিসেম্বর) দুপুর ৩ টার দিকে এমভি বার আউলিয়া ও এল সি টি কাজল সেন্টমার্টিনদ্বীপ থেকে টেকনাফের উদ্দেশে রওনা দিলে জাহাজের ভেতর এ ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়,এমভি বার আউলিয়াতে ১২০০ যাত্রীর ধারণা ক্ষমতা থাকলেও এতে তোলা হয় দু’হাজারের অধিক যাত্রী।দেখা যায় বার আউলিয়াতে শত শত নারী-পুরুষ ও শিশু নিদিষ্ট বসার সিট না পেয়ে নিচের ফ্লোরে ও চলাচলের সিড়িতে জাহাজের বিভিন্ন সাইটে দাড়িয় থাকছে এবং যে যেভাবে বসার জায়গা পেয়েছে সেখানে বসে পড়ছে।
জাহাজের কোন অংশ খালি নাই যে যেভাবে পারে দাড়িয়ে আছে দাড়ানো ছাড়া কোন উপায় জাহাজের ভেতর ছিল না তিল পরিমাণ খালি জায়গা।পর্যটকরা কাউন্টার থেকে নিদিষ্ট সিটের টিকিট কেনার পরও জাহাজে গিয়ে তারা সিটে বসতে পারেনি তাদের নির্দিষ্ট সিটে অন্যরা বসে আছেন।
পরবর্তীতে দেখা গেছে ওই পর্যটকরা জাহাজের উঠার পর আবারও বসার জন্য পুনরায় টাকা দিয়ে টিকিট কিনে প্লাস্টিকের চেয়ারে তারা বসেন। অতিরিক্ত পর্যটক বহন করায় নিদিষ্ট সিটে বসতে না পেরে জাহাজের পর্যটকদের মাঝেই দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটে।
এতে আরো দেখা যায়, জাহাজের ভেতর মানুষ একটু যে হাটবে সে জায়গায়ও জাহাজে নেই বলে চলে।
জাহাজের কর্মীরা পুনরায় প্লাস্টিকের চেয়ার গুলো ২০০/৩০০ টাকা করে পর্যটকদের কাছে বিক্রি করেন।এর ফলে জাহাজে থাকা অন্যান্য পর্যটকরা একটু দাঁড়িয়ে ছবি তুলবে বা একটু হাটাহাটি করবে সে সুযোগ পযর্ন্ত ছিলনা। দু’টি জাহাজে একই অবস্থা দেখা গেছে।
এমভি বার আউলিয়ার মুনিম সাহরিয়া নামের এক পর্যটক বলেন,গত শনিবার এমভি বার আউলিয়া জাহাজে করে সেন্টমার্টিনদ্বীপে যায়।
রবিবার বিকেলে টেকনাফে ফেরার জন্য বিজনেস ক্লাসের তিনটি টিকিট কেনা হয়।কিন্তু জাহাজের ভেতর ডুকে দেখি আমার সিটে অন্য লোক বসা।তাদেরকে বলা হয় এই সিট তিনটি আমাদের জন্য কাটা হয়েছে।তখন তারাও বলে সে সিটের জন্য তারাও টিকিটি কেটেছে। এ নিয়ে ওই যাত্রীরা আমাদের উপর রেগে গিয়ে ৪-৫ জন মিলে মারধর করতে চলে আসেন।পরে আমার ওপর আক্রমণ করেন। এ ঘটনায় জাহাজ কতৃপক্ষের কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারী এগিয়ে আসেনি। আধা ঘন্টা তাদের রোষানলে পড়েছিলাম।
তিনি আরো বলেন, এভাবে যদি আমরা হয়রানি’র শিকার হয় তাহলে সেন্টমার্টিনদ্বীপে ভ্রমণে আসা আর হবেনা।
এল সি টি কাজলের হামিদুর রহমান নামে এক পর্যটক বলেন,জাহাজ কতৃপক্ষ আমার কাছ থেকে টিকিটের টাকা নেওয়ার পর সিটে বসতে দেয়নি।
এ নিয়ে তাদেরকে অভিযোগ করার পরও তারা কোন ব্যবস্থান নেয়নি।পরে ওই সিটের যাত্রীর সাথে আমার ঝগড়া লাগে।তারা দেখি জাহাজের ভেতর প্লাস্টিকের চেয়ার গুলো বিক্রি করতেছে।জাহাজে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়াতে আমরা এমন নাজেহালের মধ্যে পড়েছি।জাহাজের কোন অংশ খালি নাই একটু দাঁড়াবো বা বসবো।দুই ঘন্টা বা আড়াই ঘন্টা জাহাজে যে কষ্ট সহ্য করতে হলো তা জাহাজ কতৃপক্ষের কারনে কষ্ট পেলাম।
এ বিষয়ে এমভি বার আউলিয়া জাহাজের পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন,কর্নফুলি জাহাজ টি যান্ত্রিক সম্যসার কারনে সেন্টমার্টিন যেতে পারে নাই।সে কারনে দ্বীপে থাকা পর্যটকদেরকে বার আউলিয়া জাহাজ করে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে ঝগড়ার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপার টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরীর কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পাঠকের মতামত