আবদুল মালেক::
কক্সবাজার জেলায় এক সময়ে শিক্ষা-দীক্ষা ও উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা অবহেলিত একটি উপজেলা উখিয়া। উন্নয়নের সকল সূচকে জেলায় সবার পেছনেই ছিলো আমাদের অবস্থান। জীবনযাত্রার মান ছিলো অতি নিম্ন। খেটে খাওয়া মানুষের নুন আনতে পান্তা ফুরাই অবস্থা। যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত অবস্থা ছিল অত্যন্ত নাজুক।
কিন্তু রাজাপালং ইউনিয়ন তথা উখিয়া আজ ফুলে-ফলে সুশোভিত একটি বাগান। এই আমূল পরিবর্তন কিংবা বদলে যাওয়ার পেছনের কারিগর, উন্নয়নের মহাকাব্য যার হাতে রচিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত আস্থা ভাজন, উখিয়ার প্রান্তিক জনপদের খেটে খাওয়া মানুষের সুশীতল ছায়া, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ উখিয়া উপজেলা সভাপতি, পর পর তিনবার নির্বাচিত রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্বপ্নের স্মার্ট উখিয়া-টেকনাফ, গড়ার প্রত্যয়ে কক্সবাজার-৪ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী জনাব জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী।
রাজনীতি ও ব্যাক্তি জাহাঙ্গীরঃ
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মরহুম নুরুল ইসলাম চৌধুরীর কনিষ্ঠ সন্তান জনাব জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর জন্ম ১৯৭৭ সালের ১৯ মার্চ উখিয়া সদর ফলিয়াপাড়া গ্রামে। উখিয়ায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে কক্সবাজার সরকারি কলেজে অধ্যয়নকালীন তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। কলেজ ছাত্রলীগ ও জেলা ছাত্রলীগের সাথে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে মিছিল মিটিং এ অংশগ্রহণ করতেন।
পরিবর্তীতে তিনি পর্যায়ক্রমে উখিয়া উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি,, রাজাপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সস্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
গত ২৮ শে জুলাই, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ তারিখে
কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে তৃণমূল নেতা কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়ে অদ্যাবধি দায়িত্ব পালন করছেন।
এলাকার উন্নয়নঃ
————————-
বর্তমান সরকারের উন্নয়ন মহাযজ্ঞে দেশ যখন উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলছে তখন পিছিয়ে নেই আমরাও। কারণ আমাদের আছে একজন জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। উখিয়া তথা রাজাপালং ইউনিয়নকে তিনি সাজিয়েছেন নিজ হাতে। রাজাপালং এর প্রত্যন্ত অঞ্চলে এক সময় যেখানে হেঁটে যাতায়াত করা দুরূহ ব্যাপার ছিলো সেখানে আজ প্রতি মিনিটে মিনিটে গাড়ি। সংকটাপন্ন কোন রোগী জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে নিতে উখিয়া সদরে হেঁটে এসে গাড়ি ভাড়া করে তারপর রোগীকে হাসপাতালে নিতে হতো। এখন সেই পরিস্থিতি বদলে গেছে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে। এলাকার ৯০ শতাংশ কাঁচা ও আধাপাকা সড়ক আজ পাকা সড়কে পরিণত হয়েছে। উন্নয়নের ছোঁয়ায় গ্রামের প্রান্তিক জনগণ আজ বসবাস করছে শহরের আবহে। উন্নয়নের বরপুত্র জনাব জাহাঙ্গীর প্রতিনিয়ত চষে বেড়ান গ্রাম, পাড়া, মহল্লা, মাঠ, ঘাট, প্রান্তর। গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সুখে-দুঃখে সব সময় পাশে পাওয়া লোকটির নাম জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী।
হাতিমোরা, ডিগলিয়া, চাকবৈঠা, ডেইলপাড়া, দরগাহবিল, টাইপালং, লম্বাঘোনা, সিকদারবিিলৃ, জামতলি, ঘিলাতলী, মালভিটা, রাজাপালং, পুকুরিয়া, হরিণমারা, রেজুরকুল, ফলিয়া, পাতাবাড়ি, হাজিরপাড়া, মৌলভী পাড়া ও খয়রাতী পাড়া সহ অন্যান্য এলাকায় গত ১৫ বছরে যোগাযোগ ব্যবস্থার যে উন্নতি হয়েছে তা এর পূর্বে বিগত ৫০ বছরেও হয়নি।
শিক্ষা-দিক্ষায় অবদানঃ
একটি জাতি ততটুকু উন্নত, যতটুকু সে শিক্ষিত। শিক্ষাদীক্ষায় উখিয়া আজ অনেক এগিয়ে। উখিয়ার নারী শিক্ষা থেকে শুরু করে, প্রাথমিক স্তর, মাধ্যমিক স্তর, উচ্চ মাধ্যমিক, কারিগরি শিক্ষা সহ সকল সেক্টরেই জনাব জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী সহ তাঁর পরিবারের ভূমিকা অনন্য। তাঁর পিতা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম জনাব নুরুল ইসলাম চৌধরী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উখিয়ার নারী শিক্ষার অন্যতম বিদ্যাপীঠ বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ ও ফলিয়া পাড়া আলীমুদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে জনাব জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী প্রতিষ্ঠা করেন নুরুল ইসলাম চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলজার বেগম চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, নুরুল ইসলাম চৌধুরী বিএম টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, জাহাঙ্গীর কবির চৌধরী প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলজার বেগম প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বহু মসজিদ, মক্তব সহ আরো অনেক প্রতিঁষ্ঠান। এছাড়া উখিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায়ও এই পরিবার সহপ্রতিষ্ঠাতার ভূমিকা পালন করে।
গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে জনাব জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী নিজ পিতার নামে প্রতিষ্ঠা করেন নুরুল ইসলাম চৌধুরী স্মৃতি ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতি বছর শতাধিক ছাত্রছাত্রী কে বৃত্তি প্রদান করা হয়। তাছাড়া ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু উখিয়ার ছাত্রছাত্রীদের জন্য নিজস্ব অর্থায়নে খাবারের ব্যবস্থা করেন।
অসাম্প্রদায়িক চেতনার অনন্য উদাহরণ এই রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। ২০১২ সালে কক্সবাজারের রামু সহ বিভিন্ন উপজেলায় দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা ছিলো দেশের ইতিহাসে একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। সেদিন উখিয়ার বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা-ভাংচুর হলেও সস্পূর্ণ অক্ষত ছিলো জাহাঙ্গীর কবির চৌধরীর বাড়ির আশপাশের বৌদ্ধ মন্দিরগুলো। সেদিন এই বৌদ্ধ মন্দিরগুলো রক্ষায় তিনি মানব ঢাল হিসেবে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় অবতীর্ণ না হলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উখিয়া, পাতাবাড়ি, শৈলেরঢেবা, কুতুপালং সহ অত্র এলাকায় ভূলুণ্ঠিত হতো মানবতা, ধ্বংস হতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি।
জনতার প্রত্যাশাঃ
উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয়
জনগণের অভিমত জনসম্পৃক্ততা, মজবুত রাজনৈতিক ভীত, তরুণ নেতৃত্ব, পারিবারিক ঐতিহ্য, দলের ভেতর জনপ্রিয়তা, অব্যাহত উন্নয়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ভূমিকা ইত্যাদি বিবেচনায় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর বিকল্প নেই।
লেখক: শিক্ষক, সমাজকর্মী।
পাঠকের মতামত