ডান্ডা মারা শুরু করার আগেই বিএনপির নেতারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস। দলটির নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আরে মিয়া সাহেবেরা বহু দেখেছি। ঠাকুরগাঁওয়ের চখা রাজাকারের পুত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হুংকার দিচ্ছে। ডান্ডা মারা তো শুরুই হয় নাই। এখনই হাসপাতালে ভর্তি হন। আর বাকি দিন তো পড়েই রয়েছে।’
রবিবার (২২’জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের এমপি মৃণাল কান্তি দাস এসব কথা বলেন।
মুন্সীগঞ্জে তার নির্বাচনী এলাকা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন থেকে অনেকটাই বঞ্চিত দাবি করে মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ‘পদ্মা, মেঘনা, গোমতী, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে এ এলাকায় রয়েছে অনেক চর, হাওড়-বাওড়। সেখানকার মানুষ অনেক কষ্টে আছেন বন্যা-নদীভাঙনে। রয়েছে ভূমিদস্যুতা, বালুদস্যুতা। বালুদস্যুরা মানুষের ভূমি কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী চান এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদি না থাকে। আর বালুদস্যুরা দিনে-দুপুরে প্রশাসনের নাকের ডগায় ভেঁপু দিয়ে চার-পাঁচ ফিট মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা চাষ করতে পারেন না। জেলা প্রশাসককে জানাই। পুলিশকে জানাই। কোথাও সহযোগিতা পাই না। এলাকার মানুষের জানমালের, জীবন রক্ষা করতে অসহায় এমপি।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যার হাতে নৌকা প্রতীক তুলে দেবেন তাকে বিজয়ী করতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের এককাতার হয়ে লড়ার অনুরোধ জানান তিনি।
বিএনপি’র সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যখনই নির্বাচন আসে, ২০০৮ সালে পারেনি। মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছিলো। ২০১৪ সালে চেষ্টা করা হয়েছিলো। খালেদা জিয়া ১০০ দিন রাস্তায় বসে ভিক্ষা করেছিলো আমাদের হটাতে, কিন্তু পারেনি। শেষে আপনাআপনি লেজ গুটিয়ে নেংটি কুকুরের মতো ঘরে ফিরে গেছে। এবারও স্পর্ধা দেখাচ্ছে। মাঝে মাঝে হুংকার দিচ্ছে। ধমক দিচ্ছে, দেখিয়ে দেবে। বিচার করবে। ফাঁসি দেবে।’
নিজের বক্তব্যের জন্য নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় স্পিকারের কাছে বাড়তি সময় চেয়ে সরকারি দলের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার একটু সময় দেন। পত্রপত্রিকায় যা দেখি, আপনাকে কতোদিন আর এই আসনে পাই ভবিতব্যই জানেন।’
সরকারি দলের কবিরুল হক বলেন, ‘আমার এলাকায় অনেক কিছু হয়েছে। নতুন কিছু চাই না। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার এলাকার মানুষের একটি স্বপ্ন ছিল। আমার একটি নদী আছে, নবগঙ্গা নদী। সে নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য এলাকার মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলাম। সে স্বপ্নের কথা আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম। সড়ক জনপথ সেতুমন্ত্রীর কাছে বলেছিলাম। আমার সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য উনারা একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছিলেন। প্রকল্পটির ২০১৭ সালে কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল মাত্র দুই বছর। দুর্ভাগ্য, এদেশের আমলাদের কারণে, এ দেশের দুর্নীতিবাজ কিছু আমলাদের কারণে সেই প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়েছে। সরকারের প্রায় একশত কোটি টাকা পানিতে বিলীন হচ্ছে। এ কথা কি কখনও শুনেছেন মাননীয় স্পিকার, একটি ব্রিজের পিলার একটি ট্রলারের আঘাতে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়? এই দুঃখের কথা, এই কষ্টের কথা আমি কার কাছে বলবো!’
এসময় সরকারি দলের সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন বিধবা ভাতা বাড়ানো, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা এবং জেলা সদর হাসপাতালগুলোকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার দাবি জানান।
পাঠকের মতামত