ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২৩ ৭:৩৫ এএম , আপডেট: এপ্রিল ১৬, ২০২৩ ৭:৪১ এএম

 

পলাশ বড়ুয়া::
উখিয়া উপজেলার কোটবাজার স্টেশনে অপরাধ রোধ করতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও মনিটরিং নিয়ে গত দুদিন ধরে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। চলছে রত্নাপালং ও হলদিয়াপালং দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। পক্ষে-বিপক্ষে সামিল হয়েছে সাধারণ মানুষ। সরগরম হয়ে উঠেছে হাটবাজার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বিষয় একটাই “সিসি ক্যামেরা”।  তবে বিতর্কিত এসব সিসি ক্যামেরা স্থাপন নিয়ে শৃঙ্খলার রক্ষার চেয়ে বিঘ্ন ঘটতে পারে এমনটি আশংকা স্থানীয় সচেতন মহলের।

জানা গেছে গত ১৪ এপ্রিল (শুক্রবার) রত্নাপালং ইউনিয়নের আওতাধীন কোটবাজার স্টেশনে কয়েকটি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন পাশ্ববর্তী হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী। কেউ কেউ তার এই উদ্যোগের প্রশংসা করলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নেগেটিভ মন্তব্য করতে দেখা গেছে।

উখিয়া প্রেসক্লাব সভাপতি সাঈদ মু আনোয়ার তাঁর ফেবু আইডিতে লিখেছেন, কোটবাজারের সকল মানুষের চলাচল ও গতিবিধি মনিটরিং করছে “হক ক্রোকারিজ”! জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা। ফ্র্যাক্ট : সিসিটিভি।

উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন বলেছেন, কোটবাজারে সিসিটিভি স্থাপন যদি জনস্বার্থে স্বার্থে হয়, তাহলে নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই হওয়া দরকার। কারো ব্যক্তিস্বার্থে এ ধরনের কাজ উচিত নয়। যেহেতু কোটবাজার স্টেশনটি রত্নাপালং ইউনিয়নে অবস্থিত। তাই পদাধিকার বলে রত্নাপালং ইউপি চেয়ারম্যান এর সভাপতি। তাঁর সাথে আলোচনা করে এটা করা হলে মঙ্গল হবে।

সাইফুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দোকান মালিক সমিতির হাতে। এতে সমস্যার কিছু দেখছি না।

এম এ আরিফ ইসলাম নামে একজন বলেছেন, সমিতি প্রধান সড়কে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে নজরদারির এখতিয়ার রাখে না। বর্তমান বিশ্বে তথ্যের নিরাপত্তা অনেক বড় একটি উদ্বেগের। তাই, যথাযথ কর্তৃপক্ষ ছাড়া এর সুষ্ঠু ব্যবহার এবং সুফল পাওয়া অসম্ভব।

সোহেল চৌধুরী বলেছেন, যেটা কেউ চিন্তা করেনি সেটা ব্যক্তি ইমরুল জনস্বার্থে চিন্তা করেছেন বলে অনেকের মনে প্রাণে এলার্জিতে পরিণত হয়েছে।

মো: মুসা নামে একজন বলেছেন, মা’র চেয়ে মাসির দরদ বেশি, মরিচ্যা বাজারে কয়টা আছে ক্যামেরা? নিজের ইউনিয়নের কোন খবর নাই, ভিন্ন ইউনিয়নে নজরদারির এখতিয়ার কিভাবে পায়?

মনিটরিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে কোটবাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি খুরশেদ আলম বাবুল বলেছেন, সমিতির পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরা মনিটরিং করা হচ্ছে না।

কোটবাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেছেন, সভাপতির দাবীর প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান ইমরুল সিসি ক্যামেরা দিয়েছেন। বর্তমানে সমিতির অফিসে কাজ চলছে তাই প্রাথমিক পর্যায়ে আমার ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রেখে মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে ক্যামেরা মনিটরিং করা সমিতির পক্ষে সম্ভব নয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেছেন, দেশের নাগরিক হিসেবে যে কারো জনস্বার্থে কাজ করার অধিকার আছে। তাছাড়া কোটবাজার কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়।

তিনি এও বলেছেন, যারা অযোগ্য, ব্যর্থ, মূর্খ তারাই সমালোচনা করছে। একই সাথে কিছু চাঁদাবাজ, ভূমি দস্যু, যারা পরিবহণ থেকে চাঁদাবাজি করে তারা এর বিরোধিতা করছে।

তাছাড়া আমি কোটবাজার দোকান সমিতির সভাপতির দাবীর প্রেক্ষিতে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছি। সমিতি ক্যামেরা লাগিয়েছে এবং তারাই মনিটরিং করবে।

তিনি আরো বলেছেন, সম্প্রতি একটি বাস দূর্ঘটনা পরবর্তী কোটবাজারে লুটের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে পুলিশের উপর হামলা হয়েছে। তারও আগে ফোর মার্ডারের মতো নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। যার কোন ক্লু এখনো পায়নি। যদি কোটবাজারে ক্যামেরা থাকে এই ধরণের অপরাধ অনেকাংশে কমে যাবে।

রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা বলেছেন, হলদিয়ার চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত কোন্দল সৃষ্টি করার জন্য একদিন আগে দোকান মালিক সমিতিকে অনুদানের ঘোষণা দিয়ে পরদিন সরাসরি উপস্থিত থেকে ক্যামেরা স্থাপন করেছেন। সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে, তাই আমি বাধা দিই নাই কারণ সাধারণ মানুষ এসব বুঝবে না।

তাছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নের নিজস্ব আইন রয়েছে। কেউ রত্নাপালং ইউনিয়নে কিছু করতে চাইলে অবশ্য সংশ্লিস্ট চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়ে করা উচিত। দোকান মালিক সমিতি নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্যামেরা মনিটরিং করতে পারে, প্রধানসড়ক নয়। কারণ মানুষের গতিবিধি লক্ষ্য করে যে কারো ক্ষতি করতে পারে, আবার গুরুত্বপূর্ণ কোন ফুটেজ গায়েবও হতে পারে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে এটা দেখভালের দায়িত্ব শুধুমাত্র উপজেলা প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে রাখা উচিত।

কোটবাজারে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও মনিটরিং সম্পর্কে জানতে চাইলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী কোন মন্তব্য না করে ব্যস্ততা দেখিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান হোসাইন সজীব বলেছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। তবে কারো ব্যক্তিগত স্বার্থে এটা ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। এ ব্যাপারে এখনো কোন অভিযোগ আসেনি।

তিনি এও বলেছেন, যেহেতু কোটবাজার চৌরাস্তার মোড়ে পুলিশ বক্স রয়েছে। যেখানে সার্বক্ষণিক পুলিশ থাকেন। মনিটরিং সেখান থেকে করলে ভালো হয়।

পাঠকের মতামত

ঘটনাপ্রবাহঃ কোটবাজারে সিসি ক্যামেরা স্থাপন নিয়ে দুই চেয়ারম্যানের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ

  • ইনানীতে নুরুল হকের দখলকৃত ৩ একর রিজার্ভ জায়গা উদ্ধার করেছে বন বিভাগ
  • দেশ ও জনকল্যাণে স্বাধীন, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার বিকল্প নেই
  • নাফনদীতে কেওড়া ফল আনতে গিয়ে দুই সহোদর শিশুর মৃত্যু
  • উখিয়ায় ৩০ হাজার পিস ইয়াবাসহ দুইজন আটক
  • কক্সবাজারে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ আটক-৮
  • জোড়া চেসিসের শতাধিক ট্রাক চলছে রাঙামাটিতে ; রাজস্ব বঞ্চিত সরকার
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের উপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা মুসলিম গ্রেপ্তার
  • আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় ইউপি চেয়ারম্যানের হরিলুট
  • রামুতে আত্মগোপনে থাকা আনসার সদস্যকে পুলিশে দিলেন ইউপি সদস্য
  • ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা’র সাথে বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদ নেতৃবৃন্দের মতবিনিময়
  • রামু প্রেস ক্লাবের ৩৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আলোচনা সভায় ইউএনও রাশেদুল ইসলাম দেশ ও জনকল্যাণে স্বাধীন, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার বিকল্প নেই

               রামু প্রতিনিধি:: নানা আনন্দায়োজনে রামু প্রেস ক্লাবের ৩৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার ...

    বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের উপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা মুসলিম গ্রেপ্তার

              নিজস্ব প্রতিবেদক:: কক্সবাজারের উখিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের উপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় হলদিয়াপালং ...

    সচিবালয়ে হামলা... রামুতে আত্মগোপনে থাকা আনসার সদস্যকে পুলিশে দিলেন ইউপি সদস্য

              সোয়েব সাঈদ, রামু:: রাজধানীর সচিবালয়ে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্ত আনসার সদস্য রামুতে আটক ...