গত ২৩ জানুয়ারী ২০২৩ তারিখ দৈনিক আলোকিত উখিয়া পত্রিকায় প্রকাশিত “মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা” “স্যানিটারি ব্যবসায়ী আবছারের অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদ” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে আমার ব্যাক্তি ও সামাজিক মর্যাদাকে আঘাত করার হীন প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে দাবী করা হয়েছে “যৌক্তিক আয়ের উৎস অজ্ঞাত। দৃশ্যমান কোনো কর্ম বা বৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যও ছিলো না। ছিলো না পৈত্রিক কোন সহায় সম্পদও। ১২ বছর পূর্বে একটি স্যানিটারির দোকান করতেন উখিয়া স্টেশনে ওই দোকান থেকেই মাত্র ১০ বছরে অর্জন করেছেন অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদ”।
এই দাবী অসত্য ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। আমি ১২ বছর আগে স্যানিটারির দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করিনি। ২০০৩ সাল থেকে আমি উখিয়া স্টেশনে রড়-সিমেন্টের ও ঠিকাদারি ব্যবসা করে আসছি। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা আগমনের পর চাহিদার প্রেক্ষিতে রড-সিমেন্টের সাথে স্যানিটারি সামগ্রী বিক্রির উদ্যোগ নেই। আমার পিতা দীর্ঘ সময় উখিয়া ষ্টেশনে ব্যবসা করেছেন। আমার পরিবার ভূমিহীন ছিলেন না। কৃষি ব্যাংকের বিপরীতে এখনো আমার পিতার দোকানগুলো রয়েছে। আমার বড় তিন ভাই দীর্ঘ সময় সৌদি আরবে ছিলেন। তাঁরা বিপুল রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। ব্যবসার শুরুতে আমি পরিবারের সাহায্য পেয়েছি। দুই যুগের পরিশ্রমে গড়ে তুলেছি একের পর এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আমার আয়ের উৎস বৈধ ও দৃশ্যমান।
প্রতিবেদনে দাবী করা হয়েছে, আমি “মহুরীপাড়া ব্রীজ সংলগ্ন খাল ভরাট করে মার্কেট ও বহুতল ভবন নির্মান” করেছি। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, আমি দলিল ও সীট অনুযায়ী সার্টিফাইড সার্ভেয়রের মাধ্যমে জমি মেপে প্রাপ্য জমির উপর টিনশেডের দোকান ও মালামাল রাখার জন্য গুদাম ঘর তৈরী করেছি। এই জমিতে মার্কেট বা বহুতল ভবন নেই। খাল ভরাটের দাবী সম্পুর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত।
প্রতিবেদনে “টাইপালং সড়কে ৬ ও ৪ তলা বিশিষ্ঠ ২ টি ভবনের” কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে এই সড়কে আমার মালিকানার একটি ৩ তলা ভবন ও সাথে গাড়ি রাখার গ্যারেজ রয়েছে যা একটি ইন্টারন্যাশনাল এনজিওকে ভাড়া দিয়েছি।
প্রতিবেদনে আরো দাবী করা হয়েছে ঘিলাতলী পাড়া সংলগ্ন সিকদার বিলে একটি বহুতল ভবন ও সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের পেছনে আরো একটি ভবন রয়েছে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, এই এলাকাগুলোতে আমার কোন ভবন নেই।
প্রতিবেদনটিতে উখিয়া ষ্টেশনে নামে বেনামে অসংখ্য জমি ক্রয় করে রাখার যে দাবী করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার প্রতিটি জমি আমার নিজের নামে। আমি বেনামে কোন জায়গা ক্রয় করিনি।
প্রতিবেদনে দাবী করা হয়েছে আমি এক সময় “জানবাজ বিএনপি নেতা” ছিলাম। সাথে যোগ করা হয়েছে “এক সময় রিক্তহস্ত আবছার এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনেছে শুধু মাত্র রাজনৈতিক ভোল পালটানো ভেল্কিবাজির মধ্য দিয়ে”। প্রথমত, নেতা হওয়াতো দুরের কথা আমি কখনো বিএনপির সদস্যও ছিলাম না। অতএব, প্রতিবেদনে “রাজনৈতিক ভোল পাল্টানো”র দাবী ভিত্তিহীন। দ্বিতীয়ত, আমি দীর্ঘ ২ যুগ ধরে উখিয়া স্টেশনে জনসম্মুক্ষে দিন রাত পরিশ্রম করে রড সিমেন্ট সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করে আসছি। প্রতিবেদকের “রিক্তহস্ত আবছার এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ” হওয়ার দাবী অযৌক্তিক ও হাস্যকর।
প্রতিবেদনটিতে আরো দাবী করা হয়েছে “ সম্প্রতি একাধিক জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকায় তার নাম ৪৮ নাম্বারে উল্লেখ করা হয়েছে”। জাতীয় কোন পত্রিকায় আমার নাম উল্লেখ করে কোন তালিকা প্রকাশ করেছে এমনটি আমার চোখে পড়েনি। প্রমানহীন এই দাবীর মাধ্যমে আমার সামাজিক মর্যাদাকে আঘাত করার হীন চেষ্টা চালানো হয়েছে। আমি উম্মুক্ত চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে চাই, আমার বিরুদ্ধে কেউ যদি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার প্রমান হাজির করতে পারেন, আমি যে কোন শাস্তি মাথা পেতে নেবো।
দৈনিক আলোকিত উখিয়া দাবী করেছে তাদের কথিত প্রতিবেদক “রহস্যজনক ও মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে” আমার সাথে একাধিকবার মোঠোফোন ও অনলাইন ম্যাসেঞ্জারে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে। প্রত্রিকাটির প্রতিবেদক বা কোন সাংবাদিক এই ব্যাপারে কথা বলার জন্য আমার সাথে ফোনে বা ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করেনি। তাদের এই দাবী সম্পুর্ণ মিথ্যা।
হলুদ সাংবাদিকতার সীমা পরিসীমা আছে কিনা আমার জানা নেই। দৈনিক আলোকিত উখিয়া আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করে “তথ্য সন্ত্রাসের” নতুন নজির সৃষ্টি করেছে। দৈনিক আলোকিত উখিয়া মিথ্যা প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আমার ব্যাক্তি ও সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করার পাশাপাশি সংবাদিকতা ও স্থানীয় সংবাদ শিল্পকে কলংকিত করেছে।
অতএব, আমি দৈনিক আলোকিত উখিয়ার সম্পাদক ও প্রকাশককে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে ভুল স্বীকারের জন্য অনুরোধ করছি। অন্যথায়, আমি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবো।
প্রতিবাদকারী-
নুরুল আবছার
স্বত্ত্বাধিকারী
মেসার্স আবছার ট্রেডার্স, উখিয়া।
পাঠকের মতামত