কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার ২৮ সন্ত্রাসীর ছবি সহকারে পোস্টার লাগানোর পর থেকে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বেড়ে গেছে কান কথা। মূলত: এসব পোস্টারে বার্মিজ ভাষায় তাদেরকে চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসেবে ধরিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
কে বা কারা এসব পোস্টার লাগিয়েছে সে বিষয়ে কোন তথ্য জানাতে পারেনি ক্যাম্প প্রশাসন। তবে পোষ্টারে যাদের ছবি ছাপানো হয়েছে তারা চিহ্নিত অপরাধী। পাশাপাশি ক্যাম্প কেন্দ্রিক খুন, অপহরণ, ছিনতাই, অস্ত্র ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে তারা জড়িত রয়েছে এমনটি জানিয়েছেন ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সহকারি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফারুক আহমেদ।
তিনি এও বলেছেন, এসব সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে অাইন শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। এছাড়াও পোষ্টার গুলো তাদের ধরতে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
সাধারণ রোহিঙ্গারা বলছে গভীর রাতে কারা পোষ্টার লাগিয়েছে সে ব্যাপারে জানিনা। তবে ওই সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট।
শনিবার সকাল থেকে উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালীর বিভিন্ন ক্যাম্পে এ ধরনের পোস্টার দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সাধারণ রোহিঙ্গারা।
পোস্টারটি দেখা যাচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন ৮-আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাম্প ঘুরে দেখা গেছে, পোস্টারে থাকা ২৮ জনের মধ্যে ২৫ জনের নাম নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরা হলেন, আরকান রোহিঙ্গা স্যালভ্যাশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী, হেদায়েত উল্লাহ ওরফে খালেদ, মৌলভী মোস্তাক, মৌলভী লাল মোহাম্মদ ওরফে বোরহান, নুর কামাল ওরফে সমি উদ্দিন, ইব্রাহীম, মৌলভী জাকারিয়া, কাউসার ওরফে সাবের, খায়রুল আমিন ওরফে ইব্রাহীম, আলী জোহর, হাফেজ ইউনূছ, সানাউল্লাহ, জুলাইয়ার, শফিক, নুর মাহমুদ, হাফেজ নুর মোহাম্মদ, আব্দুর রহমান, হাসান, জাহিদ হোসেন ওরফে লালু, মাস্টার আব্দুর রহিম, জান্নাত উল্লাহ, মোহাম্মদ সলিম, মাহামুদুর রহমান, মোহাম্মদ জুবাইয়ের, মোহাম্মদ
আলম ওরফে মুসা।
নাম প্রকাশে একাধিক রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, পোস্টারের ২৮ জনই চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
পোস্টার সাটাই করার বিষয়টি পুলিশের কাছে মুখ্য নয়, পোস্টারে ছবিসহ নাম থাকা প্রত্যেকেই যেহেতু অপরাধী এবং মামলা রয়েছে; তাই তাদের সন্ধান পাওয়া মাত্রই গ্রেপ্তার করা হবে। জানিয়েছেন ৮-এপিবিএন।
উখিয়ার জামতলী ক্যাম্পের মো: হাবিব জানিয়েছেন, পোস্টারে বার্মিজ ভাষায় লেখা হয়েছে ‘তারা সন্ত্রাসী। আসলেই তারা সন্ত্রাসী। তাদের কারণে সাধারণ রোহিঙ্গারা কোন ভাবে নিরাপদ নয়।
পোষ্টারে উল্লেখ করা হয়েছে যদি কোনো ক্যাম্পে তাদেরকে দেখতে পায় তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবহিত করুন।
মোহাম্মদ খলিল আরেক জন বলেছেন, তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে ক্যাম্পে শান্তি ফিরবে। আমরাও চেষ্টা করছি তাদের ধরিয়ে দিতে। ক্যাম্পের অর্ধেক অপরাধ এদের নিয়ন্ত্রণে চলে। বিভিন্ন সময় অস্ত্র ও সন্ত্রাসী মহড়াতেও তাদের দেখেছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পরবর্তী মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয় ১০ লাখের অধিক রোহিঙ্গা।
পাঠকের মতামত