রোহিঙ্গা শিক্ষা প্রকল্পের অনুষ্ঠাানে উপ সচিব সামছু-দ্দৌজা
রোহিঙ্গা শিশুদের বিকাশ ও শিক্ষা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে জেএসইউএস
নিজস্ব প্রতিনিধি।।অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপসচিব) মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, রোহিঙ্গা সংকেটের শুরুর দিকে আমাদের লক্ষ্য ছিলো তাদের জীবন রক্ষা করা। এখন আমরা তাদের শিক্ষার দিকে জোর দিচ্ছি। সেক্ষেত্রে মিয়ানমারের কারিকুলামের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম করেছে। ও হোস্ট কমিউনিটি শিশুদের বিকাশ ও শিক্ষাা নানা রকম চ্যালেঞ্জে জর্জরিত। তাদের যথাযথ বিকাশ নিশ্চিতকরণে সমন্বিত প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ বাড়ানো প্রয়োজন। যাতে তারা বেড়ে উঠতে পারে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে। প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গারা শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষকেরা এই সংকট মোকাবেলায় হতে পারে শক্তিশালী হাতিয়ার। বাংলাদেশ সরকার জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষা খাতে উদ্যোগ গ্রহণ ও বিনিয়োগ করছে। সরকারি ও বেসরকারি সব সংস্থার মধ্যকার যে যৌথ উদ্যাগ তা আরও শক্তিশারী করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নানাবিধ চ্যালেঞ্জ এখনো রয়েছে। তাদের শিশুর জীবনমান উন্নয়নে শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ সরকার এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব সহকারে নেতত্ব দিয়ে যাচ্ছে।
২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কক্সবাজার শহরের শরণাার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে যুগান্তর সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (জেএসইউএস) নির্বাহী পরিচালক ইয়াসমিন পারভীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জয়ফুল লার্নিং সেন্টার ফর রোহিঙ্গা রিফুউজি চিলড্রেন (জেএলসিআরসি) প্রকল্পের ‘কিক অফ মিটিং’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপসচিব) মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা নয়ন এসব কথা বলেন। যুগান্তর সমাজ উন্নয়ন সংস্থা ( জেএসইউএস) এর অ্যাডভাইজার পিপলস ইউনিভার্সিটির প্রক্টর প্রফেসর হাবিুবর রহমান ও সহকারী পরিচালক মো. আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে জেএসইউএসে’র ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা কবি প্রাবন্ধিক সাঈদুল আরেফীন বলেন, ১৯৯৭ সালে ঝরে পড়া শিশুদের নিয়ে যাত্রা শুরুর দিন থেকে নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম এখনো অব্যাহত রেখেছে যুগান্তর সমাজ উন্নয়ন সংস্থা। বাংলাদেশের শিশুর সামগ্রিক উন্নয়নে আমরা অঙ্গীবারাবদ্ধ। আর তাই শিশুদের আনন্দদায়ক পরিবেশের মধ্য দিয়ে প্রাক প্রাথমিক স্কুলের জন্য প্রস্তত করতে সারাদেশের ৪টি জেলায় এবং কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালংস্থ ৭ নং ক্যাম্পে ১২ টি কমিউনিটি বেইসড লার্নিং ফ্যাসেলিটি (সিবিএলফ) সেন্টারে ১২-১৮ বছর বয়সী কিশোরীদের ও ৮টি শিক্ষা কেন্দ্রের রোহিঙ্গা শিশুর শিক্ষার মানন্নোয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
শরণাার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের উপ সচিব মোহাম্মদ তালুত বলেন, শিশুদের শিক্ষার মান্নোয়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। শিশুরা যাতে আনন্দদায়ক পরিবেশে শিক্ষার গ্রহণ করতে সেইদিকে নজর দিয়েছে সরকার। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী সংস্থাকেও এগিয়ে আসতে হবে। যুগান্তর সমাজ উন্নয়ন সংস্থা রোহিঙ্গা শিশুর শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি এ সংস্থা সরকারের লক্ষিত অর্জনে পৌছাতে হবে।
ইউনিসেফের এডুকেশন স্পেশালিস্ট রালফ জিরেভা বলেন, এডুকেশন সাপোর্ট সেক্টরের সহায়তায় দক্ষ শিক্ষক, বিশেষ করে রোহিঙ্গা নারী শিক্ষক গড়ে তুলতে সব সময় করে যাচ্ছে ইউনিসেফ। ব্র্যাক পুলড ফাণ্ডের অর্থায়নে পরিচালিত যুগান্তর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার জেএলসিআরসি প্রোগ্রামের যেকোনো প্রয়োজনে এডুকেশন সেক্টর এবং ইউনিসেফ সহায়তা প্রদান করবে।
সভায় ব্র্যাক পুলড ফাণ্ডের গ্রাণ্ট ম্যানেজার এস কে বাবলুর রহমান বলেন, শিশুদের মানসিক ও বিকাশ নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় টুল প্রস্তুতের বিষয়টি। যাতে করে শিশুদের প্রয়োজন চিহ্নিত করার পাশাপাশি তাদের বিকাশ নির্ধারণ করা সহজ হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ত্রাণ ও শরণাার্থী কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি মোহাম্মদ তালুত, আরআরসি অফিসের আরিফ ফয়সাল খান, ব্র্যাকের এডভোকেসী প্রোগ্রামের টেকনিক্যাল লীড কাজী মফিজুর রহমান, ফ্রেন্ডশীপের কোঅর্ডিনেটর শাহীনুর সেলিম সুজন। সভায় পালস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী কলিম, ব্র্যাংক পুলড ফাণ্ডের এডভোকেসি ও ক্যাপাসিটি ম্যানেজার নাঈম আহমেদ, এ্যাকশন এইড বাংলাদেশের প্রজেক্ট ম্যানেজার সায়েদ আবুল ফজলসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত বিভিন্ন এনজিওর শিক্ষা প্রোগ্রামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।সভায় পাওয়ার পয়েন্টে যুগান্তর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার বিভিন্ন কার্যক্রমের সামগ্রিক তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন সহকারী পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাস্তবায়িত জয়ফুল লার্নিং সেন্টার ফর রোহিঙ্গা রিফুউজি চাইলড্রেন (জেএলসিআরসি) প্রকল্পের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরেন করেন জেএলসিআরসি প্রকল্পের প্রজেক্ট অর্ডিনেটর মো. মামনুর রশিদ।
পাঠকের মতামত