নিজস্ব প্রতিবেদক::
উখিয়া উপজেলা যুবলীগের পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে অপরাধ চক্রের সদস্যরা। কাউন্সিলারদের মতামতের তোয়াক্কা না করে কেন্দ্রিয় নেতাকর্মীদের মন জয় করে সরকার দলের সহযোগী সংগঠন উপজেলা যুবলীগ হাইজ্যাক করতে কোটি টাকার মিশনে নেমেছে পদ প্রত্যাশীরা। তবে তৃণমূলের কাউন্সিলারদের দাবি প্রত্যক্ষ ভোটে নেতা নির্বাচন করতে হবে।
দীর্ঘ ৯ বছর পর বহুল প্রতিক্ষিত সম্মেলনকে ঘিরে ইতোমধ্যে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পছন্দের নেতা নির্বাচন করতে মুখিয়ে আছে ১৪৬জন কাউন্সিলার।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উখিয়া উপজেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল ১২ মার্চ সকাল ১০টায় উখিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশনে কেন্দ্রিয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হাসান নিখিল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে এমনটি জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর।
তিনি আরো জানিয়েছেন, গঠনতন্ত্রের আলোকে নেতা নির্বাচন করা হবে। মাদক, হত্যা, ধর্ষণে অপরাধে জড়িত কেউ পদ-পদবী পাওয়ার সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত জমা নেয়া হয়েছে। চলছে যাচাই-বাছাই ও চুলছেড়া বিশ্লেষণ।
উপজেলা যুবলীগ সূত্রে এবারের সম্মেলনে সম্ভাব্য সভাপতি পদে ৪জনের নাম এসেছে তাদের মধ্যে উখিয়া উপজেলা যুবলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন, গাজী মোহাম্মদ শাহজাহান, আনিসুল ইসলাম, হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী।
সম্ভাব্য সাধারণ সম্পাদক পদে ৮জনের নাম এসেছে তারা হলেন, সাবেক উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মকবুল হোসাইন মিথুন, বশির আহমদ আজাদ, মাসুদ আমিন শাকিল, সরওয়ার কামাল পাশা, মকসুদ চৌধুরী, কায়সারুল হক চৌধুরী রুবেল, মিজানুর রহমান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন যুবলীগের কাউন্সিলার সম্প্রতি প্রকাশিত তালিকায় সরকারের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার অসমর্তিত সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, শীর্ষ মাদককারবারির হিসেবে দুই স্থানে সভাপতি প্রার্থী ইমরুল কায়েস চৌধুরীর নাম রয়েছে। তাছাড়া সে নৌকা প্রতীকের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। তাই উপজেলা যুবলীগের নেতৃত্বে উড়ে এসে জুড়ে বসার কোন সুযোগ নেই বলে তাদের দাবী।
তারা এও জানিয়েছেন, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সরওয়ার কামাল পাশা’র নামে ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ সহ গরু ছিনতাইয়ের অভিযোগে জেল কেটেছে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাসুদ আমিন শাকিল। এসব হিসেব-নিকেশ করে ভোট দিবে কাউন্সিলাররা।
এদিকে কাউন্সিলারদের মধ্যে ফয়েজুল ইসলাম, হানিফ সিকদার, নুরুল আবছার চৌধুরীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধের মাদক সংশ্লিস্টতার অভিযোগ উঠেছে।
উখিয়া যুবলীগের বর্তমান সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ বলেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নেতা নির্বাচন করা হবে। এবার হবে স্মার্ট যুবলীগ। যে যুবলীগ বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করবে।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। এই ধারা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালের ভিশন বাস্তবায়নের জন্য পরিচ্ছন্ন যুবলীগ নেতৃত্ব বাছাইয়ে তাঁরা কাজ করছে কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ ও সাংগঠনিক টীমের সদস্যরা। তাঁরা ইতোমধ্যে কক্সবাজারে সাংবাদিক সম্মেলন করে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।
কলঙ্ক মুক্ত যুবলীগের প্রত্যাশা নিয়ে কাউন্সিলারদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরো বলেন, যাতে মাদক সংশ্লিষ্টার অভিযুক্ত, টেন্ডারবাজ, দখলবাজ কেউ পদ-পদবীতে না আসে। তাছাড়া প্রতিটি দলের আলাদা গঠনতন্ত্র রয়েছে। গঠনতন্ত্রের আলোকে কাউন্সিলারদের প্রত্যক্ষ ভোটে পরিচ্ছন্ন নেতা নির্বাচন করা উচিত বলে মনে করি।
কাউন্সিলারদের মধ্যে রাজাপালং ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বেলাল উদ্দিন বলেছেন, আমরা ভোটের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন নেতা নির্বাচন করতে চাই। একই কথা নুরুল আলম মাসুদ, দিদারুল আলমসহ আরো অনেকের।
অপরদিকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ভোট চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণাসহ কাউন্সিলারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে পদ-প্রত্যাশীরা।
পাঠকের মতামত