নিজস্ব প্রতিবেদক:-
কক্সবাজারের উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের ধইল্যা ঘোনা ও হাজম রোড যেন মরণ নেশা ইয়াবা, মদ ও গাঁজার ডেরায় পরিণত হয়েছে।এসব এসব মাদকের ডেরায় সেবনকারীদের যেন নিরাপদ আস্তানা। মাদকের টাকা যোগাড় করতে চুরি-ছিনতাই সহ বহুমুখি অপরাধ কর্মকান্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি সময়ে ধইল্যা ঘোনা ও হাজম রোড এলাকায় অবাধে ইয়াবা, মদ ও গাঁজা খোরদের দৌরাত্ন্য যেমন বেড়েছে, তেমন বেড়েছে মানুষের ঘর বাড়ি ও দোকান চুরির মত অহরহ অপরাধ মুলক ঘটনা।
এদিকে হাজম রোডের স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই সাংবাদিকদের জানান,উখিয়ার হাজম রোড এলাকায় মাদক বেচাবিক্রির বড় বড় কয়েকটি ডেরা রয়েছে।এসব ডেরায় রাত-বিরাতে বসে মাদক সেবনের আসর।
সেখানে নিয়মিত দুর দুরান্ত থেকে মাদক সেবীরা আসে। স্থানীয়রা আরোও জানিয়েছেন এলাকার কিশোর, যুবক,ছাত্র উভয়ে এসব মাদকের ডেরা থেকে কৌতুহল বসত মাদক সেবন করে এখন মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে।অনেক ছাত্র ছেড়ে দিয়েছে পড়ালেখা, যুবকরা মাদকের টাকা যোগাড় করতে গিয়ে করে যাচ্ছে নিয়মিত চুরিকান্ড।
একাধিকবার মাদক কারবারি মাদক বেচাবিক্রির দায়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হলে ও জামিনে বেরিয়ে তারা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে ব্যবসা নিয়মিত করে যাচ্ছেন। রাজাপালং ইউনিয়নের ধইল্যা ঘোনা এলাকার মৃত আবু বক্করের পুত্র দিলু, দিলুর স্ত্রী রোকেয়া বেগম, মাজার গেইট এলাকার বাকসু ফকিরের পুত্র হামিদ ও নজির আহমেদ, নজির আহমেদ’র স্ত্রী আজু মেহের গং নিয়ন্ত্রণ করছে মাদক বেচাবিক্রি ও চুরি ছিনতাই করে আনা মালামাল ও টমটম চোর সিন্ডিকেট।
তথ্যানুসন্ধ্যানে উঠে এসেছে জেল ফেরত মাদক কারবারি দিলুর পুত্র চোরাকালু সিন্ডিকেট তৈরি করে বন বিভাগের জায়গা দখল করে মাদকের আস্তানা গড়ে চোরাইপণ্য হজম করে যাচ্ছে।
গত ১৪ নভেম্বর রাতে টমটম গাড়ির ব্যাটারি চুরি করার সময় হাতেনাতে জনতার হাতে আটক হয় ধইল্যা ঘোনা এলাকার দিলুর পুত্র কালু,টিএন্ডটি গুচ্ছ গ্রামের লায়লা বেগমের পুত্র আক্কাস ও কুতুপালং পশ্চিম পাড়ার চাঁন্দ মিয়ার পুত্র মোশাররফ।
জনতা এসব এই তিন চোর কে গণধোলাই দেয়।পরবর্তী গণ্যমাণ্য ব্যক্তিগণের কাছে দিলুর পুত্র চোরাকালু,টিএন্ডটি গুচ্ছগ্রামের লায়লা বেগমের পুত্র আক্কাস ও কুতুপালং পশ্চিম পাড়ার চাঁন্দ মিয়ার পুত্র মোশাররফ চুরি করার বিষয় স্বীকার করেন।যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
কিন্তু এঘটনায় উল্টো তাদের অপহরণ পুর্বক মুক্তিপণ দাবি’র কথা উল্লেখ করে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, গণমান্য ব্যক্তি যারা চুরিকান্ডে বাঁধা প্রদানকারি ১১ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।যার সি-আর মামলা নং-৭৭৪/২০২৩ ইং।
সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, নিয়মিত টমটমগাড়িগুলো চুরি হওয়ায় আতংক বিরাজ করছে জনমনে। প্রশাসনের তৎপরতায় মাঝে-মধ্যে চক্রের কিছু সদস্য ধরা পড়লেও অজানা কারণে ছাড় পাওয়ায় তাদের এহেন কান্ড নির্মুল করা যায় নি।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গত কয়েকমাস ধরে উখিয়ার বিভিন্ন বাজার থেকে অহরহ টমটম গাড়ি চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। তবে গত ২৬ নভেম্বর ৫ টি চোরাই টমটম সহ ৬ চোর চক্রের সদস্যকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
হাজম রোডস্থ সমাজ কমিটির সভাপতি ও উখিয়া উপজেলা বাঁশ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দানু মিয়া বলেন,ক্রাইমজোন হাজম রোডে কিছু চোর নিয়মিত চুরি কান্ড ঘটাচ্ছে তাদের মধ্যে কালু, আক্কাস ও মোশাররফ অন্যতম।তাদের পরিবার মাদক বেচাবিক্রিতেও জড়িত। তাদের গ্রেপ্তার করলে পুরো উপজেলায় চুরির প্রবণতা কমিয়ে আসবে বলে মনে করেন।
হাজমরোড এলাকার ব্যবসায়ী কালা মনু কালুসহ তার তৈরী বাহিনীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের প্রতি আহবান করেছেন।
হাজমরোড এলাকার টমটম চালক মোক্তার বলেন, আমার জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন কিস্তিতে নেওয়া টমটম গাড়িটির ব্যাটারি চুরি হওয়ার কারণে আমি নি:স্ব হয়ে এখন পথের ফকির হয়ে গেছি।আমি এসব চুরির ঘটনার প্রতিকার চাই।
এদিকে অপরাধ কর্মকান্ডে নিয়োজিত থাকা ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে তৎপর বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামিম হোসাইন।
পাঠকের মতামত