নিজস্ব প্রতিবেদক::
কক্সবাজার উপকূলের দিকে তীব্র গতিতে ধেয়ে আসছে ঘূণিঝড় ‘মোখা’। ১৭০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়টি। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শনিবার সন্ধ্যার দিকেই কক্সবাজার ও এর কাছাকাছি উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব পড়বে। দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে ১০নং মহাবিপদ সংকেত।
আসন্ন এই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে কক্সবাজারের প্রশাসন। পাশাপাশি ঝুঁকিতে থাকা মানুষ গুলোকে আশ্রয় চলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উখিয়ার জালিয়াপালং সমুদ্রের তীরবর্তী চরপাড়া ও ডেইলপাড়া এলাকায় বসবাস করা হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ স্থানের দিকে ছুটছে। যারা যাচ্ছে না তাদের বাধ্য করা হচ্ছে।
উখিয়ায় পাহাড় ধস এবং উপকূলের নিকটবর্তী সাইক্লোনের বিষয় মাথায় রেখে দুই ধরণের ঝূঁকির কথা বলা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: আল মামুন জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে শুকনো খাবারসহ ৪৬টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রয়োজনে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হবে। এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্টান এবং উপকূলের নিকটবর্তী হোটেল-মোটেল গুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান হোসাইন সজীব জানিয়েছেন, প্রশাসনের পক্ষে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে মোখা মোকাবেলায় তৎপরতা চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা শুরু হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ জানিয়েছেন, জেলায় ৫৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে ক্রমাগত মানুষ আসতে শুরু করেছে। এক ঘন্টা পরপর আপডেট নেয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নেয়ার তথ্য রয়েছে। এটা আরও বাড়বে।
তিনি জানান, ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক, পর্যাপ্ত গাড়ি রয়েছে। উপকূলীয় এলাকা জুড়ে মাইকিং করে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। দুপুরের পর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ যা আশ্রয় কেন্দ্রে আসবে না তাদের জোরপূর্বক আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হবে। এক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহার করা হবে।
বিভীষণ কান্তি দাশ জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রশাসনের আলাদা প্রস্তুতি রয়েছে। যেখানে ৩৭ টি আশ্রয় কেন্দ্রে সকলকে আনা হয়েছে। দ্বীপের জন্য আলাদাভাবে ৫ মেট্টিন চাল ও নগদ ১ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে। সোনাদিয়া দ্বীপ থেকে মানুষকে মহেশখালীতে নিয়ে আসা হয়েছে। জেলার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও টাকা মজুদ রয়েছে। উপজেলা ভিত্তিক যানবাহন রয়েছে।
একই সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোনের ৬৮টি আবাসিক হোটেল মোটেলকে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে।
মোখার কারণে সকাল থেকে কক্সবাজারের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন এবং গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সাগর ক্রমাগত উত্তাল হচ্ছে। কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
পাঠকের মতামত