টেকনাফ প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের টেকনাফে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারের মামলায় ৬ জন রোহিঙ্গাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একইসাথে প্রত্যেককে ৫০হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো ৩ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (২৯ নভেম্বর) কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ড প্রাপ্তরা হলেন, মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গা কেফায়েত উল্লাহ,হোছন, মো. শরীফ, সৈয়দূর রহমান, নুর হোসেন ও মোহাম্মদ হোসেন।রায় ঘোষনার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্র পক্ষে একই আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট বদিউল আলম (সোহেল) মামলাটি পরিচালনা করেন। একই কার্যালয়ের জেলা নাজির বেদারুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ঘটনা সংঘটিত হওয়ার মাত্র ১বছর ৩ মাস ১৩ দিনে মামলাটির রায় ঘোষণা হয়েছে।
গত বছরের ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট বিকেলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টেকনাফ বিশেষ জোনের সহকারী পরিচালক মো. সিরাজুল মোস্তফার নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান চালিয়ে টেকনাফের সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ছেরাদ্বীপের দক্ষিণ পূর্ব সমুদ্র এলাকায় মিয়ানমারের দিক থেকে আসা একটা ফিশিং বোট আটক করে। পরে ফিশিং বোটে থাকা রোহিঙ্গা কেফায়েত উল্লাহ, মো. হোছন,মো. শরীফ সৈয়দূর রহমান, নুর হোসেন ও মো. হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি মতে তাদের হেফাজত থেকে এক লাখ ৭০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টেকনাফ বিশেষ জোনের সহকারী পরিচালক মো.সিরাজুল ইসলাম মোস্তফা বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। টেকনাফ থানা মামলা নাম্বার- ৫৩, তারিখ ১৬/০৮/২০২২ ইংরেজি। জি আর মামলা নাম্বার- ৭৭৫/২০২২ ইংরেজি(টেকনাফ) এবং এসটি মামলা নাম্বার ৫৩৩/২০২৩ইংরেজি।
মামলাটি বিচারের জন্য ২০২৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলায় ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ, আসামির পক্ষে তাদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়ানিক পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা, আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্কসহ বিচারের জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন ধার্য্য করা হয়। কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণীর ১০(গ) ধারায় আসামিদের দণ্ড প্রদান করেন।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টেকনাফ বিশেষ জোনের সহকারী পরিচালক মামলার বাদী সিরাজুল মোস্তফা জানান, অভিযানের স্বার্থকতা তখনই আসে যখন বিচারে আসামিদের শাস্তি নিশ্চিত হয়। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়ায় বিচার বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
তিনি আরো বলেন, গত চার বছরে এ কার্যালয়ের প্রায় ৫০০টি মামলা বিচারাধীন আছে। যা দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে সমাজে বিচার দৃশ্যমান হবে এবং মাদক ব্যবসা নিরুৎসাহিত হবে বলে মনে করেন।
পাঠকের মতামত