বার্তা পরিবেশক::
উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীর বিরুদ্ধে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর ও চুরির অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যজিষ্ট্রেট আমলী আদালত-৪ এ মামলাটি দায়ের করেন হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ভুক্তভোগী সোলতান আহমদ। আদালত মামলাটি ৩২৩/৩৮২/৩০৭ ধারায় আমলে নিয়ে আসামীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১০ মে ধুরুমখালী এলাকার সোলতান আহমদকে হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারদের মাধ্যমে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী। এসময় ভুক্তভোগীর মোবাইল চুরি করে নিয়ে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ১৬ মে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা মামলায় আদালতের কাছে আত্মসমর্পণ করে ভবিষ্যতে বাদী ও সাক্ষীদের মারধর ও হুমকি প্রদান আর করবেনা বলে লিখিত অঙ্গিকার নামায় মুছলেকা দিয়ে জামিনে মুক্তি লাভ করে চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী।
এজাহার সুত্রে জানা যায়, বিচারের নামে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে শারিরীক নির্যাতন ও লুটপাটের অভিযোগে উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীর বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভোক্তভোগী সোলতান আহমদ। মামলা নং সি আর ২৭২/২০২৩।
মামলার বাদী সোলতান আহমদ একই ইউনিয়নের সাবেক রুমখা জনাব আলী পাড়ার মৃত আলী আহমদের পুত্র বলে জানা গেছে।
মামলার বাদী সোলতান আহমদ জানান, গত ০৯ মে হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের অধীনস্থ চৌকিদার শাহা আলম ও পুতিয়া এবং অপর একজন চৌকিদার মামলার বাদী সোলতান আহমদকে চেয়ারম্যানের বাড়ী যেতে হবে বলে জোর পূর্বক টমটম গাড়ীতে তুলে নিয়ে যায়। মামলার আসামী হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী একটি বৈদ্যুতিক তার কসটেপ দ্বারা মোড়ানো লাঠি হাতে আবুল কালাম ও হোছন আহাম্মদ এবং রশিদ আহাম্মদ গং এর জায়গা দখল করছি বলে হাতে থাকা লাঠি দিয়ে অধীনকে বেদম মারধর এবং অকথ্য ও বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে হাতের লাঠি ভেংগে গেলে চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী পাশে থাকা লোহার স্তুপ থেকে ৪ সুতা বেড়ের লোহার রড দিয়ে মারধর করে।
চেয়ারম্যানের মারধরের আঘাতে সমস্ত শরীর রক্তাক্ত ও ফুলা জখম করে থাকে। এমনকি লোহার রডের আঘাতে বাম হাতের অনামিকা আংগুল ও ডান হাতের সাহাদাত আংগুল ভেঙ্গে যায় এবং বাম পায়ের পাতা ও অনামিকা আংগুল ভেঙ্গে যায়। চেয়ারম্যানের মারধর সহ্য করতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে যাই। এই সময় আমার ছেলে মোস্তাক আহমদ (২২) ফোন বের করে আত্মীয় স্বজনকে ফোন করতে গেলে আসামী আমার ছেলেকে কিল ঘুষি মেরে ২০ হাজার টাকা মূল্যের এন্ড্রয়েড মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয়।
ঘটনাস্থলে আসা লোকজন অধীনের অবস্থা খারাপ দেখে একটি সি.এন.জি যোগে অধীনকে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়া যাওয়ার চেষ্টা করিলে চেয়ারম্যান মেরে ফেলার লক্ষ্যে হাসপাতালে নিতে বাধা সৃষ্টি করে। কিন্তু ঘটনাস্থলে আসা লোকজন চেয়ারম্যানের কথায় কর্ণপাত না করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত ডাক্তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার পর প্রায় ২০ মিনিট পরে বাদীর জ্ঞান ফিরে আসে।
মামলার বাদী সোলতান আহমদ জানান, মামলার আসামী হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন পূর্বে হতে আসামী আমাকে মারিবে, কাটিবে এমনকি প্রয়োজন বশতঃ সন্ত্রাসী দিয়ে খুন করিব মর্মে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিল। প্রকাশ্যে ষ্টেশনে হাটে বাজারে লোকজনের সামনে অধীনকে পেলে তাহার ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটাবে বলে হাঁকাবকাও করেন।
এদিকে মামলা দায়েরের অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী পরিস্থিতির শিকার বলে আদালতে অঙ্গিকারনামা দিয়েছেন। এইছাড়াও মামলার বাদী ও সাক্ষীদেরকে কোন ধরণেরে ভয়ভীতি, হুমকি ধমকি ও মারধর করবেন না বলে অঙ্গীকার নামায় আদালতকে জানিয়েছেন।
ইতিপূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার সোলতান আহমদের এক ভিডিও ভাইরাল হলে চেয়ারম্যানের এহেন কর্মকান্ড ও আইন নিজের হাতে তুলেনেওয়ায় পক্ষে বিপক্ষে ব্যাপক সমালোচনা হতে দেখা গেছে ।
পাঠকের মতামত