নিজস্ব প্রতিবেদক::
কক্সবাজারের উখিয়ার পাইন্যাশিয়ায় তাহের-মঞ্জুরের নেতৃত্বে নগদ সাড়ে ২২ লক্ষ টাকা ও অর্ধ কোটি টাকা মূল্যের অবৈধ সিগারেট লুট হয়েছে। আবার এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ দমণ ট্রাইব্যুনালে ফৌজদারী দরখাস্ত করেছে সিগারেট পাচারকারী চক্রের এক সদস্য। উখিয়া থানা পুলিশ বলছে এসব বিষয়ে তারা কিছুই জানেনা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৭ মার্চ দিবাগত রাত ৩টা ৮মি: থেকে ৩টা ১৯ মিনিটের মধ্যে জালিয়াপালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
এ ঘটনায় রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ১নং ওয়ার্ডের দারিয়ারদীঘি এলাকার হোছন আহমদের ছেলে মোহাম্মদ ফারুক বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ ১৪/১৫জনকে অজ্ঞাত আসামী করে আদালতে মামলা করেছে।
মামলা সুত্রে জানা গেছে বাদী মাছ বিক্রী করে ফেরার পথে সাড়ে ২২ লক্ষ টাকা লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় গাড়ীর ক্ষয়ক্ষতি বাবদ ৫ লক্ষ টাকা দেখানো হলেও অবৈধ সিগারেটের মূল্য উল্লেখ করা হয়নি।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ওই রাতে নগদ সাড়ে ২২ লক্ষ টাকা ও ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যের অবৈধ সিগারেটবাহী মিনি পিকআপ গাড়ী নাম্বার চট্টমেট্টো-১১-৯০৩৮ শামলাপুর থেকে মেরিন ড্রাইভ হয়ে সোনারপাড়া থেকে কোটবাজারের দিকে যাচ্ছিল।
এ খবরে উৎপেতে থাকে অভিযুক্ত রাজাপালং ১নং ওয়ার্ডের পিনজিরকুল এলাকার মৃত মীর জাফরের ছেলে আবু তাহের(৩৬), জালিয়াপালং ১নং ওয়ার্ডের পাইন্যাশিয়া এলাকার মোহাম্মদ হোছাইনের ছেলে আনোয়ার হোসাইন (৩২), একই ওয়ার্ডের জুম্মাপাড়া এলাকার মৃত মোহাম্মদ হোছাইনের ছেলে তোফাইল ও সৈয়দ হোসেনের ছেলে মঞ্জুর আলম, ভুলুর ছেলে মোহাম্মদ রাসেল, মোহাম্মদ কামালের ছেলে মোঃ রুবেল, মৃত মীর আহমদের ছেলে ছৈয়দ উল্লাহ, জাবেদ পিতা অজ্ঞাত সহ আরো ১৪/১৫ জনের সংঘবদ্ধ চক্র।
দ্রুতগামী পিকআপটি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে অভিযুক্ত আবু তাহেরের মালিকানাধীন ডাম্পার গাড়ী দিয়ে ব্যারিকেড দেয়। এ সময় চালক গাড়ির গতিরোধ করতে না পারায় ডাম্পারসহ বৈদ্যুতিক খুটির সাথে ধাক্কা লাগে।
এ ঘটনায় পিকআপ চালক গুরুতর আহত হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। তাকে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।
ওই সময় মাত্র ১১ মিনিটে আবু তাহের ও মঞ্জুরের নেতৃত্বে সিগারেটসহ গাড়ীতে লুকায়িত সাড়ে ২২ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
তাৎক্ষনিক সাবেক ইউপি সদস্যের সহায়তায় দ্রুত গাড়ীটি উদ্ধার করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে গাড়ী ও সিগারেটের মালিক।
ঘটনার বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে সাবেক ইউপি সদস্য মনিরুল আলম মনির বলেন, তিনি আসার পূর্বেই যা হওয়ার হয়েছে। তবে একজনের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহত একজনকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। এবং দুর্ঘটনায় কবলিত গাড়ীটি একটি ডাম্পার দিয়ে টেনে কোটবাজার গ্যারেজে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করি।
ইউপি সদস্য মনু সিকদার বলেন, ঘটনা সত্য। তবে কারা ঘটিয়েছে সে ব্যাপারে কিছুই জানিনা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত তাহের ও মঞ্জুরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা নগদ টাকা ও সিগারেট লুটের ঘটনায় জড়িত নয় বলে জানায়।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, এ ধরণের কোন খবর এখনো পায়নি। তাছাড়া এতো বড় ঘটনা সম্পর্কে কেউ ত অভিযোগও করেনি।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার দুই দিন আগেও একই স্থানে সিগারেটবাহী দ্রুতগামী পিকআপ বিজিবির টহলটীমের সদস্যকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় আহত বিজিবি সদস্যকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে প্রেরণ করে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
পাঠকের মতামত